বাঁকুড়া: ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙার অধ্যক্ষ কার্তিক মহারাজের (Kartik Maharaj) বিরুদ্ধে সুর আরও চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার বিষ্ণুপুরের সভায় তিনি কার্তিক মহারাজের নাম ধরে বলেন, ধর্মের নামে আপনি বিজেপি করছেন। রাখঢাক না করে বুকে বিজেপির ব্যাচ লাগিয়ে নেমে পড়ুন। তাঁর আরও অভিযোগ, রামনবমীর দিন রেজিনগরে যে দাঙ্গা হয়েছিল, তার হোতা ছিলেন ওই মহারাজ। মমতা বলেন, তিনি বেলডাঙায় ভোটের সময় একটি বুথে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেননি। আমি সেই জন্যই বলেছি। খবর আমিও রাখি। এলাকায় এলাকায় গিয়ে আপনি বিজেপি করে বেড়ান। আপনি করুন, কিন্তু বিজেপির চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে রেখে করুন। লুকিয়ি লুকিয়ে কেন? আগে উনি অধীর করতেন, এখন বিজেপি করছেন।
এদিন বিষ্ণুপুরে মমতার সভার কোনও কর্মসূচি ছিল না। রবিবার বিষ্ণুপুরে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশন, ইস্কনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পর্কে মমতার মন্তব্যকে হাতিয়ার করে তাঁর তীব্র সমালোচনা করেন। তারই জবাব দিতে সোমবার বিষ্ণুপুরে সভা করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার ঝাড়গ্রামে সভা ছিল মোদির। পরপর দুদিনই তিনি অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মতো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধমক দিচ্ছেন। হিন্দু সাধুদের চমকাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি কেন একটা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বলব? কেন অসম্মান করব? আমি রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে নয়। কয়েকদিন আগে প্রেসিডেন্ট মহারাজ অসুস্থ ছিলেন, দেখতে গিয়েছিলাম। আমি বলেছি দু’একজনের কথা। গঙ্গাসাগরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অফিস আছে। আশ্রম আছে। ওরা ভালো লোক। আমি একটি লোকেরই নাম বলেছিলাম, কার্তিক মহারাজ।
শনিবার আরামবাগের গোঘাটে তাঁকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সোমবারই আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন কার্তিক মহারাজ (Kartik Maharaj)। উকিলের চিঠি পাঠিয়ে মহারাজ বলেন, ওই মন্তব্যের জন্য ৪ দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা না চাইলে আইনি পদক্ষেপের করা হবে। মমতার মন্তব্যের পাল্টা কার্তিক মহারাজ বলেন, এটা হঠাৎ বলা কোনও কথা নয়। এর পিছনে অনেকটা বড় প্ল্যানিং রয়েছে।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস ডুবন্ত জাহাজ, তৃণমূলের জাহাজ ফুটো, কটাক্ষ মোদির
এদিন বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ওই সাধুর কেমন, তা এখানকার মানুষ সকলেই জানেন। সাধু-সন্তের যেরকম চরিত্র হওয়া প্রয়োজন, সেই চরিত্র তাঁর নেই। তিনি সরাসরি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবেই এখানকার মানুষের কাছে পরিচিত। ধর্মের কথা অপরকে না বলে, নিজে শিখুন, নিজে পড়ুন। নিজে আগে ধর্ম পালন করুন, তারপর লোককে শেখান।
জবাবে কার্তিক মহারাজ বলেন, আমি হিন্দু সন্ন্যাসী। আমি ভারতবাসী। হিন্দুত্ব আক্রান্ত হলে আমি প্রতিবাদ করবই। বহরমপুরের সাংসদের সঙ্গে আমার বহুদিনের সম্পর্ক। তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আমাকে বিজেপির লোকজন সাহায্য করেছেন। আমি সাহায্য চাইতে জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদের কাছে গিয়েছি। আমাকে প্রশাসনও সাহায্য করেন। কে কী বলল, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
দেখুন ভিডিও