নয়াদিল্লি: বুলডোজার সাজার বিরুদ্ধে বুধবার কঠোর বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। কোনও অপরাধে অভিযুক্ত কিংবা সাজাপ্রাপ্তের বাড়ি বা সম্পত্তি প্রশাসন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে পারে না। এমন প্রশাসনিক কাজ আইনবিরোধী, একইসঙ্গে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নীতির বিরোধী। কারণ ব্যক্তির অপরাধ বিচার করে সাজা দেওয়ার এক্তিয়ার আদালতের। কাউকে অপরাধী সাব্যস্ত করার অধিকার প্রশাসনের নেই। তাই সাজা দেওয়ার ক্ষমতাও নেই। জানিয়েছে বিচারপতি বি আর গভই (Justice BR Gavai) ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের (Justice KV Vishwanathan) ডিভিশন বেঞ্চ।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, প্রশাসন যখন বুলডোজার দিয়ে কোনও বাড়ি এমন ক্ষেত্রে ভেঙে দেয়, তা নিঃসন্দেহে শিহরণ উদ্রেককারী। কারণ সে ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া মানা হয়নি। সেই সঙ্গে আইনের অস্তিত্বহীন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার কথা মনে করিয়ে দেয়। যেখানে ক্ষমতাধরদের অধিকার শেষ কথা বলে। অথচ আমাদের সংবিধান আইনের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে রাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের কোনও সুযোগ নেই। এমন ক্ষেত্রে কঠোর আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমাদের সংবিধানিক নীতি ও মূল্যবোধ এমনই যে, সেখানে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে অয়েল প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ, ঝলসে গেল ৮ শ্রমিকের দেহ
আদালত আরও বলে, সাজাপ্রাপ্তের বাড়িও ভাঙার সুযোগ নেই। অন্তত আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে বাড়ি ভাঙা যায় না। এর অন্যথা নিঃসন্দেহে বেআইনি। আইনি নিজের হাতে নেওয়ার দায়ে সেক্ষেত্রে প্রশাসন অপরাধী। তাই যে বা যারা বাড়ি ভাঙায় যুক্ত থাকবে, তাদেরই এমন পদক্ষেপের দায় নিতে হবে। কারণ এমন কাণ্ডের ফলে সাজাপ্রাপ্তের সঙ্গে তার নিরপরাধ পরিবারকেও ভুগতে হয়।
‘বুলডোজার জাস্টিস’ বন্ধ করার দাবিতে আদালতে আবেদন করেছিল জামিয়াত উলেমা-এ হিন্দ এবং আরও অনেকেই। সেই মামলাগুলির শুনানিতেই এই রায় সর্বোচ্চ আদালতের। এই প্রবণতা রুখতে আদালত গাইডলাইন জারি করেছে। কিন্তু যে কোনও রাস্তা, ফুটপাত, রেললাইন সংলগ্ন এলাকা, নদীর পাড়, জলাধার সংলগ্ন এলাকায় জবরদখলের ক্ষেত্রে এই গাইডলাইন কার্যকর নয় বলেও জানিয়েছে আদালত।
গাইডলাইন অনুযায়ী
১) কোনও বাড়ি ভাঙার আগে কারণ দর্শানোর নোটিস দিতে হবে।
২) অভিযুক্তের বক্তব্য শুনে চূড়ান্ত নির্দেশ জারি করতে হবে।
৩) সেই চূড়ান্ত নির্দেশের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা দরকার, তারপর কোনও নির্মাণ ভাঙা যাবে।
দেখুন অন্য খবর: