skip to content
Saturday, July 27, 2024

skip to content
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | ২০২৪-এ বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে?
BJP

Fourth Pillar | ২০২৪-এ বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে?

বিরোধীরা শুকিয়ে মরছে, নির্বাচন লড়ার ফান্ড তাদের নেই

Follow Us :

বিজেপির একটা লং টার্ম এজেন্ডা আছে, সেটা বিজেপির না বলে আরএসএস-এর বলাই ভালো। আরএসএস-এর ছাতার তলায় প্রত্যেক সংগঠন সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। প্রথম লক্ষ্য এক হিন্দু রাষ্ট্র, যেখানে হিন্দুত্বকে মেনে সবাইকে চলতে হবে। তাদের খেরোর খাতায় সাফ লেখা আছে, যারা এই দেশকে জন্মভূমি, পিতৃভূমি, কর্মভূমি এবং পূণ্যভূমি বলে মানেন তাঁরাই এই দেশের নাগরিক। সংবিধানে কী লেখা আছে সে নিয়ে কোনও তর্ক করবেন না কারণ আরএসএস নেতৃত্ব, ইদানিং তাদের মধ্যে বিভিন্ন প্রান্তে গজিয়ে ওঠা ইন্টেলেকচুয়াল, ক্রমাগত বিষ ছড়াতে থাকা মুখপাত্ররা পরিষ্কার বলেছে, সংবিধান তো একটা অজর অমর অক্ষয় কিছু নয়, এতবার সংশোধিত হয়েছে আবার হবে। কাজেই সংবিধানে নাগরিকত্বের যা ডেফিনেশন দেওয়া আছে তা বদলাতে কী লাগবে? লোকসভা রাজ্যসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, ব্যস। কাজেই তাঁদের ভাষায় এই দেশ যাঁদের বাবা মার জন্মভূমি, যাঁরা এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছেন, যাঁরা এই দেশে কাজ করে খান, মানে এই মাটিতেই উপার্জন করেন এবং যাঁদের দেবী দেবতা এই দেশেই আছেন, তাঁদের উপাসনালয় এই দেশেই আছে, তাহলে তারা এই দেশের নাগরিক। কাজেই প্রচলিত অর্থে কেবল হিন্দুই নয়, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ এমনকী আদিবাসীরাও এই দেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্য। কিন্তু যাঁরা মক্কা মদিনাকে বা বেথলেহেম, ভ্যাটিক্যান সিটিকে তাঁদের সর্বোচ্চ পূণ্যভূমি হিসেবে মনে করেন, তাঁরা এই দেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্য নন। মোদ্দা কথা হল, দেশের ২০ শতাংশ সংখ্যালঘু মানুষ দেশের নাগরিক নন। এটা তাঁদের কর্মসূচি, কাজেই তাঁরা রামমন্দির নিয়ে মাঠে নেমেছেন, হাতে আছে কাশী, মথুরা। তাঁরা চূড়ান্ত বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব বিল আনছেন, এগুলো সবই ওই প্রোগ্রাম মেনেই।

