বালুরঘাট: ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে আট বছরে শিশুকে অপহরণ (Kidnap) এবং তারপর ডোবা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার (cadaver recovered)। শিশুমৃত্যুর ঘটনার জেরে জনরোষে উত্তপ্ত বালুরঘাট। আট বছরের ওই শিশুটিকে অপহরণের পর হত্যা করে বস্তায় বেঁধে একটি খালের ধারে পুঁতে রাখা হয়েছিল। ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী এক যুবক এবং তার বাবা ও স্ত্রী। তিনজনকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং জেরার সামনে তাঁরা দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। মৃতদের উদ্ধারের পর পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের (Post-Mortem) জন্য পাঠায়। ঠিক কী কারণে অভিযুক্ত যুবক খুন করেছে, তা জানা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এর সঙ্গে শিশু পাচারচক্রের যোগ থাকতে পারে।
ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট পৌরসভা এলাকার এ কে গোপালন কলোনিতে। জানা গিয়েছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় দীপ হালদার নামে আট বছরের শিশুটিকে ঘুড়ি কিনে দেয় প্রতিবেশী যুবক মানস সিং। শিশুটি ওই ঘুড়ি নিয়ে পাশের একটি মাঠে খেলতে চলে যায়। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত্রি নামলেও সে আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর, শিশুটির পরিবার তার খোঁজাখুজি শুরু করে দেয়। বালুরঘাট থানায় নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়। শিশুটির ঠাকুমার অভিযোগ ছিল, ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে মানস সিং শিশুটিকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তার। ঘটনায় এলাকাবাসীও অপহৃত শিশুটিকে খুঁজে বের করার দাবি জানাতে থাকে।
আরও পড়ুন: Jangipur Firebrigade: অবশেষে জঙ্গিপুরে দমকল কেন্দ্র, জানালেন বিধায়ক
এই ঘটনার জেরে রবিবার গোটা এলাকা উত্তেজিত ছিল। অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুরও চালায় উত্তেজিত জনতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যেভাবে শিশুটিকে ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে অপহরণ করা হয়, তাতে এর পিছনে বড় কোনও চক্র যুক্ত থাকতে পারে। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত নিজেই আত্মসমর্পণ করেছিল। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত মিথ্যে কথা বলছে। মূল দোষীকে পাকড়াও না করা পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এই ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ঘটনায় গোটা এলাকা থমথমে, পুলিশের আশঙ্কা ছিল ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহটি তার পরিবারের হাতে তুলে দিলে যে কোনও সময় এলাকা অশান্ত হয়ে উঠতে পারে, সেই কারণে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছিল বালুরঘাটের গোপালন এলাকায়। উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা দফায় দফায় মোতায়নরত পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগও রেখে চলছিলেন। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে কিছুক্ষণের জন্য পরিবারকে শিশুদের মৃতদেহ দেখিয়ে সোজা নিয়ে চলে যায় বালুরঘাট থানার পুলিশ।