শিলিগুড়ি: কালিয়াগঞ্জে (Kaliagunj) একের পর এক ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ( Strike) ডাক দিল বিজেপি (BJP)। শুক্রবার কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা মোড়ে এক নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল হয়ে রয়েছে এলাকা। তারই মধ্যে বুধবার মাঝরাতে কালিয়াগঞ্জে রাধিকাপুর সীমান্ত এলাকায় চাঁদগায়ে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বিজেপির দাবি, মৃত মৃত্যুঞ্জয় বর্মণ তাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। মৃতের দাদা পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য। রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর অভিযোগ, বুধবার মাঝরাতে পুলিশ মৃত্যুঞ্জয়দের বাড়িতে অভিযান চালায়। বাড়ির বৃদ্ধ সদস্যকে মারধর করা হয়। প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ মৃত্যুঞ্জয়কে গুলি করে। তাতেই মারা যান মৃত্যুঞ্জয়। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ মানতে রাজি নয়। তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে না। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করে রাজ্যে অশান্তি পাকাতে চাইছে। শাসকদলের দাবি, কোথাও কোনও বনধ হবে না। শুক্রবার উত্তরবঙ্গে সব স্বাভাবিক থাকবে।
কালিয়াগঞ্জের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মালদহের কালিয়াচকে ফের নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে আলোড়ন পড়ে। দুটি ঘটনাতেই বিজেপির অভিযোগ, নাবালিকাদের ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এইসব ঘটনা নিয়ে গত কদিন ধরেই উত্তরবঙ্গ সহ গোটা রাজ্যে বিজেপি বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। তারা ইতিমধ্যেই কালিয়াচকের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে। বৃহস্পতিবারই তার একপ্রস্থ শুনানি হয়। এদিন কালিয়াগঞ্জের ঘটনার প্রতিবাদে শিলিগুড়ির হাসমি চকে বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার ঘটে। পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের ধস্তাধস্তি চলে। বিজেপি কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়াতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। তারপরই দুইপক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। মিছিলে ছিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ সহ একঝাঁক নেতা। মিছিল শেষে শঙ্কর শুক্রবার ১২ ঘণ্টা উত্তরবঙ্গ বনধের কথা জানান। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও এদিন দক্ষিণ দিনাজপুরে দলের এক সভায় বলেন, শুক্রবার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে কাল আমরা বনধ পালন করব। তাঁর দাবি, বনধ হবে সর্বাত্মক।
আরও পড়ুন:CM Bhupesh Baghel | ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বাঘেলের কাঁধে শহীদ জওয়ানের কফিন
বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে বসে অভিযোগ করেন, কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় বিজেপি হিংসা ছড়াচ্ছে। মঙ্গলবার থানায় হামলার পিছনেও বিজেপির প্রত্যক্ষ মদত ছিল। বিহার থেকে লোক এনে হামলা করা হয়েছে। নাবালিকার মৃত্যুর পাশপাশি মঙ্গলবারের থানা আক্রমণেরও তদন্ত হবে। থানার হামলায় দোষীদের কেউ পার পাবে না। এদিকে কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা মৃত্যুর ঘটনায় জাতীয় এসসি কমিশন উত্তরবঙ্গের আইজি, রায়গঞ্জের জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপারকে তলব করেছে। তাঁরা হাজির না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। তিনি বলেন, রাজবংশী নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। তার তদন্তে এসসি কমিশন ঘটনাস্থলে গেলেও জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের দেখা মেলেনি। এটা গর্হিত অপরাধ।