ওয়েব ডেস্ক: ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হামলা-পাল্টা হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বাড়ছে। সাম্প্রতিক কালে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিতে একাধিক আঘাত হানার অভিযোগ। সর্বশেষ, পার্শিন অঞ্চলে ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র হামলার শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছে তেল আভিব। নেতানিয়াহুর লক্ষ্য, এই উত্তেজনাকে সরাসরি যুদ্ধে রূপান্তরিত করে পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যপ্রাচ্যে টেনে আনা। তেহরানের ওপর আঘাত হানতে বারবার সীমা অতিক্রম করছে ইজরায়েল, যা ইরানকে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সহযোগী মোহাম্মাদ-জাভেদ লারিজানি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরান প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম। পশ্চিমাদের ‘ভ্রান্ত ধারণা’ সম্পর্কে মন্তব্য করে লারিজানি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অদম্য। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, ইরানের ঘাঁটিগুলি আক্রান্ত হলে শত্রুদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া হবে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান ইরান সফর করেন। তার এই সফরকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য পরমাণু চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও খবর: ইজরায়েল জুড়ে ড্রোনের তান্ডব! দর্পচূর্ণ নেতানিয়াহু’র
তেহরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে কোনো আপসে যেতে রাজি নয়। ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, চুক্তির শর্ত মানতে তারা বাধ্য নয়। লারিজানি পশ্চিমাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরানের স্থাপনাগুলিতে হামলার ফল ভোগ করতে হবে। এদিকে, তেহরানের এই কঠোর অবস্থানে পশ্চিমা দেশগুলো চাপের মুখে পড়েছে। পরমাণু চুক্তি ভাঙার সম্ভাবনা নিয়ে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে, তা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে আরও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
ইরানের মিত্র ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আব্রাহাম লিংকনের উপর একাধিক মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। সর্বশেষ হামলাটি ১২ নভেম্বর ঘটে, যা সফল হয়েছে বলে দাবি করেছে হুতিরা। এই হামলার পর মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি লোহিত সাগর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তিন মাস ধরে মোতায়েন থাকা এই রণতরী ইয়েমেন উপকূল থেকে কয়েকশ মাইল দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
যদিও মার্কিন নৌবাহিনী এই হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা অস্বীকার করেছে, তবুও যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি অনেক বিশ্লেষকের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের পিছু হটার ইঙ্গিত। এ অবস্থায় ইরান, ইজরায়েল ও তাদের মিত্রদের মধ্যে উত্তেজনা যে কোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। সংঘাত বাড়লে তা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
দেখুন আরও খবর: