
মার্কিন মুলুকের সময় মাফিক বুধবার ভোর ছটায় সংস্থার থেকে পাঠানো মেলটিকে নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন গোটা বিশ্বের নানা জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ফেসবুক কর্মীরা। আর ঘটলও তাই, বুধবার সংস্থার তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মোট কর্মী সংখ্যার অন্তত তেরো শতাংশ সংকোচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,যা সংখ্য়ার নিরিখে অন্তত এগারো হাজার। সংস্থার প্রধান হিসাবে মার্ক জুকেরবার্গ একটি ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, তিনি কাজ হারাতে চলা সংস্থার কর্মীদের জন্য দুঃখিত। আর ওই যাবতীয় পদক্ষেপের দায় নিজের বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
বুধবার জুকেরবার্গ তাঁর পোস্টে জানিয়ে দেন, কর্মী সংকোচন সংক্রান্ত যা কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তার সব কিছুর দায় নিচ্ছি আমি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি জানি সকলের জন্যই এটা কঠিন একটা বিষয়। তাই সংস্থার সিদ্ধান্ত যাদেরকে সরাসরি প্রভাবিত করছে তাঁদের জন্য আমি দুঃখিত।” সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে পুরনো কর্মীদের ছাঁটাই করার পাশাপাশি নতুন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
মেটাভার্স প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই বিপুল টাকা বিনিয়োগ করা হলেও সে তুলনায় লভ্যাংশ প্রায় কিছুই আসেনি সংস্থার কাছে। উল্লেখ্য, মেটাভার্স হল এমন একটি কাল্পনিক প্রকল্প, যেখানে যে কেউ কোথাও না বেরিয়ে ইচ্ছে মতন কল্পনা করে সেগুলির উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে। কিন্তু সে প্রকল্প কোনওভাবেই সফল না হওয়ায় ২০০৪ সালের পর থেকে এই প্রথম বড় মাপের লোকসানের মধ্যে পড়েছে জুকেরবার্গের সংস্থা। বানিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে ব্যাপক কাটছাঁট সংস্থার সমস্যা আরও বাড়িয়েছে।
সংস্থার কর্মীদের বেতন হ্রাস করে এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধা কমিয়ে আর্থিক লোকসানের মোকাবিলা করতে চেয়েছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা না হওয়ায় টুইটারের মতই কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল মেটা। জুকেরবার্গ তাঁর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সংস্থার এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা সমস্ত রকম ব্যয়সংকোচের ব্যবস্থা করছেন। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সব থেকে দক্ষ কর্মীদের বিভিন্ন লাভজনক শাখায় পাঠিয়ে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয় থেকে বাঁচার রাস্তা খোঁজা হচ্ছে।