পিয়ংইয়াং: দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা (South Korean Movie) দেখার অপরাধে দুই কিশোরকে জীবন দিতে হল উত্তর কোরিয়ায় (North Korea)। এই নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ওই দুই কিশোরের বয়স ১৬ এবং ১৭। উত্তর কোরিয়ার হায়েসান (Hyesan)-এর বিমানঘাঁটিতে (Airfield) জনসমক্ষে তাদের প্রাণদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে হত্যা করা হয়েছে সে দেশের একনায়কতান্ত্রিক শাসকের আইন অনুযায়ী। ঘটনাটি গত অক্টোবরের। তবে এই খবরটি সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।
প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, কর্তৃপক্ষ (Authority) কিশোর পড়ুয়াদের (Teenager Students) জনসমক্ষে দাঁড় করায় ও তাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয় (Death Penalty) এবং সঙ্গে সঙ্গে তাদের গুলি করে মারা হয়। উত্তর কোরীয় জনগণের উদ্দেশে বলা হয়, যারা দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা (Cinema) ও ড্রামা (Drama) দেখবে কিংবা বিতরণ করবে এবং সামাজিক আদেশে (Social Order) বিঘ্ন ঘটাবে অন্যান্য লোকজনকে হত্যা করে, তাদের ক্ষমা করা হবে না, তাদের মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত সাজা দেওয়া হবে। ওই দুই কিশোরের সঙ্গে আরও একটি ছেলেকে গুলি করা মারা হয়। তার অপরাধ ছিল, সে তার সৎ মাকে হত্যা করেছিল। তিনজনকে গুলি করে মারার পর উত্তর কোরীয় জনগণের উদ্দেশে কর্তৃপক্ষের বার্তা যে কোনও অপরাধই একইরকম পাপ কাজ।
উল্লেখ্য, কিং জং-উন (Kim Jong-un)-এর শাসনে উত্তর কোরিয়াতে বিদেশি মিডিয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। জংয়ের চোখে দক্ষিণ কোরিয়াকে তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু। আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বের সুসম্পর্ক থাকায় উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক (Supreme Leader) দক্ষিণ কোরিয়াকে একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। দক্ষিণ কোরিয়ার যে কোনও মিডিয়াকে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছেন কিম। তবে এটা কড়াকড়ি সত্ত্বেও ইউএসবি ড্রাইভ কিংবা এসডি কার্ড (USB Drives or SD Cards)-এ ভরে সে দেশে দক্ষিণ কোরীয় সিনেমা পাচার হয়। গোপন সূত্রে ওই দুই কিশোরের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খবর পায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। উত্তর কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, নাবালক হোক কিংবা প্রাপ্তবয়ষ্ক, সে দেশে দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা বিতরণ করা কিংবা দেখার চূড়ান্ত সাজা হল মৃত্যুদণ্ড।
প্রসঙ্গত, গত বছর প্রাক্তন সর্বাধিনায়ক কিম জং-ইল (Kim Jong-il)-এর দশম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১১ দিনের শোক উদযাপন করা হয়েছিল। সে সময় নাগরিকদের হাসিঠাট্টা, কেনাকাটি এবং মদ্যপান করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল উত্তর কোরিয়া সরকার।