শান্তিনিকেতন: বাড়িতে চুরির কথা শান্তিনিকেতন ফাঁড়িতে অভিযোগ করেছিলেন অধ্যাপক ভবতোষ দত্ত। গতানুগতি পুলিশি তদন্ত দেখে মহাকরণে ছাত্র তথা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ফোন করেন অধ্যাপক ভবতোষ। এরপরই বুদ্ধদেবের এক ফোনে কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনের ছুটে আসেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। সেই সময় কর্তব্যরত শান্তিনিকেতন ফাঁড়ির পুলিশকে ভাবিয়েছিলেন ছাত্র ও মাস্টারমশাইয়ের শ্রদ্ধা এবং আনুগতের কথা। সেই ইতিহাসের ইতিকথা মুখে মুখে শান্তিনিকেতনের মানুষদের।
সালটা ২০০৫। শান্তিনিকেতনের রতনপল্লীর বাসিন্দা বিশ্বভারতীর বাংলার অধ্যাপক ভবতোষ দত্ত। তাঁর বাড়িতেই রবীন্দ্র পদক সহ একাধিক সামগ্রী চুরি হয়। অধ্যাপক ভবতোষ সাদা ধুতি, পাঞ্জাবি, কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে শান্তিনিকেতন ফাঁড়িতে গিয়ে চুরির অভিযোগ করেন। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসাররা আর পাঁচটি চুরির মত গতানুগতি তদন্ত করে। তদন্ত প্রক্রিয়ায় খুব একটা অগ্রগতি না দেখে অধ্যাপক ভবতোষ দত্ত মহাকরণে ফোন করেন ছাত্র তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। সেই এক ফোনেই কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে দৌড়ে আসতে হয়েছিল রাজ্য পুলিশের ডিজিকে।
আরও পড়ুন: বুদ্ধদেবের প্রয়াণে শোকবার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদির
সেই সময় শান্তিনিকেতনের ফাঁড়িতে কর্তব্যরত অফিসাররা ভাবতে বাধ্য হয়েছিল অবহেলাটা ঠিক হয়নি। পাশাপাশি এও ভাবতে হয়েছিল একজন ছাত্রর প্রতি শিক্ষকের আনুগত ও শ্রদ্ধার কথা। ভবতোষের প্রতিবেশী তথা অধ্যাপক কৌশিক ঘোষের কথায়, একজন প্রকৃত ছাত্র মাস্টারমশায়ের প্রতি কর্তব্য ও শ্রদ্ধাশীল কতটা হওয়া দরকার, তা প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে শিখতে হয়। মাস্টারমশাইয়ের বাড়িতে চুরি। তদন্তে অগ্রগতি নেই। ছাত্র মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে রাজ্য পুলিশের ডিজি এসেছিলেন। সেই সময় শান্তিনিকেতন ফাঁড়ির পুলিশদের ভাবতে বাধ্য হয়েছিল। যেখানেই যে অবস্থায় দেখা হয়েছে বুদ্ধদেববাবু তাঁর মাস্টারমশাই ভবতোষ দত্তকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছেন।
শান্তিনিকেতনের আরও এক বাসিন্দা, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন কর্মী সঞ্জয় মুখোপাদ্য়ায়ের কথায়, নোবেল চুরির তদন্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই করুক, এমনই চেয়েছিলেন তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
দেখুন আরও অন্যান্য খবর: