কলকাতা:
কলকাতা: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার (Kanchanjunga Express Accident) দায় কার, তা নিয়ে শুরু হল চাপানউতোর। রেলের তরফে দুর্ঘটনার দায় চাপানো হয়েছে মালগাড়ির চালকের উপরে। রেলের দাবি, মালগাড়ির লোকো পাইলট সিগন্যাল মানেননি। তিনি সিগন্যাল উপেক্ষা করেছিলেন। তাতেই বিপত্তি ঘটে। মালগাড়ি গিয়ে ধাক্কা মারে যাত্রীবাহী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে (Kanchanjunga Express)। রেল এই দাবি করলেও সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, এদিন ভোর ৫.৫০ মিনিট থেকে অটোমেটিক সিগন্যাল খারাপ ছিল। তার জন্যই দুর্ঘটনা ঘটে। রেল আরও দাবি করেছে, ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মালগাড়ির দুই চালক, যাত্রীবাহী ট্রেনের গার্ড-সহ মোট আটজনের। পিটিআই বলছে, মৃতের সংখ্যা ১৫।
কী কারণে এদিন একই লাইনে চলে এল মালগাড়ি এবং দূরপাল্লার ট্রেন, তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান সিগন্যালিংয়ের সমস্যার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সিগন্যাল ফেল করেই মালগাড়িটি ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান জয়া ভার্মা সিনহা জানিয়েছেন,মালগাড়ির চালক সিগন্যাল না মেনেই এগিয়ে যান। তার জেরে দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেল সূত্রের খবর, মালগাড়ির চালক সিগন্যাল উপেক্ষা করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, এই দুর্ঘটনায় প্রাথমিকভাবে মানবিক ভুলের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষ হলেই সঠিক তথ্য জানা যাবে। আমরা ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। পিটিআই বলছে, ভোর ৫.৫০ থেকে রানিপাত্র থেকে ছত্তরহাট পর্যন্ত অটোমেটিক সিগন্যাল খারাপ ছিল। TA912 ম্যানুয়াল মেমোতে এগোচ্ছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সেপ্রেস। ওই একই মেমো দেওয়া হয়েছিল মালগাড়িকে। লাল সিগন্যাল এড়ানোর ছাড়পত্র দিয়েছিলেন স্টেশন মাস্টার।
আরও পড়ুন:গাফিলতি ও উপেক্ষা! রেল দুর্ঘটনায় মোদি সরকারকে দুষলেন রাহুল
এক বছর আগে ২০২৩ সালের ২ জুন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগায় মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে লাইনচ্যুত হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৩০০ জন যাত্রীর। শুধু ২০২৩ সালেই ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৭টি রেল দুর্ঘটনা হয়েছে ভারতে। গত চার বছরের হিসাবে সেই সংখ্যা অনেক বেশি। বারবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে রেল। বারবার সিগন্যালে ত্রুটি থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, সময়ের চেয়ে বেশি রেক চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে ট্রেনের চালকদের। লোকো পাইলট নিয়োগের ব্যাপারে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। বন্দে ভারতের মতো বিলাসবহুল ট্রেনের দিকে নজর দিতে দিয়ে অবহেলা করা করা হচ্ছে বাকি কম খরচের ট্রেনের কামরাগুলিকে। রেলের নজরদারির অভাবে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। কংগ্রেস এবং আরজেডি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগ দাবি করেন।
অন্য খবর দেখুন