কলকাতা: আনিস হত্যা মামলা তদন্তে সিটের উপরই আস্থা রেখে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আনিসের মোবাইল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য হায়দ্রাবাদের এক সংস্থাকে ঠিক করে দিয়েছে আদালত। ফোনের ডিজিটাল ডেটার কপি CSFL হায়দরাবাদ নিজেদের কাছে রাখবে। আর ডিটেইল সিটকে পাঠাবে। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আনিস হত্যাকাণ্ডে একুশে ফেব্রুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে সিটের তদন্তের ওপর আস্থা রেখে এখনই অন্য কোন সংস্থাকে মামলার তদন্ত বার দিতে নারাজ বলে জানায় কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে মামলা শেষ করে সিট রিপোর্ট জমা করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আদালত জানিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি দুই সপ্তাহ পরে।
বৃহস্পতিবার শুনানিতে আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে,
১) ২ ময়নাতদন্ত জেলা জজ এর নজরদারিতে হবে। ময়নতদন্তের পর ভিসেরা নমুনা সংরক্ষণ করতে হবে।
২) মোবাইল ফোনের পরীক্ষা করবে CFSL হায়দ্রাবাদ।
৩) ফোনের ডিজিটাল ডেটার কপি CSFL হায়দ্রাবাদ নিজেদের কাছে রাখবে। আর ডিটেইল সিটকে পাঠাবে।
৪) দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে সিটকে।
৫) সমস্ত রিপোর্ট আবেদনকারীরকে দিতে হবে।
৬) ২ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমা করতে হবে সিটকে
৭) আনিসের পরিবারকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে
৮) জেলা জজকে টি আই প্যারেডের সময় ও কাকে কাকে ডাকা হবে সেটা ঠিক করতে হবে। টি আই প্যারেডের জন্য সিট আবেদন জানাবে জেলা জজ এর কাছে।
৯) সাক্ষীদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে
১০) সিটেই ভরসা হাইকোর্টের।
এদিনের শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেন, আনিসকে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক খুন করা হয়েছে। পুলিসই আনিসকে খুন করেছে। তারপর লোক দেখানো সিট গঠন করে আইওয়াশ করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: Anis Khan: আপাতত সিটেই আস্থা আদালতের, এখনই অন্য সংস্থাকে দিয়ে আনিস হত্যার তদন্ত নয়
রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল আদালতকে বলেন, মামলাকারীর দাবিটা স্বাভাবিক। কিন্তু সিট গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। মৃতের বাবা মোবাইল দিচ্ছেন না। তাই তদন্ত এগোচ্ছে না। তবুও তদন্ত চলছে। সিট ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা করবে। ইতিমধ্যে, ৩ জন পুলিস কর্মী সাসপেন্ড করা হয়েছে। ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এরপরই আনিসের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত ও তাঁর মোবাইল ফরেনসিক পরীক্ষার বিষয়ে আদালত মামলাকারীর আইনজীবীর কাছে মতামত চান। কারণ তদন্তের ক্ষেত্রে দুটোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আদালত মত প্রকাশ করেন। উত্তরে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, কোর্ট অফিসারের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত হোক। জেলা বিচারকের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত হতে পারে।