কলকাতা: জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha) ৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করল সিবিআই (CBI)। এর মধ্যে ৫টি বেসরকারি ও ৩টি সরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) রয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, ব্যাঙ্কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে জীবনের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার কথা।
বড়ঞার ধৃত তৃণমূল বিধায়কের বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট থেকে বহু টাকার লেনদেনের হিসাব পাওয়া গিয়েছে। তদন্তে নেমে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা জানতে পেরেছে জীবনের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির কথা। তারপর তাঁর সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, ৫টি বেসরকারি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৪টি অ্যাকাউন্ট মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) ও একটি বীরভূমের (Birbhum) সাঁইথিয়া ব্রাঞ্চের। সূত্রের খবর, বড়ঞা তৃণমূল বিধায়কের সাঁইথিয়ার সম্পত্তির বাজাবদর প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা। এছাড়াও বোলপুরের জমির মূল্য প্রায় ছয় কোটি টাকার কাছাকাছি। জীবনের স্ত্রী টগরীর নামেও প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, শুধু জীবনকৃষ্ণের নয় তাঁর স্ত্রী টগরী সাহার নামেও বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। সেই অ্যাকাউন্টগুলিও তথ্য খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা। মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি, অন্য জেলায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের নামে আরও কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন:Raju Jha | কয়লা মাফিয়া রাজু ঝাঁ খুনে পানাগড় থেকে গ্রেফতার ১
সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, জীবন ও তাঁর স্ত্রীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০০ কোটি ছাড়াতে পারে। মঙ্গলবার জীবনের স্ত্রীকে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়। তাঁকে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, বীরভূমের বিভিন্ন ব্যাঙ্কেও জীবনকৃষ্ণের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বীরভূমের সাঁইথিয়া, তালতোড়, তাতারপুর, বাঁধগোড়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদের আন্দিতে বিধায়ক ও তাঁর স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়া, জীবনকৃষ্ণের আর কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা সম্পত্তি রয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে সিবিআই।
শুধু নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নয়, গরু পাচার কাণ্ডেও (Cow Smugling Case) যোগ রয়েছে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha), এমনটাই দাবি সিবিআইয়ের (CBI)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, গরু পাচারের সঙ্গে সরাসরিই যোগ রয়েছে ধৃত তৃণমূল বিধায়কের (TMC MLA)। জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। অনুব্রতের গ্রেফতারের পর থেকেই সিবিআই স্ক্যানারে ছিলেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। বীরভূমে জীবনের একাধিক সম্পত্তির হদিশও মিলেছে। তদন্তকারীরা গরু পাচারে জীবনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছিলেন। সিবিআই সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম থেকে গরু মুর্শিদাবাদ হয়েই পাচার করা হত। এই গরু যখন জীবনকৃষ্ণের এলাকা দিয়ে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হত, তখন তিনিও সেখান থেকে টাকা তুলতেন বলে জানতে পেরেছে সিবিআই।