ইসলামাবাদ: ভয়াবহ বন্যায় নাকাল পাকিস্তান। পাকিস্তানে অত্যধিক বৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে গত বেশ কয়েকদিন ধরে। আর এতেই শুক্রবার জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পাক সরকার। বন্যায় পাকিস্তানে কমপক্ষে ৩ কোটির বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৯৩৭ জন। এই সংকটে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ চেয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের জলবায়ুমন্ত্রী শেরি রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট এই বিপর্যয় মোকাবিলায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। পাকিস্তান এখন অষ্টম মৌসুমি চক্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যদিও দেশে সাধারণত তিন থেকে চার চক্রে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।
চলতি বছরের জুন মাস থেকে অব্যাহত মৌসুমি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ইতিমধ্যে আবহাওয়ার রেকর্ড ভেঙেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি। রাষ্ট্রপুঞ্জের দুর্যোগ ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে, চলতি গ্রীষ্মে এই বর্ষা পাকিস্তানে আঘাত হেনেছে। এতে বড় বন্যার কবলে পড়েন বাসিন্দারা। পাকিস্তানজুড়ে চার লক্ষের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ২ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে পাকিস্তানের পরিকল্পনা ও উন্নয়নমন্ত্রী আহসান ইকবাল জানান, বন্যায় দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ অর্থাৎ তিন কোটি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অত্যধিক বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিন্ধু প্রদেশ। দক্ষিণের প্রদেশটিতে চলতি বছর অগাস্টের গড় বৃষ্টিপাতের প্রায় আট গুণ হয়েছে।
আরও পড়ুন : মেয়াদ ৭৪ দিন, প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন উদয় উমেশ ললিত
সিন্ধুর দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হায়দ্রাবাদের এক বাসিন্দা জানান, মাটির ঘরের ছাদ ফুটো হয়ে যাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে রিক্সায় বসবাস করতে হচ্ছে। নর্দমাগুলো উপচে পড়ছে, বাড়ির সামনে আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাগুলি ভাসমান আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে বহু পরিবার কোনওরকমে বাড়ি থেকে শেষ সম্বলটুকু উদ্ধার করে জল পেরিয়েই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এই মানুষগুলো যাবে কোথায়, জানা নেই কারও।
এরই মধ্যে কোহিস্তানের বন্যায় আটকে পড়েছে বহু মানুষ। শনিবার আটকে পড়া পাঁচ যুবক পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা করেও প্রশাসনের কোনও সাহায্য পাননি। অথচ পাকিস্তানে ৩১৩টির বেশি হেলিকপ্টার আছে। ইমরান খানের অপেক্ষায় থাকা হেলিকপ্টারটিও এই উদ্ধার অভিযানে এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।