নয়াদিল্লি: বহু প্রতীক্ষিত উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হল৷ এবার রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারে ঝাঁপানোর পালা৷ কিন্তু কমিশনের ঘোষণা যেন রাজনৈতিক দলগুলির পায়ে শিকল বেঁধে দিয়েছে৷ শুক্রবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র জানিয়ে দেন, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দল মিটিং, মিছিল, বাইক অথবা সাইকেলে প্রচার কিছুই করতে পারবে না৷ ১৫ জানুয়ারির পর পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে পরবর্তী নির্দেশ জারি করা হবে৷ নির্দেশ অমান্য করে প্রচারে বের হলে প্রার্থীকে পড়তে হবে শাস্তির মুখে৷ হুঁশিয়ারি দিয়ে সুশীল চন্দ্র জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের পরবর্তী ভোটপ্রচার বন্ধ করে দেওয়া হবে৷ এ ব্যাপারে জেলাশাসকদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার৷
করোনা আবহে ভোট হতে চলেছে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, গোয়া, মণিপুর এবং উত্তরাখণ্ডে৷ এমন সময় ভোটের নির্ঘণ্ট জারি হল যখন গোটা দেশে মাত্রাছাড়া ওমিক্রন সংক্রমণ৷ এর আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে ভোট পিছানোর কথা বিবেচনা করতে বলে৷ কিন্তু তখন সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন সেরে ফেলার পক্ষেই মত দেয়৷ সেই মতো কমিশন এদিন জানিয়ে দেয়, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ রাজ্যে সাত দফায় ভোট সম্পন্ন হতে চলেছে৷
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারে কমিশন কী কী কোভিড বিধি বেঁধে দেয় সে দিকেও নজর ছিল রাজনৈতিক দলগুলির৷ কিন্তু কমিশনের ঘোষণায় আগামী সাতদিন ধাক্কা খেতে চলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী প্রচার৷ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সমস্ত ধরনের পদযাত্রা, বাইক মিছিল, মিটিং সব কিছুতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ বরং রাজনৈতিক দলগুলিকে বেশি করে ভার্চুয়াল প্রচারে জোর দিতে বলেছেন সুশীল চন্দ্র৷ তিনি বলেন, ‘প্রার্থীদের যতটা সম্ভব ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রচার করতে হবে৷ রাস্তার ধারে জমায়েত করে কোনও সভা করা যাবে না৷ রাত আটটা থেকে পরের দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রচার নয়৷ সর্বাধিক পাঁচজনকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার করা যাবে৷ ফল ঘোষণার দিন বিজয় মিছিল বের করতে পারবে না কোনও রাজনৈতিক দল৷’
আরও পড়ুন: Election Commission: ১০ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোট, প্রচার হবে অনলাইনে
কোভিড বিধি মেনে কী করে পাঁচ রাজ্যে ভোট করা যায় তার প্রস্তুতি ছ’মাস ধরে চলে৷ কমিশনার জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে ভোট করাটা একটা চ্যালেঞ্জ৷ স্বাস্থ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পর এবং যাবতীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ভোটের নির্ঘণ্ট জারি করা হয়েছে৷ কোভিড আবহের মধ্যে নির্বাচন হচ্ছে৷ তাই সমস্ত কোভিডবিধি মেনে নির্বাচন করাতে বদ্ধপরিকর কমিশন৷ ভোটারদের রক্ষা করাই লক্ষ্য কমিশনের৷ জানান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার৷ তিনি বলেন, ‘ভোটার, প্রার্থী এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে এবং কোভিড প্রোটোকল মেনে চলতে হবে৷ যে কোনও ধরনের সভায় মাস্ক বিলি করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে৷ জোর দিতে হবে স্যানিটাইজেশনে৷’ এছাড়া সংক্রমণ এড়াতে বুথ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে৷ কমছে বুথ পিছু ভোটার সংখ্যা৷ সব বুথে পর্যাপ্ত মাস্ক, গ্লাভসের ব্যবস্থা থাকবে৷ কোভিডের জন্য ভোটদানের সময় একঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে৷ ভোটকর্মীদের জন্য রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করবে কমিশন৷