কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর বছরখানেক বাদে পশ্চিমবঙ্গে পা রাখছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পর থেকে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে, তাঁর এই সফরকে ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ পদ্মশিবির কি নতুন করে চাঙ্গা হতে পারবে!
বিধানসভা ভোটের আগে নবান্ন প্রায় মুঠোর মধ্যে চলে এসেছে, একথা বারবার উঁচু গলায় বলে এসেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু ভোটের ফলাফলে গোহারা হওয়ার পর থেকে দলের অভ্যন্তরে আঁকচাআঁকচি শুরু হয়। হারের কারণ নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়িও চলতে থাকে। শুরু হয় ভাঙন পর্ব। যা এখনও নিত্যদিনের ঘটনা।
এই অবস্থায় কলকাতায় পৌঁছনোর পর তিনি দলকে কী বার্তা দেন, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। বিধানসভা ভোটে বিজেপি রাজ্যে লড়াই করেছিল দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে। ভোটের পর নেতৃত্বে বদল ঘটিয়ে আনা হয়েছে সুকান্ত মজুমদারকে। অন্যদিকে, বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে বাছাই করা হয় একদা তৃণমূলের দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এই নিয়ে দলের মধ্যে বিরোধ দানা বাঁধতে থাকে।
আরও পড়ুন: Amit Shah in Bengal: রাজ্য বিজেপির কোন্দলের মাঝেই দু’দিনের বঙ্গ সফরে শাহ
সেই সময় থেকেই একে অপরের বিরুদ্ধে দায় চাপানোর রাজনীতিতে নামেন। গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় দল ভাঙার খেলা। মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন নিয়ে রাজ্যজুড়ে আগ্নেয়গিরির মতো ক্ষোভ ফুটতে থাকে। বিভিন্ন জায়গায় পদত্যাগের হিড়িক, দলের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে চলেছে এখনও। জেলা সভাপতিদের বিরুদ্ধে দলের নিচুতলার কর্মীরা সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। বিভিন্ন জেলায় নেতৃত্বের নাম করে ঘুষ নিয়ে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের অভিযোগ তুলে লিফলেট পোস্টার পড়ে।
কলকাতায় কয়েকজন সরাসরি দল ছাড়েন। দলের প্রবীণ নেতা তথাগত রায় একের পর এক টুইটে অমিতাভ চক্রবর্তী, অমিত মালব্য, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, দিলীপ ঘোষের নাম না করে শ্লেষোক্তি করেন। এমনকী দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের মধ্যেও বাক্যবাণ বিনিময় হতে থাকে। এইরকম একটি টলমল অবস্থায় অমিত শাহের রাজ্যসফর। বিশেষত, গ্রামাঞ্চলে যখন কর্মীরা রক্তাক্ত হচ্ছে বলে বিজেপির অভিযোগ, তখন নেতৃত্বের এই ফুটো কলসি দশাকে তিনি কীভাবে ঠেকনা দেবেন, সেটাই দেখার।