ক্যালিফোর্নিয়া: মানব সভ্যতার কাছে আতঙ্কের আরেক নাম হল ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের কারণে ভূমিধস থেকে শুরু করে ফাটল এবং সুনামির মত বিপর্যয় হয়ে থাকে। শহরের পর শহর তলিয়ে যায় পাহাড় প্রমাণ ঢেউয়ের হানায়। কিন্ত জানেন কি পৃথিবীতে সবথেকে বেশি সময় ধরে ভূমিকম্প কবে হয়েছিল? আমরা অনেকেই এর সঠিক উত্তর জানিনা। অথচ, আজ থেকে এক বছর আগেই ঘটেছিল এই ভুমিকম্পের ঘটনা, যা থেকে বিশাল সুনামি হতে পারত। বৈজ্ঞানিকদের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঘটেছিল এই ঘটনাটি। গ্রিনল্যান্ডের ডিকসন ফজর্ডে একটি বিশাল ভূমিধসের কারণে এই কম্পন সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কম্পন হয়েছিল এবং বিশ্বজুড়ে এর শকওয়েভ অনুভূত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আরবের মরুভুমিতেই রয়েছে মানব সভ্যতার বিবর্তনের ব্লু-প্রিন্ট?
ইন্টারন্যাশান্যাল সারফেস ওয়াটার অ্যান্ড ওশান টপোগ্রাফি স্যাটেলাইট মিশন এই মর্মে একটি তথ্য প্রকাশ করে। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, গ্রিনল্যান্ডের এই কম্পন প্রায় ৯ দিন অব্যাহত ছিল। এই তথ্যটি গবেষকদের ভাবিয়েছে। কারণ, এত দীর্ঘ কম্পন সমুদ্র তীরবর্তী কোনও এলাকায় ঘটলে তা ভয়াবহ সুনামির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ভূমিধসের একদিন পর ফজর্ডে জলের উচ্চতা এবং এক মাস আগে শান্ত পরিস্থিতিতে নেওয়া পরিমাপের তথ্যের তুলনা করে বিজ্ঞানীরা জলের স্তরে একটি বড় পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন। এই তথ্য অনুযায়ী, ফজর্ডের দক্ষিণের তুলনায় উত্তর দিকে ৪ ফুট পর্যন্ত জলের স্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল। সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, এই ভূমিধস প্রায় ৬৫০ ফুট উচ্চ তরঙ্গ তৈরি করেছিল।
উল্লেখ্য, সমুদ্র থেকে দূরে এই সীমাবদ্ধ স্থানে, সুনামির শক্তি সহজে বিলীন হতে পারে না। এর ফলে তরঙ্গটি ৯ দিনের জন্য প্রতি ৯০ সেকেন্ডে চারপাশে ঘুরতে থাকে। এই কারণে যে কম্পন তৈরি হয়েছিল, তা হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সিসমিক যন্ত্র দ্বারা সনাক্ত করা গিয়েছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেস থেকে চালু হওয়া ইন্টারন্যাশান্যাল সারফেস ওয়াটার অ্যান্ড ওশান টপোগ্রাফি স্যাটেলাইট মিশন এই তথ্য সংগ্রহে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে।
দেখুন আরও খবর: