নয়াদিল্লি: ধর্ষণের একটি মামলায় ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, ‘টু-ফিঙ্গার টেস্ট’ নির্যাতিতাকে ফের একবার মানসিকভাবে আতঙ্কিত করে। যে বা যারা ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে ‘টু-ফিঙ্গার টেস্ট’ করবে, তাদেরও অসৎ আচরণে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হবে। শীর্ষ আদালত সোমবার আরও বলেছে, এই পরীক্ষা পিতৃতান্ত্রিক ধারণার একটি অপপ্রয়োগ। যার গূঢ়ার্থ হল, যৌন-সক্রিয় কোনও মহিলাকে ধর্ষণ করা যায় না।
একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, তাই কোনও ব্যক্তি যদি ধর্ষণের শিকার কোনও মহিলার উপর ‘টু-ফিঙ্গার টেস্ট’ করেন, তাহলে তাঁকেও অসদাচরণের অপরাধে দণ্ডিত করা হবে। ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং হিমা কোহলিকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ দুঃখপ্রকাশ করে বলেছে, আজকের দিনেও যে এরকম একটা পরীক্ষা চলে আসছে, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। কারণ এই ধরনের পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যৌন হেনস্তায় নির্যাতিতার উপর ফের একবার শারীরিক অপদস্থ করার চেষ্টা।
সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ধর্ষণের মামলার সঙ্গে নির্যাতিতার যৌন জীবনের ইতিহাস কোনওভাবেই প্রমাণ হিসেবে বিচার্য নয়। আজকের মতো দিনেও এ ধরনের পরীক্ষা করা হয়, এটা নিন্দনীয় বলে মনে করে আদালত। কারণ, তথাকথিত এই পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। উপরন্তু, এই পরীক্ষা ওই মহিলাকে আরও একবার মানসিক নির্যাতনের মুখোমুখি ঠেলে দেয়।
এদিনের রায়ে শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে ‘টু-ফিঙ্গার টেস্ট’ যাতে না করা হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়াও মন্ত্রককে এই নির্দেশ সব রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের জানিয়ে দিতে বলেছে আদালত। এর জন্য প্রয়োজনে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে কর্মশালা ডাকার কথাও বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। একটি যৌন নিগ্রহের মামলায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করার রায় বহাল রাখতে গিয়ে এদিন এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।