নয়াদিল্লি: জনবিরোধী নীতির সমালোচনা করায় রাষ্ট্রের রোষের মুখে পড়েছে কলকাতা টিভি । সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার কার্যত হুমকি দেওয়া হয়েছে । কেন তা করা হবে না সেই বিষয়ে জবাব চাওয়া হয়েছে । এই অবস্থায় বাংলা সংবাদমাধ্যমের পাশে দাঁড়াল একাধিক জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যম ।
তিন বছর চুপ করে থাকার পর গত সপ্তাহে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি) কলকাতা টিভি-র সম্পাদককে হঠাৎ ডেকে পাঠায় । এ বার নোটিস পাঠিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক । চ্যানেলের সম্প্রচার-স্বত্ত্ব নবীকরণ নিয়ে ওই নোটিস পাঠানো হয়েছে । কেন্দ্রের বক্তব্য, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে অনুমোদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দিয়ে থাকে তা কলকাতা টিভির ক্ষেত্রে খারিজ হয়ে গিয়েছে।
কলকাতা টিভি-র বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে। যার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ ভারতের হায়দরাবাদ থেকে প্রকাশিত ন্যাশনাল হেরাল্ড । এছাড়াও দ্য টেলিগ্রাফ এবং দ্য ওয়্যার -এর মতো সংবাদমাধ্যমেও কলকাতা টিভির প্রতি রাষ্ট্রের রোষের খবর প্রকাশিত হয়েছে ।
কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো নোটিস নিয়ে কলকাতা টিভির বক্তব্য, হ্যাঁ ঠিকই খারিজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, কোন যুক্তিতে তা বলা হয়নি। তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক কলকাতা টিভির ওই আবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের জন্য ফরওয়ার্ড করেছিল । কেন্দ্র সাত দিনের মধ্যে এই নোটিসের জবাব চেয়েছে । জানতে চাওয়া হয়েছে কেন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হবে না।
সম্পাদক কৌস্তুভ রায় টুইট লিখেছেন, ‘প্রথমে ওরা সিবিআই-ইডি পাঠিয়েছিল। সুবিধে হয়নি। এবার কলকাতা টিভির লাইসেন্স বাতিল করার নোটিস দিয়েছে। দেশের স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের উপর আরও একটা আঘাত। আমরা প্রতিবাদ করব ফ্যাসিস্ট অগণতান্ত্রিক মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলব। কোনও অন্যায় চাপের কাছে মাথা নোয়াব না। আশা রাখি দেশের গণতন্ত্র প্রিয় মানুষ, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের এই লড়াইয়ের পাশে থাকবে।’
২০০৬ সাল থেকে দীর্ঘ ষোল বছর ধরে বাংলা সংবাদমাধ্যমের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ কলকাতা টিভি। সরকারে যে দলই থাকুক স্পেডকে স্পেড বলতে, কালোকে কালো বলতে বা সাদাকে সাদা বলতে ছাড়েনি। সংবিধানকে মর্যাদা দিয়ে এক প্রকৃত সংবাদ মাধ্যমের কর্তব্য এবং দায়িত্ব, নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে গিয়েছে। হয়তবা সে কারণেই বারবার শাসকের কোপে পড়তে হয়েছে কলকাতা টিভিকে। তা না হলে, কলকাতা টিভি সম্প্রচারের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার বিরোধ কোথায় ঘটছে? কী এমন সংবাদ সম্প্রচারিত হয়েছে যে যার জেরে দেশের সার্বভৌমত্ব বা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে কেন্দ্র!