নয়াদিল্লি: ‘কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভারত বিরোধী গ্যাংয়ের অংশ, এইসব লোকজন ভারতীয় বিচারব্যবস্থাকে বিরোধী দলের ভূমিকায় নামাতে চাইছেন।’ সম্প্রতি, দিল্লিতে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির দিকে আঙুল তুলে এই মন্তব্য করেছিলেন। তা নিয়ে বুধবার সারাদেশের ৩০০ জনেরও বেশি আইনজীবী (Lawyers) একটি খোলা চিঠিতে কিরেনের ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, বিচারকদের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক আক্রমণকে অবজ্ঞা করি। যারা আইনের শাসন বজায় রাখার জন্য তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে এরকম মন্তব্য আসলে প্রতিশোধমূলক হুমকি, এটা নিচু মানসিকতার পরিচয় দেয়। চিঠিতে সই করেছেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট অভিষেক মনু সিংভি, কপিল সিবাল, অরবিন্দ দাতার, ইকবাল চাগলা, জনক দ্বারকাদাস, শ্রী হরি আনা, রাজু রামচন্দ্রন, দুষ্যন্ত দাভে, ইন্দিরা জয়সিং, রাজশেখর রাও এবং সঞ্জয় সিংভি সহ মোট ৩২৩ জন আইনজীবী।
এদিন সেমিনারে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, ‘আমাদের বুঝতে হবে যে আমরা গণতন্ত্রে আছি। কিছু দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু পার্থক্য থাকতে বাধ্য কিন্তু আপনার বিরোধপূর্ণ অবস্থান থাকতে পারে না। এর মানে দ্বন্দ্ব বা সংঘাত নয়। আমরা বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র।’ বিচার ব্যবস্থা ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে কিরেন রিজিজু বলেন, ‘একটি অন্যটিকে ছাড়া থাকতে পারে না। যারা দেশের বিরুদ্ধে কাজ করেছে তাদের মূল্য চোকাতে হবে।’ এদিন তিনি বেশ কয়েকটি মিডিয়া রিপোর্টে দেশের বিচারব্যবস্থা ও সরকারের মধ্যে মতভেদের কথা তুলে ধরা প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন কিরেন রিজিজু। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী বলেন,,’আমাদের বুঝতে হবে যে আমরা গণতন্ত্রে আছি। কিছু দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু পার্থক্য থাকতে বাধ্য কিন্তু আপনার বিরোধপূর্ণ অবস্থান থাকতে পারে না। এর মানে দ্বন্দ্ব বা সংঘাত নয়। আমরা বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র।’ বিচার ব্যবস্থা ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে কিরেন রিজিজু বলেন, ‘একটি অন্যটিকে ছাড়া থাকতে পারে না। আদালতের উপযুক্ত অনুকূল পরিবেশ থাকতে হবে।’
মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চাওয়া চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, যে আইনমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের ‘হুমকি’ দিয়েছেন তা তিনি তাঁর ‘সাংবিধানিক যোগ্যতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন। আইনজীবীরা রিজিজুকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন যে একজন এমপি হিসাবে তিনি সংবিধানের প্রতি সত্যিকারের আনুগত্য বজায় রাখার এবং আইন ও বিচার মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। বিচার ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ এবং বিচারকদের রক্ষা করা তাঁর কর্তব্য।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের বিরুদ্ধে করা এই অপ্রীতিকর মন্তব্য দেশের বিচারক এবং বিচার বিষয়ক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনসাধারণকে উসকানিমূলক মনোভাবের জন্ম দেয়। যা দেশের বিচার ব্যবস্থার জন্য খুবই নিন্দনীয়।