দীর্ঘ ৪২১ দিন পর শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের তরফে প্রাক্তন মন্ত্রীর শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। বিষ্ণুপুর পৌরসভার টেন্ডার দুর্নীতি ও বিপুল অঙ্কের সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। তারপর থেকে তিনি জেলেই ছিলেন।
১৯৯০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত একটানা ৩০ বছর বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান পদে ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ। প্রথমে কংগ্রেসের পুরপ্রধান থাকলেও ২০০৯ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১১ সালে তৃণমূলের টিকিটে বিষ্ণুপুর বিধানসভা থেকে জয়ী হয়ে রাজ্যের আবাসন মন্ত্রী হন শ্যামাপ্রসাদ। পরবর্তীতে তিনি শিশুকল্যাণ দফতর ও বস্ত্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পান। ২০১৬ সালে একই বিধানসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি আর জিততে পারেননি। কিন্তু বিষ্ণুপুর পুরসভার পুরপ্রধান পদে তিনি থেকে গিয়েছিলেন ২০২০ সাল পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro: কালীপুজো-দীপাবলিতে মধ্যরাত পর্যন্ত পরিষেবা, ঘোষণা মেট্রোরেলের
২০২০ সালে শ্যামাপ্রসাদ বিজেপিতে যোগ দেন। ২০২১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর পুরসভার মোট ৫৫টি সরকারি প্রকল্পে টেন্ডার দুর্নীতি ও সরকারি সম্পত্তি নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। সে সম্পর্কে কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে পেতেই ১০ ফেব্রুয়ারি প্রাক্তন মন্ত্রীকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৪২০ ধারায় প্রতারণা, ৪০৬ ধারায় বিশ্বাসভঙ্গ এবং ৪০৯ ধারায় পদে থেকে সরকারি অর্থ তছরুপের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সে সময় থেকেই শ্যামাপ্রসাদ জেলে ছিলেন। ১৭ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট শ্যামাপ্রসাদের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনের শর্ত হিসাবে শ্যামাপ্রসাদ পুলিশের অনুমতি ছাড়া বাঁকুড়া জেলা ছেড়ে অন্যত্র যেতে পারবেন না। নিজের পাসপোর্ট থাকলে তা আদালতের কাছে জমা রাখতে হবে। পাসপোর্ট না থাকলে এফিডেভিট দিয়ে তা আদালতকে জানাতে হবে। পাশাপাশি দুজনকে জামিনদার হিসাবে রাখতে হবে প্রাক্তন মন্ত্রীকে। জামিনদারদের মধ্যে একজনকে স্থানীয় হতে হবে। কলকাতা হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করার পর নথিপত্র সংক্রান্ত কাজে আজ পর্যন্ত বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগারেই ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। আজ সন্ধেয় বাঁকুড়া সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় প্রাক্তন মন্ত্রীকে।