নয়াদিল্লি: আম আদমি পার্টির (AAP) সাংসদ সঞ্জয় সিংয়ের (Sanjay Singh) ইডি (ED) হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল। গত ৪ অক্টোবর দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় (Delhi Excise Scam) অর্থ তছরুপের (Money Laundering) অভিযোগে ইডি গ্রেফতার করে তাঁকে। আজ, মঙ্গলবার দিল্লির আদালত (Delhi court) ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করে।
উল্লেখ্য, এদিনই আপ বিধায়ক (AAP MLA) আমানতুল্লা খানের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। দলের তরফে বলা হয়েছে, সিবিআই এবং ইডি যেসব তদন্ত করছে, তার ৯৫ শতাংশই হচ্ছে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে। গতবছর যে মামলায় জামিন পেয়েছিলেন এদিন সেই কেসেই তল্লাশি চলে বিধায়কের বাড়িতে।
আরও পড়ুন: জাতিগণনায় সত্যের কঙ্কাল বেরিয়ে পড়বে: রাহুল
প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর দিনভর তল্লাশির পর গ্রেফতার করা হয় আম আদমি পার্টির রাজ্যসভা সদস্য সঞ্জয় সিংকে। দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত বুধবার ইডি তাঁকে গ্রেফতার করে। আবগারি দুর্নীতির অভিযোগে অর্থ তছরুপের বিষয়ে তাঁকে প্রায় ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এর আগে সকাল থেকে দিল্লির শাসকদল আম আদমি পার্টির এমপি সঞ্জয় সিংয়ের বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালায়। এই ইস্যুতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পদত্যাগ দাবি করে বিজেপি। শহরের আইটিও এলাকা এবং আপের কার্যালয়ের সামনে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ কেজরিওয়ালের ইস্তফার দাবি জানিয়ে হোর্ডিং দিয়েছিল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দাবি, এরপর আর কেজরিওয়াল সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। কেজরিওয়ালের ইস্তফা দেওয়া উচিত।
হোর্ডিংয়ে লেখা হয়েছে, আবগারি দুর্নীতির পান্ডা কেজরিওয়ালের বন্ধু। সে এখন রাজসাক্ষী হয়েছে। কেজরিওয়াল ইস্তফা দিন। আপের সদর দফতরের সামনে বিশাল প্রতিবাদ জানানো হবে বলে বিজেপি জানিয়েছে। বুধবার তল্লাশি শুরু হওয়ার পরপরই আপের টুইটার হ্যান্ডেলে সঞ্জয় সিংয়ের একটি ছবি দিয়ে পোস্ট করা হয়, ফক্কড় হাউস মে ইডি কা স্বাগত হ্যায়।
আম আদমি পার্টির শিয়রে ফের শমন। দলের নেতা সঞ্জয় সিংয়ের বাড়িতে আবগারি দুর্নীতি মামলায় বুধবার সকাল থেকে তল্লাশি শুরু করে ইডি। রাজ্যসভায় সোচ্চার, অন্য দলগুলির সঙ্গে সেতুবন্ধনের কারিগর সঞ্জয় সিংও এবার আবগারি মামলায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজরে। হঠাৎ আপের রাজ্যসভা সদস্যের বাড়িতে কেন ইডি? কারণ সঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি এই তদন্তে রাজসাক্ষী হয়েছেন। বর্তমানে বাতিল দিল্লি আবগারি নীতির কেলেঙ্কারিতে এটাই নয়া মোড়।
দীনেশ অরোরা নামে ওই ব্যক্তি সঞ্জয় সিংয়ের ঘনিষ্ঠ বলে ইডি সূত্র জানিয়েছে। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার সঙ্গে অরোরার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন সঞ্জয় সিং। আবগারি দুর্নীতি মামালয় সিবিআইয়ের কাছে আগেই রাজসাক্ষী হয়েছেন অরোরা। মঙ্গলবার অর্থ তছরুপ মামলায় দিল্লি আদাল অরোরা এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টির এক সাংসদ-পুত্র রাঘব মাগুন্তা রেড্ডিকে রাজসাক্ষী করার অনুমতি দেয়। তাদের বয়ানের ভিত্তিতেই এদিন সঞ্জয় সিংয়ের বাড়িতে তল্লাশি চলছে।
আপ নেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাঁদের রাজসাক্ষী করা হচ্ছে যাতে দলকে অপদস্থ করা যায়। দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে তল্লাশি শুরু হয়েছে দুই অভিযুক্ত রাজসাক্ষী হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। উল্লেখ্য, ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং সহকর্মী রাঘব চাড্ডার সঙ্গে সামনের সারিতে ছিলেন সঞ্জয় সিং। রাজ্যসভাতেও নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বরাবর সোচ্চার এই নেতা।
এদিন তাঁর দিল্লির বাড়িতে তল্লাশি নিয়ে মুখ খুলতে ছাড়েনি আম আদমি পার্টি। মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অনুচর সঞ্জয়ের সপক্ষে দলের বক্তব্য, সংসদে আদানি ইস্যু তোলায় তাঁকে নিশানা করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র রীনা গুপ্তা বলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা এর আগেও তল্লাশি চালিয়ে কিছু পায়নি। আজকেও কিছু পাবে না। অন্য এক নেতা বলেন, বিজেপি প্রথম থেকেই আপের পিছনে পড়ে রয়েছে। ওদের প্রতিহিংসা যেন মিটছেই না। অথচ আজ পর্যন্ত কোনও আপ নেতার ঘর থেকে বেআইনি একটা পয়সাও পায়নি তারা।
দেখুন অন্য় খবর