নয়াদিল্লি: প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান বিবেক দেবরায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। অসুস্থতার কারণে বিবেক দেবরায় দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এমস)-এ চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার সকালে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘বিবেক দেবরাজজি অর্থনীতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি, আধ্যাত্মিকতা, রাজনীতি সহ একাধিক বিষয় সুপণ্ডিত ছিলেন। কাজের মধ্য দিয়ে তিনি ভারতের বৌদ্বিক মননে স্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন। জনসম্পর্কিত নীতি নির্ধারণ ছাড়াও নানান ভূমিকা ছিল তাঁর। তিনি আমাদের প্রাচীন গ্রন্থগুলিকে আধুনিক ভাষার মাধ্যমে যুবসমাজের কাছে তুলে ধরেছিলেন। দেবরায়কে আমি বহু বছর ধরে চিনতাম। আমি তাঁর অন্তর্দৃষ্টি ও শিক্ষামূলক বক্তৃতার কথা আজীবন মনে রাখব’।
আরও পড়ুন:রিটেনশনের পর কেকেআরের পকেটে ৫১ কোটি, বাকিদের?
সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘খুব দুঃখজনক ঘটনা। বিবেক দেবরায় একজন বাঙালি অর্থনীতিবিদ ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলার একজন মেধাবী সন্তান, সুপণ্ডিত। বিবেক দেবরায় চিরকাল আমাদের মননে থাকবেন। তাঁর শোকাহত পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমার সমবেদনা’।
উল্লেখ্য, মেঘালয়ের শিলংয়ে এক বাঙালি পরিবারে জন্ম নেন বিবেক দেবরায়। স্বাধীনতার সময়ে তাঁর পিতামহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সিলেট থেকে শিলংয়ে আসেন। শৈশব থেকেই মেধাবী ছিলেন দেবরায়। একসময় কলকাতায় পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে তিনি দিল্লি ‘স্কুল অফ ইকনমিক্স’ এ নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে অধ্যয়ন। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, প্রেসিডেন্সি কলেজ সহ কেম্বব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর পদে নরেন্দ্র মোদি বসার পরে যোজনা কমিশন বাতিল করে নীতি আয়োগ তৈরি করা হয়। সেই পরিচালন পর্ষদের অন্যতম সদস্য করা হয় বিবেক দেবরায়কে। তবে আগে ইউপিএ আমলে ‘রাজীব গান্ধি ইনস্টিটিউট অফ কনটেম্পোরারি স্টাডিজ’-এর অধ্যক্ষ পদে ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পরে নীতি আয়োগের পুনর্গঠনের সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েন বিবেক দেবরায়।
তবে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয় তাঁকে। পরে পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আসীন হন তিনি। ২০২৩ সালে স্বাধীনতা দিবসের আগে এক নিবন্ধে সংবিধানের আমূল বদলের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তবে সেই নিয়ে বিস্তর রাজনৈতিক বিতর্ক বিবাদ শুরু হয়। মোদি সরকারের দিকে আঙুল তুলে সরব হয় বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, এবার বাবাসাহেব আম্বেদকরের তৈরি সংবিধান বদলাতে চাইছে মোদি সরকার।
দেখুন অন্য খবর: