কলকাতা: লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের (Leaps And Bounds) কর্তাদের সম্পত্তির হিসেবে খুশি নয় আদালত। গত ২১ সেপ্টেম্বর ইডি ওই সম্পত্তি নিয়ে যে সব নথি আদালতে পেশ করেছে, তা নিয়ে সোমবার তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Amrita Sinha)। ইডি এবং সিবিআইকে বিচারপতির তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৯ সেপ্টেম্বর। ওই দিনের মধ্যে ইডি ও সিবিআইকে ফের রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে আদালত (Calcutta Highcourt)।
আইনি মহলের মতে, যে ভাষায় বিচারপতি সিনহা এদিন কেন্দ্রের দুই তদন্তকারী সংস্থাকে ভর্ৎসনা করেছেন তা রীতিমতো নজিরবিহীন। বিচারপতি বলেন, এরকম তদন্ত চললে সব নথি লুপ্ত হয়ে যাবে। তাঁর অভিযোগ, যে সমস্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিল, তার অনেক কিছুই ইডির রিপোর্টে নেই। তিনি বলেন, আপনারা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সম্পত্তি হিসেবে মাত্র তিনটি জীবন বিমা পলিসি দেখিয়েছেন। তার কি আর কোনও সম্পত্তি নেই? তিনি একজন সাংসদ। তার জন্য ভাতা পান। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট কোথায়? সম্পত্তির হিসেবে ওই কোম্পানির গাড়ি সহ অন্য অনেক কিছুরই উল্লেখ নেই।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ২ অক্টোবর তৃণমূলের দিল্লি অভিযান
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, সংস্থার অন্য ডিরেক্টরদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন না কেন? ইডি কি এই ধরনের তদন্ত করার ব্যাপারে প্রশিক্ষিত? আপনারা কি শুধু এটারই তদন্ত করছেন? তদন্তকারী অফিসার বলেন, আমরা নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ সব নিয়োগেরই তদন্ত করছি। বিচারপতি জানতে চান, আপনারা কি অতিরিক্ত চেইপ ভারাক্রান্ত? সংস্থার থাকা পরিবর্তন নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ইডিকে। বিচারপতি বলেন, আপনারা দেখিয়েছেন, ৩০ বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের রেজিস্ট্রেশন হয়। পরে ঠিকানা পরিবর্তন হয়। আপনাদের রিপোর্টে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের সম্পত্তির পুরো হিসেবে নেই কেন? কেন ঠিকানা পরিবর্তন হল, কে ঠিকানা পরিবর্তন করল, সে সব তদন্ত করে দেখেছেন কি?
সিবিআইয়ের সিটের প্রধান অশ্বিন শেনভির কাছে বিচারপতি জানতে চান, আপনি ইডির সঙ্গে সব কথোপকথন শুনেছেন? এই ভাবে তদন্ত চললে আপনারা কেমন কর লক্ষ্যে পৌঁছবেন? অশ্বিন বলেন, নিয়োগ দুর্নীতির পিছনে কারা রয়েছে, আমরা তার তদন্ত করছি। বিচারপতি ফের জানতে চান, ১৮৮ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের সম্পত্তি কার, রিপোর্টে তার উল্লেখ নেই কেন? তাঁর আরও প্রশ্ন, আগের রিপোর্টে সিনেমা জগতের অনেকের নাম ছিল, এবারের রিপোর্টে মাত্র একজনের নাম। বাকিদের নাম কোথায়? বিচারপতি বলেন, আদালত আপনাদের বিশ্বাস করেন আদালতের পক্ষে মানুষের কাছে গিয়ে সব জানা সম্ভব নয়। আমি এর পিছনে অন্য গন্ধ পাচ্ছি।
দেখুব আরও খবর: