খড়দা: অভিযোগকারীকে হমকি দেওয়ার অভিযোগ থাকলে কিংবা তদন্তকারী অফিসারের (IO) গাফিলতি থাকলে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পরবর্তী শুনানির দিন প্রয়োজনে আদালত এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের উদ্দেশ্যে উপযুক্ত নির্দেশিকা জারি করবে। এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের ( Highcourt) বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।
টালিগঞ্জের বাসিন্দা জয়ন্ত সেন খড়দা অঞ্চলে ব্যবসা করেন। তাঁর অভিযোগ, স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী তার কাছ থেকে টাকার দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। গত ২২ মার্চ কমল ঘোষের (ভোলা) বিরুদ্ধে তিনি খড়দা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, ডায়েরি করার পরও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। উল্টে, ভোলা তাকে বারবার মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি।
আরও পড়ুন: Jhalda Congress: ঝালদা পুরসভা তৃণমূলের হাতছাড়া হল, কংগ্রেসের হাতে এল বোর্ড
পুলিশি (police) নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন জয়ন্তবাবু। জয়ন্তবাবুকে দুটি কনস্টেবল দিয়ে পুলিশি নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি, সোমবার কেস ডায়েরি হাজির করার নির্দেশ দেন বিচারপতি মান্থা।
এদিন শুনানির শুরুতেই জয়ন্তবাবুর আইনজীবী অনীত দে জানান, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তার মক্কেলের ব্যবসার জায়গায় পুলিশ প্রহরা দেওয়া হচ্ছে না। বরং, পুলিশ বলছে, থানা থেকে তাকেই পুলিশি প্রহারা নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি, এখনও ভোলা তাকে হুমকি দিয়ে চলেছে। ভোলা একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। তাই পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
বিচারপতি সরকারি আইনজীবীর (PP) কাছে কেস ডায়েরি চাইলে আইনজীবী জানান, কেস ডায়েরি পাঠানো হয়নি। এরপরেই বিচারপতি ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি আইনজীবির উদ্দেশ্যে বলেন, ” কেন ভোলাকে বাঁচানো হচ্ছে তা আদালত বুঝতে পারছে। তদন্তকারী অফিসার কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না? অভিযোগকারীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু, সেই ব্যক্তিকে পেশ করে তদন্তকারী অফিসার কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ? বিষয়টি বিশেষভাবে নজর দেওয়ার প্রয়োজন। এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই আদালতে সামনে আসছে। আদালত চিন্তা করছে, পরবর্তী শুনানির দিন আদালত এমন নির্দেশ জারি করতে পারে, যাতে কোনও অভিযোগকারী তদন্তকারী অফিসারের থেকে বঞ্চিত হলে বা তার গাফিলতি দেখা দিলে ঊর্ধ্বতন অফিসারের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবে। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন অফিসার ওই তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই নির্দেশ স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি আকারে জারি করতে হবে।
মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানি। শুনানির দিন কেস ডায়েরি (Case Diary) হাজির করতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি, জয়ন্তবাবুর ব্যবসার জায়গায় আদালতের নির্দেশমতো পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে আদালত (Court) উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।