শিলদা: অমাবস্যার রাতে ঘুঙুরের শব্দ ভেসে আসে। গ্রামের অনেকেই সাক্ষাৎ মায়ের দর্শন পেয়েছেন। প্রায় ১৩০ বছর ধরে দক্ষিণাকালী মায়ের আরাধনা করছেন গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার (Shildar Gangopadhyay family)। ছবিটা বেলপাহাড়ি (Belpahari) ব্লকের শিলদা এলাকায় গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের পুজো। এবছরও পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কালীপুজোর সময় উৎসবে মেতে উঠবেন গ্রামবাসীরা। ইতিমধ্যেই গ্রামের মন্দির প্রাঙ্গণে ঠাকুর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় চার ফুট উচ্চতার কালী মা’কে বৈষ্ণব মতে পুজো করা হয়।
গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য তীর্থেশ্বর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, দাদু – ঠাকুরদার অমল থেকে পুজো হয়ে আসছে। মা খুবই জাগ্রত। গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা একত্রে পুজোর আয়োজন করেন। গ্রামবাসীরাও মায়ের আরাধনা করেন। মা খুবই জাগ্রত। অনেকেই অমাবস্যার রাতে ঘুঙুরের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। খুব নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন।
আরও পড়ুন: ধান্যকুড়িয়ার শ্মশানে পুজোর দিনেই কালীর মূর্তি তৈরি হয় আজও
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড়শো বছর আগে ওই এলাকায় একটি দুর্গাপুজো হতো। সেই পুজোকে কেন্দ্র করে উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতন। কিন্তু প্রায় ১৩০ বছর আগে আচমকা পুজো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্য স্বপ্নাদেশে দুর্গাপুজো নয়, মা কালীর আরাধনা করার বার্তা পান। তারপর থেকেই ওই এলাকায় কালী পুজো হয়ে আসছে। অপরদিকে, প্রথম দিকে পুজোর সময় ছাগ বলির প্রথা ছিল। কিন্তু কালী মায়ের আদেশেই সেই প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় কুমড়ো , আখ বলি। তীর্থেশ্বর বাবু বলেন, ছাগ বলি বন্ধ হওয়ার পর পরিবারের শান্তি ফিরে এসেছে। পরিবারের সকলে কর্মক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। একইসঙ্গে প্রতিবছর ভোগ প্রসাদের ব্যবহার করা হয়।
বহু বছর আগে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের এক পরিচারিকা গোপী মাইতি একসময় সন্ধ্যা আরতি দিতে দেরি করেন। পরে সন্ধ্যা আরতি দিতে গেলে মায়ের দর্শন পান। দর্শন পাওয়ার পর সেই পরিচারিকা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। এই ঘটনার পর থেকে সময় মেনেই পুজো করা হয়। জানা গিয়েছে, কালী মায়ের মূর্তিতে ২ কেজি ওজনের নানা রকমের সোনা ও রূপার গয়না রয়েছে। আগে পুজো মাটির ঘরেই হতো। তবে প্রায় ৫৬ বছর আগে গ্রামের ভিতরেই মন্দির গড়ে তোলা হয়। গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা মন্দির রক্ষণা বেক্ষণ করেন। প্রতিবছর মন্দিরের ভিতরে মায়ের মূর্তি গড়েন বাসুদেব কর। তিনি বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে মায়ের মূর্তি গড়ছি। খুব জাগ্রত মা। কয়েকবছর আগে আমার ছেলে সুদীপ কর মায়ের দর্শন পেয়েছেন।
আরও অন্য খবর দেখুন