কলকাতা: পুর পরিষেবা নিয়ে সোমবার নবান্নে বৈঠকের মাঝেই নিটের (NEET) প্রশ্নফাঁস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন বলেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষায় ফেরানো হোক পুরানো পদ্ধতি, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নিট বাতিল করে আগের মতোই হোক রাজ্যভিত্তিক জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘২০১৭ সালের আগে পর্যন্ত রাজ্যগুলি আলাদা আলাদা ভাবে মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার আয়োজন করত। এই পদ্ধতি বড়সড় কোনও সমস্যা ছাড়া স্বাভাবিকভাবেই চলছিল। তবে হঠাৎ সেই নিয়ম বাতিল করে প্রবেশিকা পরীক্ষা নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় কেন্দ্র। রাজ্য সরকার প্রত্যেক ডাক্তারের পড়াশুনা ও ইন্টার্নশিপ বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা করে খরচ করে। ফলে রাজ্যসরকারকে স্বাধীনতা দেওয়া উচিত জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের বেছে নেওয়ার।’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষায় বিস্তর অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। এ বছর নিট পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে ৬৭ জন। এর পর থেকে এই প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে উঠেছে বিস্তর অভিযোগ। পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পাশাপাশি অনেককে গ্রেস মার্কস দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই এবার পুরানো জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা ফেরানোর দাবিতে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পুর পরিষেবা নিয়ে রাগে অগ্নিশর্মা মুখ্যমন্ত্রীর চরম হুঁশিয়ারি
অন্যদিকে দিল্লিতে মোদি-হাসিনা বৈঠকে ফরাক্কা চুক্তি নিয়ে আলোচনায় আগেই প্রবল আপত্তি জানিয়েছিল তৃণমূল সরকার। সোমবার নবান্নের বৈঠক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) এই বিষয়ে কড়া চিঠি লিখেছেন বলে জানিয়ে বলেন, চিঠিতে লেখা হয়েছে- “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন সেই প্রসঙ্গে আপনাকে লিখছি। মনে হচ্ছে গঙ্গা ও তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে আপনাদের মধ্য়ে। কিন্তু রাজ্য় সরকারকে না জানিয়ে এই ধরনের আলোচনা প্রত্যাশিত নয় এবং সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।”
মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, “আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ভৌগলিকগতভাবে এই সম্পর্ক। সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও এই সম্পর্ক। আমি বাংলাদেশের মানুষকে শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি।’ এরপর তিনি লিখেছেন ‘জল অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। এটা মানুষের লাইফলাইন। এই সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আমরা আপোস করতে পারি না। এই ধরনের চুক্তি হলে বাংলার মানুষ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
উল্লেখ্য, গঙ্গার জল বণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির মেয়াদই শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালে। এই আবহে শনিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে ‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবীকরণের জন্য ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরি করা হয়েছে। বাংলাকে না জানিয়ে ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরিতেই ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেখুন বিস্তারিত