কলকাতা: নেতাজির (Netaji Subhas Chandra Bose) ১২৬তম জন্মদিনে আন্দামানের ২১ দ্বীপের নামকরণ করা হয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। আর তারপরই কলকাতার রেড রোডে (Red Road) নেতাজির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সেখান থেকে কেন্দ্রকে মনে করিয়ে দেন, নতুন করে এসব নামকরণের অর্থ নেই। তবে এত কিছুর পরেও নেতাজি সম্পর্কে জানার আগ্রহ যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই আজ নেতাজির জন্মদিনে তাঁর সম্পর্কে একনজের ৬টি তথ্য জেনে নেওয়া যাক –
১) সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম হয়েছিল ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ সালে বেলা ১২ টা বেজে ১০ মিনিটে। ওড়িশার কটকে বাবা জানকীনাথ বসু ও মা প্রভাবতী দেবীর ১৪ সন্তানের মধ্যে নবম ছিলেন সুভাষ। জানকীনাথ বসু একজন প্রসিদ্ধ আইনজীবী ছিলেন। সুভাষকে প্রথমে কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয়ান স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর বারো বছর বয়সে তিনি কটকের র্যাভেনশা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। তারপর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেন।
২) সালটা ১৯১৮, সে সময় স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল থেকে সামান্য দূরত্বে গড়ে উঠেছিল একটি তেলেভাজার দোকান। দোকানী লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ কলকাতার মানুষের সাধ্য মেটাতে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ীই তেলেভাজা বানাতেন তখন। পিঁয়াজী, আলু বড়া, ফুলুরি আর বেগুনির পসরা সাজিয়ে দোকানে বসতেন তিনি। এই দোকানেই যেতেন নেতাজি। পরবর্তীকালে যা বিপ্লবীদের গোপন ডেরা হয়ে উঠেছিল।
৩) তরুণ সুভাষের রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। তাঁর হাত ধরেই সুভাষ প্রথম প্রকাশ্য জনসভায় বক্তব্য রাখেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১৯৩৭ সালে তাঁর সেক্রেটারি এবং অস্ট্রেলিয়ান যুবতী এমিলির সঙ্গে বিয়ে হয়। এরপর ১৯৪২ সালে ২৯ নভেম্বর তাঁদের একমাত্র কন্যার অনিতা বসুর জন্ম হয়। বর্তমানে জার্মানিতে থাকেন নেতাজি-কন্যা অনিতা বসু পাফ।
৪) মহাত্মা গান্ধির আদর্শের সঙ্গে সহমত ছিলেন না নেতাজি। যদিও দুজনেরই দেশের স্বাধীনতাই লক্ষ্য ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির প্রবল চাপে ব্রিটিশরা এক অভাবনীয় পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। নেতাজি সেই পরিস্থিতিকে ব্যবহার করতে পারে ভেবে ব্রিটিশ সরকার ১৯৪০ সালের ৪ জুলাই সুভাষকে কলকাতায় গৃহবন্দী করে। কিন্তু সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ছদ্মবেশে ১৯৪১ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশ ত্যাগ করেন সুভাষচন্দ্র বসু।
৫) ১৯৪৩ সালে আজাদ হিন্দ ফৌজ নেতাজির নেতৃত্বে ইংরেজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ঠিক এর পরের বছর ভারতের কোহিমা ও ইম্ফলের কাছে ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল নেতাজির সেনা দল। ১৯৪৪ সালে আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের মাটি ইম্ফলে স্বাধীন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।
৬) ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইপেইতে একটি বিমান দুর্ঘটনার পরই নেতাজির আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই নেতাজির মৃত্যু এবং নিখোঁজ নিয়ে একাধিক রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে। সত্য উদঘাটনের জন্য একাধিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।