বা ধরুন এক ফেডারেল স্ট্রাকচার নয়, এক কেন্দ্রীভূত শাসন ব্যবস্থা, লোকসভা, রাজ্যসভা ইত্যাদি নয়, এক রাষ্ট্রপতি শাসিত দেশ, তাঁর হাতেই থাকবে সর্বোচ্চ ক্ষমতা, বাকি সব দুধুভাতু, এটা তাঁদের অন্যতম এজেন্ডা। কাজেই তাঁরা এক দেশ এক ভোটের স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের সরকারে একজনই আছেন ওই নরেন্দ্র মোদি, তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে তাঁদের রাজনীতি। বা ধরুন এক জঙ্গি জাতীয়তাবাদ, আমরাই সেরা, ঘর মে ঘুস কর মারেঙ্গে, ফলাফলও হাতেনাতে। একজন পড়শির সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো নয়, এক ছোট্ট দেশ মালদ্বীপ, সেও আমাদের বিরুদ্ধে, লঙ্কা, বাংলাদেশ বা নেপালের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আমাদের থেকে ভালো, পাকিস্তান চীনের কথা তো বাদই দিলাম। কিন্তু এসবই হল আরএসএস-এর আদর্শগত অবস্থান, যা বিজেপি সমেত আরএসএস-এর ছাতার তলায় থাকা প্রত্যেক সংগঠনের আদর্শ। কাজেই বিজেপি এই এজেন্ডাগুলোকে, এই ইস্যুগুলোকে ধরেই চলছে। এবং তার বাইরে তার অন্য এজেন্ডা হল ক্ষমতা ধরে রাখা, ক্ষমতার পরিধিকে বাড়ানো। ২৪ ঘণ্টা বিজেপির সর্বোচ্চ নেতা নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে গোটা দলের জন্যে কাজ করে যাচ্ছে, দেশে যতদিন একটাও বিরোধী রাজনৈতিক দল থাকবে, একজনও বিরোধী এমএলএ বা এমপি থাকবে, ততদিন এইভাবেই কাজ করবেন তাঁরা। এই সংসদীয় কাঠামোতে নির্বাচন লড়তে পয়সা দরকার, আর পয়সা মানে সেই কোটি কোটি কোটি টাকা এমনি এমনি আসবে না।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | বাজেট বলছে বিজেপি ২০২৪ জিতেই গেছে

বিজেপি এই ইলেকশন ফান্ডিংকে ম্যানেজ করার জন্য তিনটে ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রথম হল ইলেকশন বন্ডের যাবতীয় নিয়ম নিজেদের দিকে নিয়ে গেছে। গত ছ’ বছরে ৫২৭২ কোটি টাকার ইলেকটোরাল বন্ড বিজেপি পেয়েছে, কংগ্রেস পেয়েছে ৯৫২ কোটি। মানে ৫ টাকা বিজেপি পেলে কংগ্রেস এক টাকা পাচ্ছে। দ্বিতীয় ব্যবস্থা হল যে শিল্পপতি ব্যবসায়ীরা কংগ্রেস বা বিরোধী দলকে টাকা দেবে তাদের দরজায় সিবিআই বা ইডি চলে যাচ্ছে, মেসেজ ইজ লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। ওদিকে টাকা পাঠালে ব্যবসা বন্ধ হবে, জেলে থাকতে হবে। এরপরেও বিভিন্ন উপায়ে কিছু টাকা বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিরোধী দলগুলো জোগাড় করার চেষ্টা করছে, তাদেরকে তো নির্বাচন লড়তে হবে। এবং বলাই বাহুল্য সে সব উপায়ের বেশিরভাগটাই গোলমেলে, বেআইনি। সে সবের দিকে কড়া নজর রাখছে বিভিন্ন এজেন্সি, ইডি, সিবিআই ইত্যাদি। সামান্য কিছু পেলেও জেলে পুরে দাও, চোর চোর চোর, প্রচার তুঙ্গে। লালু চোর, তেজস্বী চোর, স্তালিন চোর, শরদ পাওয়ার চোর, উদ্ধব ঠাকরে চোর, অখিলেশ চোর, মায়াবতী চোর, হেমন্ত সোরেন চোর, মণীশ সিসোদিয়া থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল চোর, মমতা-অভিষেক চোর। খেয়াল করে দেখুন সঙ্গে নেই, তেমন বিরোধী নয়, আবার বিজেপিও নয়, ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক বা অন্ধ্রতে জগন রেড্ডিকে কিন্তু এই ব্রাকেটে রাখা হয়নি। তাঁরা সরাসরি বিরোধিতা করলে কিন্তু এতদিনে তাঁদের জেলে পোরা হত। এর ফলে একটা আন ইভেন প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হচ্ছে, অসমান লড়াই। বিজেপি কোটি কোটি টাকা ইলেক্টোরাল বন্ড পাচ্ছে, তাদের নির্দেশে টাকার থলি পৌঁছে যাচ্ছে দফতরে, ইডি বা সিবিআই নেই, ব্যবসায়ীরা তাঁদের টাকা দিয়ে নিজেদেরকেই ধন্য মনে করছেন। অন্যদিকে বিরোধীরা শুকিয়ে মরছে, নির্বাচন লড়ার ফান্ড তাদের নেই।

দ্বিতীয় অস্ত্র ধর্ম, রামমন্দির, মথুরা কাশীর জন্য হুঙ্কার, ইউনিফর্ম সিভিল কোডের নাম করে, সিএএ বা এনআরসির নাম করে আসলে সংখ্যালঘু মানুষদের ভয় দেখানো। মনে হতেই পারে এটাই সবথেকে কার্যকরী অস্ত্র, কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে যে এখনও দেশের হিন্দু জনসংখ্যার মাত্র ৫০ শতাংশকেই সঙ্গে পেয়েছে বিজেপি। ধরুন বিহারের মতো রাজ্যে এখনও মাত্র ২০ শতাংশ ভোট পায় বিজেপি। তৃতীয় অস্ত্র হল বিরোধীদের বিচ্ছিন্ন করো। সাম দান দণ্ড ভেদ সবকটা উপায়কে কাজে লাগিয়েই বিরোধীদের আলাদা করো, বিরোধী দলে ভাঙন আনো, বিরোধী দলের নেতাদের নিজেদের দিকে নিয়ে এসো। ধরুন গুজরাত, যা নাকি নরেন্দ্র মোদির রাজ্য, যা নাকি জনসঙঘের পুরনো জায়গা। সেখানেও হার্দিক প্যাটেলের মতো পাতিদার নেতা, যিনি কংগ্রেসে গেলেন শুধু নয়, টিম রাহুলের একজন হয়ে উঠলেন, দলিত নেতা অল্পেশ ঠাকোর, রাজু পারমার এখন বিজেপিতে। কংগ্রেসের টিম রাহুলের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, হিমন্ত বিশ্বশর্মা, আর পি এন সিং, মিলিন্দ দেওরা, অশ্বিনী কুমার, সুনীল ঝাকর, জিতিন প্রসাদ, অনিল অ্যান্টনি এখন বিজেপিতে। কেবল কংগ্রেস নয়, এ রাজ্যে তৃণমূলের তরুণ তুর্কি শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপির সবচেয়ে বড় ভরসা, মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডে বা অজিত পাওয়ার। প্রত্যেক দল থেকে ভাঙানো হয়েছে উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতাদের, এরাঁই হয়ে উঠেছেন বিজেপির বিরাট শক্তি।

