নয়াদিল্লি: বর্ষা (Rain) মানেই মশাবাহিত রোগের মরশুম। বর্ষায় সবচেয়ে সাধারণ রোগগুলির মধ্যে একটি হল ডেঙ্গি (Dengue)। গত কয়েক বছরে ভারতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গি। ন্যাশনাল ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে গোটা ভারতে ১,১০,৪৭৩ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে আর চিন্তা নেই, খুব শীঘ্রই সেই পরিস্থিতি থেকে মিলতে পারে মুক্তি। কারণ, খুব শীঘ্রই ডেঙ্গির টিকা হাতে আসতে পারে বলে জানালেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যল রিসার্চ (ICMR)-এর শীর্ষস্থানীয় এক আধিকারিক (Dengue Vaccine)।
আইসিএমআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব বহেল জানিয়েছে, ভারতীয় সংস্থা প্যানাসিয়া বায়োটেক (Panacea Biotec) এবং আইসিএমআর-এর (ICMR) -এর যৌথ সহযোগিতায় তৈরি হচ্ছে ডেঙ্গির টিকা। দুই পর্যায়ে এই টিকার ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। শীঘ্রই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে। তবে, মূল পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। কারণ, প্যানাসিয়া বায়োটেক সংস্থার পক্ষ থেকে ভ্যাকসিনটি এখনও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। আগামী অগস্ট মাসের মধ্যে সেই ব্যাকসিনটি এবং অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। চলতি বছরের অগাস্ট মাস থেকেই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:Mamata Nabanna | ফের নবান্নের বিভিন্ন দফতরে সারপ্রাইজ ভিজিট মুখ্যমন্ত্রীর
আইসিএমআর-এর সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডা. নিবেদিতা গুপ্তা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্যানাসিয়া বায়োটেক ভারতের সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের উপর ভ্যাকসিনটির প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতার প্রাথমিক রিপোর্টও হাতে এসেছে। তার পরই, জানুয়ারি মাসে খাতায় কলমে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে অনুমতি আসে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার (DCGI) তরফে। ২০ টি স্থানে ১৮ থেকে ৮০ বছর বয়সী ১০,৩৩৫ জন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই ট্রায়াল পরিচালনা করা হবে।”
প্যানাসিয়া বায়োটেক আরও জানিয়েছে, তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের কাউকে কাউকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। বাকিদের প্ল্যাসিবো দেওয়া হবে। অংশগ্রহণকারী বা তদন্তকারীরা কেউই জানতে পারবেন না যে কে ভ্যাকসিন গ্রহণ করছে, আর কে নিচ্ছে প্ল্যাসিবো। এই ট্রায়ালের প্রাথমিক লক্ষ্য হল, ডেঙ্গি জ্বর প্রতিরোধে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা। ট্রায়ালের দ্বিতীয় লক্ষ্য হল ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা পরীক্ষা করা।
গত বছর ভয়াবহ আকার নিয়েছিল ডেঙ্গি (Dengue)। কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় ডেঙ্গি প্রাণ কেড়েছে বহু মানুষের। সেই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য এবার গ্রীষ্ম থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত টানা মশাবাহিত অসুখ নিয়ে প্রচার চালানোর পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা ও লার্ভা নিধনের জন্য পরিকল্পিত বাজেটের বাইরে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য সরকার।