নয়াদিল্লি: চীনের (China) পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। হু প্রধান তেদ্রো আধানম ঘেব্রেয়েসুস (Tedros Ghebreyesus) চীনকে রোগ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ, হাসপাতাল ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বলেছে। চীনে যেভাবে নজিরবিহীনভাবে করোনা-প্রবাহ ছড়াচ্ছে তাতে হু প্রধানের এই উদ্বেগ প্রকাশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এদিকে, ভারতের (India Covid 19) পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। গতকাল, বুধবারও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন।
ভারতেও ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭-এ আক্রান্ত মেলায় যথেষ্ট চিন্তায় পড়ে গিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্য সরকারগুলিও এনিয়ে ইতিমধ্যেই দ্রুতগতিতে পদক্ষেপ করেছে। কর্নাটক সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিশেষ নজরে রাখার। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ফের করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। বিহারেও বিমানবন্দর, স্টেশন এবং দূরপাল্লার বাসস্ট্যান্ড ব়্যানডম পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: Covid 19 India: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ভারতেও মিলল, গুজরাত ও ওড়িশায় ২ জন করে আক্রান্ত
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও আজই সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন। এর মধ্যে গুজরাত যেখানে ৩ জনকে নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, তারাও বিদেশি যাত্রীদের বাধ্যতামূলক পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যের সব হাসপাতালকে পর্যাপ্ত শয্যা, ভেন্টিলেটর, ওষুধপত্র এবং অক্সিজেন মজুত রাখতে বলা হয়েছে।
ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ (BF.7) ভারতেও পাওয়া গেল। উল্লেখ্য করোনার এই ভ্যারিয়েন্টই চীনে ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে। ভারতে এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত মিলেছে গুজরাতে ২, ওড়িশার ২ জনের মধ্যে। বিএফ.৭ আরও বেশ কিছু দেশে ছড়িয়েছে। যেমন, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্স ও ডেনমার্কেও।
চীনসহ বিশ্বে দ্রুতগতিতে কোভিড বাড়তে থাকায় বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের ডাকা জরুরি বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তার মধ্যে প্রথম ও প্রধান নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জনবহুল এলাকায় পুনরায় মাস্ক পরে থাকতে। প্রতি সপ্তাহে এখন থেকে রাজ্য ও কেন্দ্র দেশের কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল, আমেরিকায় উত্তরোত্তর করোনার প্রকোপ বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র এদিন একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বৈঠকের শেষে টুইট করে বলেন, কোভিড এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আমি সকলকে সতর্ক ও কড়া নজর রাখতে বলেছি। যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় আমরা তৈরি।
নীতি আয়োগের সদস্য, গত কোভিডযুদ্ধের সেনাপতি ভি কে পাল বলেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তিনিও মানুষকে মাস্ক পরতে পরামর্শ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিমান যাতায়াতের ক্ষেত্রে নির্দেশিকার কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: Covid 19 India: ভিড়ের মধ্যে মাস্ক পরুন, ফের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা কেন্দ্রের
সরকার ঠিক করেছে, এখন থেকেই সমস্ত কোভিড পজিটিভের নমুনা আইএনএসএসিওজি-তে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। ইনসাকগ হল স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীন একটি সংস্থা, যারা ভারতে কোভিডের বিভিন্ন স্ট্রেন নিয়ে গবেষণা করে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ সব রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, জাপান, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল এবং চীনে ফের কোভিড উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এই অবস্থায় সমস্ত পজিটিভ কেসের ভ্যারিয়েন্ট নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুন ভ্যারিয়েন্ট নির্ধারণ সঠিক সময়ে হওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়ে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উপর জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।