লখনউ: বৃহস্পতিবার লখনউ জেল থেকে মুক্তি পেলেন কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিকী কাপ্পান। জেলা ও দায়রা বিচারক সঞ্জয় শঙ্কর পান্ডে (District and Sessions Judge Sanjay Shanker Pandey) কাপ্পানের মুক্তির আদেশে লখনউ জেল সুপারকে (Lucknow Prison Superintendent) নির্দেশ দিয়েছিলেন, অন্য কোনও মামলায় আর দরকার না থাকলে, তিনি যেন সিদ্দিকীকে মুক্তি দেন। দুই বছরের বেশি সময় ধরে সিদ্দিকী কাপ্পান (Siddique Kappan ) জেলবন্দি ছিলেন। সন্ত্রাস ও অর্থ তছরুপের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট দুই মামলাতেই গত বছর জামিন (Bail) মিললেও, মুক্তির আদেশে (Release Order) স্বাক্ষর না হওয়ায় জেলেই ছিলেন কাপ্পান। গত বুধবার লখনউয়ের একটি বিশেষ আদালত (Special Court of Lucknow) কাপ্পানের জামিন আদেশে স্বাক্ষর করেছে। তারপরই মুক্তি পেলেন তিনি। সূত্রের খবর, গতকাল সন্ধ্যাতেই জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল সিদ্দিকীর। কিন্তু অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ (Prevention of Money Laundering)-এর বিশেষ আদালতের বিচারক বার কাউন্সিলের নির্বাচন (Election of Bar Council) নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাঁকে মুক্তি দেওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: Adani Groups: এফপিও তুলে নিল আদানি গোষ্ঠী, বড় ধাক্কা দেশের অর্থনীতিতে
২০২০ সালের অক্টোবর মাসে সিদ্দিকী কাপ্পানকে গ্রেফতার (Arrest) করেছিল পুলিশ (Police)। সেই সময় তিনি উত্তরপ্রদেশের হাথরসে (Hathras, UP) ২০ বছর বয়সি এক দলিত (Scheduled Caste Community) মহিলার গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় রিপোর্টিং (Reporting) করতে যাচ্ছিলেন। দলিত যুবতীর হত্যার এই ঘটনায় সারা দেশ জুড়ে ক্ষোভ (Outrage) ছড়িয়ে পড়েছিল। পুলিশের অভিযোগ ছিল, কাপ্পান সেখানে অশান্তি (Unrest) সৃষ্টি করতে যাচ্ছিল। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পাশাপাশি, কাপ্পানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের (Sedition) অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন [Unlawful Activities (Prevention) Act]-এর অধীনে তাঁকে অভিযুক্তও ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়াও, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate) সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপ মামলা দায়ের করেছিল (Money Laundering Case Filed)। অভিযোগ ছিল, নিষিদ্ধ কট্টরপন্থি সংগঠন পিপলস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (Banned Outfit – People’s Front of India)-র থেকে অর্থ নিয়েছিলেন তিনি।
গত বছর সেপ্টেম্বরে সন্ত্রাস মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার মামলায় জামিন পেয়েছিলেন কাপ্পান। এরপর, অর্থ তছরুপ মামলায় জামিন মিলেছে ডিসেম্বরে। কিন্তু একাধিক আমলাতান্ত্রিক ত্রুটির (Multiple Bureaucratic Lapses) কারণে তাঁর মুক্তি এতদিন আটকে ছিল।
পুলিশের দাবি ছিল, সিদ্দিক কাপ্পান এবং তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সকলেই নিষিদ্ধ সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (PFI) এবং তার ছাত্র শাখা (Student Wing) ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (Campus Front of India)-র সদস্য। যদিও পুলিশের এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন কাপ্পান। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অর্থ যোগান দেওয়ার কাজে জড়িত থাকার যে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে, তাও অস্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, কোনও রকম অশান্তি ছড়াতে নয়, সেদিন তিনি সাংবাদিকতার কাজে হাতরাসে যাচ্ছিলেন।