নয়াদিল্লি: বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলার পাঁচ হিন্দু রমণীর মধ্যে একজন রাখি সিং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়ে খোলা চিঠি লিখলেন। বাকি চার মামলাকারিণী ও তাঁদের আইনজীবী এবং তাঁর ছেলে ক্রমাগত তাঁকে হেনস্তা ও অপদস্থ করে চলেছেন বলে তিনি শান্তিতে মৃত্যুবরণ করতে চান বলে আবেদন জানিয়েছেন মুর্মুর কাছে। আগামী ৯ জুন, শুক্রবার, সকাল ৯টা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির জবাবের অপেক্ষায় থাকবেন রাখি। তারপর তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবেন বলে চরম সময় দিয়েছেন।
রাখি হলেন মূল মামলাকারী জিতেন্দ্র সিং বিষেন-এর ভাইঝি। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিষেন, তাঁর স্ত্রী ঘোষণা করে জানান তাঁরা সপরিবারে এই মামলা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। তাঁদের ক্রমাগত হেনস্তা করা হচ্ছে এই অভিযোগে তিনি জ্ঞানবাপী সংক্রান্ত সমস্ত মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। গত শনিবার বিশ্ব বৈদিক সনাতন সঙ্ঘের প্রধান বিষেন এক বিবৃতিতে বলেন, আমি, আমার স্ত্রী কিরণ সিং এবং ভাইঝি রাখি জ্ঞানবাপী সংক্রান্ত সব মামলা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। দেশ এবং ধর্মের জন্য আমরা বিভিন্ন আদালতে লড়াই করছিলাম।
আরও পড়ুন: Mohila Samman Savings Certificate | নয়া সঞ্চয় প্রকল্পে মিলছে না প্রত্যাশিত সাড়া
মামলা করাটাই এক ‘বিরাট ভুল’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এতদিন এই মামলা চালিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে গুজব রটিয়ে তাঁদের হেয় করার চেষ্টা চলছে। এই কাজে অন্যরাই শুধু নয়, হিন্দু মামলাকারীরাও রয়েছেন। এই অবস্থায় ‘ধর্মযুদ্ধ’ চালিয়ে যেতে পারছি না। সে কারণেই আমরা সরে দাঁড়াচ্ছি। তিনি আরও বলেছেন, ধর্মের নামে যারা গিমিক ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করে এই সমাজ শুধুমাত্র তাদেরই সঙ্গ দেয়।
রাখি এবং আরও চার হিন্দু রমণী ২০২১ সালের অগাস্টে বারাণসী আদালতে একটি আবেদন করেন। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে মা শৃঙ্গার গৌরীস্থলে রোজ পূজার্চনা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। রাখি সিংয়ের এখন দাবি, বাকি চার মহিলা এবং আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন ও তাঁর আইনজীবী ছেলে বিষ্ণু জৈন তাঁকে অপমান করে চলেছেন। তাঁর অভিযোগ, মামলাকারিণী লক্ষ্মীদেবী, সীতা সাহু, মঞ্জু ব্যাস, রেখা পাঠকরা মিলে তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছেন। ২০২২ সালের মে মাস থেকে তাঁর, কাকা বিষেন ও কাকিমা কিরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার চলছে। গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে, আমরা এই মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছি। এর ফলে আমাদের পরিবারের উপর অতিরিক্ত মানসিক চাপ আসছে। গোটা হিন্দু সমাজের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগে গিয়েছে। তাই তিনি এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানিয়েছেন।