জ্যোতিরাদিত্য না থাকলে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতাতেই আসত না। এ রাজ্যে শুভেন্দু অধিকারী সরে গেলে বিজেপি আবার ১৪-১৫ শতাংশ ভোটে নেমে যাবে, মহারাষ্ট্রে মিলিন্দ দেওরা সামনের লোকসভা ভোটে বড় ভূমিকা নেবেন। এবং কেবল দল ভাঙানো নয়, কারণ সেসব করেও শান্তিতে ছিল না বিজেপি। তাদের নিজেদের হিসেব বলছিল অঘটন ঘটে যেতে পারে। দক্ষিণে কর্নাটক, বিহার, মহারাষ্ট্র এবং বাংলা মিলিয়ে ৪০-৪৫টা আসন কমে গেলে নিজেদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা চলে যেতে পারে, বিরোধী জোট তৈরি হওয়ার ফলেই তাদের এই হিসেব নিয়ে মাথাব্যথা শুরু হয়েছিল। কাজেই ইন্ডিয়া জোট ঘমন্ডিয়া জোট, ও তো কেবল সুযোগসন্ধানীদের জোট, ওই জোটের মুখটা কে ইত্যাদি বলার পরেও তারা প্রথম সুযোগেই ইন্ডিয়া জোটকে ভাঙার চেষ্টা চালাচ্ছিল। পেয়ে গেল নীতীশ কুমারকে, বিজেপি ভালো করেই জানে যে নীতীশ কুমারকে দলে আনলে বিহারের মানুষ সেটা ভালভাবে দেখবেন না, তাঁরা ভালো করেই জানেন নীতীশ ফুরিয়ে যাওয়া এক রাজনৈতিক শক্তি, আপাতত বোঝা। বিহারে এই নীতীশকে নিয়ে আগের ফলাফল তো দূরের কথা, কাছাকাছিও যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তারা এই ভাঙনে আসকারা দিলেন, দেশজুড়ে একটা খবর ছড়িয়ে দিতে যে ইন্ডিয়া জোট ভেঙে গেছে, এরা তাদের হবু আহ্বায়ককেই ধরে রাখতে পারছে না, তারা আমাদের সঙ্গে কী লড়াই করবে। অর্থাৎ একটা ছোট লড়াই তাঁরা হেরে গেলেন, জেনে বুঝে হারলেন, আরেকটা বড় লড়াই জেতার জন্য। এটাই বিজেপি। মহারাষ্ট্র খানিক সামলেছেন, বিহারে নীতীশকে ভাঙানো হল। হেমন্ত সোরেন জেলে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল যে কোনও দিন জেলে যাবেন। এই বাংলায় টার্গেট দু’ নম্বর নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং নির্বাচনের আগে নিশ্চিত বড়সড় দু’ একজন তৃণমূল নেতাকে জেলে পাঠানো হবে। ১৯২৫-এ হিন্দুরাষ্ট্রের লক্ষ্য নিয়ে পথচলা শুরু করেছিল আরএসএস, তারা আজ তাদের লক্ষ্যের এতটা কাছে এসে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না, যতরকম পদ্ধতি আছে সব প্রয়োগ করেই তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা জিতে নিতে চায়। এবং সে লক্ষ্য খুব সোজা নয় সেটাও জানে। কিন্তু সেই লক্ষ্যপূরণ হলে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস অন্য কলমে লেখা হবে, এক অন্য ব্যবস্থা তৈরি হবে। প্রায় ২০০ বছরের ইংরেজ শাসনের পরে চার বছর ধরে দেশের যে সংবিধান তৈরি হয়েছিল, তার খোলনলচে পাল্টে যাবে। খুব বেশি কার্যকরী নয় আমাদের গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থা কিন্তু তবুও তো গণতন্ত্র আছে, সেসব উবে যাবে, যদি বিজেপিই আবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Amit Shah | এই সাংসদ কী এমন বললেন? অমিত শাহ তেতে গেলেন
00:00
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | সংসদে অভিষেকের এই বক্তব্য শুনেছেন? চর্চা চলছে সব জায়গায়
00:00
Video thumbnail
Amit Shah | এই সাংসদ কী এমন বললেন? অমিত শাহ তেতে গেলেন
11:32:36
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | সংসদে অভিষেকের এই বক্তব্য শুনেছেন? চর্চা চলছে সব জায়গায়
11:36:11
Video thumbnail
বাংলা বলছে | 'নীতি-বৈঠকে' বাংলা ভাগ নিয়ে সোচ্চার মমতা, সাংসদদের বৈঠকে বাজেট-অধিবেশনের ক্লাস নেত্রীর
10:28:41
Video thumbnail
Yogi Adityanath | ইউপি বিজেপিতে হইচই! দিল্লি গেলেন যোগী
11:32:41
Video thumbnail
Mamata Banerjee | কংগ্রেস আগে বললে ভালো হত! কেন এই কথা মমতার মুখে?
11:31:41
Video thumbnail
Narod Narod (নারদ নারদ) | জামালের বাড়িতে গোপন ট্যাঙ্কের হদিশ, উদ্ধার একাধিক নথি
11:05:51
Video thumbnail
BJP West Bengal | রাজ্যে গ্রেফতার বিজেপি নেতা, হুলস্থুল কাণ্ড
10:38:40
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | পথে নেমে বিরাট হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর! শুনুন কী বললেন
01:02:56