কলকাতা: বুধবার ইডি হেফাজতে আসেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Shantanu Banerjee) ঘনিষ্ঠ নিলয় মল্লিক (Nilay Mallick)। ইডি সূত্রের খবর, এই নিলয় শান্তনু বন্দোপাধ্যায় স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থায় ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মোটা অঙ্কের টাকা শান্তনুর বিভিন্ন কোম্পানিতে খেটেছে। সেই টাকা থেকে আবার শান্তনুর তৈরি করা বিভিন্ন সংস্থায় গিয়েছে বলে দাবি ইডির (ED)। যেহেতু নিলয় শান্তনুর স্ত্রীর সংস্থায় ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতেন, তাই তাঁকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে এদিন ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টসের নতি, ব্যাঙ্কের লেনদেন সংক্রান্ত নথি সহ অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার। ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত নতি নিয়ে হাজিরা ইডি আধিকারিকদের জেরার মুখে রয়েছেন নিলয়।
এদিক বুধবারই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া হুগলির তৃণমূল যুবনেতা শান্তনু বন্ধপাধ্যায়কে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির আধিকারিকেরা। কিন্তু শান্তনু আর অয়নের (Ayan Shill) বয়ানে সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না তদন্তকারী আধিকারিকেরা। ইডি সূত্রে খবর, তাই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্তা নেয়। এদিন প্রায় পাঁচজন ইডি আধিকারিক শান্তনু ও অয়নকে মুখোমুখি বসিয়ে কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
আরও পড়ুন: ChatGPT | কর্মক্ষেত্রে মানুষের জায়গা নেবে চ্যাটজিপিটি, ঝুঁকিতে হাজার হাজার পেশা
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে উঠে এসেছে ইডি আধিকারিকদের। জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া চলাকালীন বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং নতুন অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম উঠে এসেছে বলে খবর। ইতিমধ্যে সেই নামের তালিকা তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইডি। খুব শিগগিরিই তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি এত ওএমআর শীট কোথা থেকে এল এবং আর কারা কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে এবং কত টাকা কার কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল, সেই সবকিছু জানার চেষাটা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
অন্যদিকে দু’জনকে মুকোমুখু জিজ্ঞাসাবাদের পর আলাদা করে অয়নকে আরও বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে নতুন করে অয়ন ঘনিষ্ঠ যে শ্বেতা চক্রবর্তীর নাম উঠে এসেছে, তাঁর সঙ্গে অয়নের কী সম্পর্ক তাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইশঙ্গে শ্বেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেশ কয়েক দফায় মোটা অহ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে, সেই টাকার উৎস কী এবং ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে তাঁর সঙ্গে কত টাকা চুক্তি হয়েছিল এবং তার জন্য তাঁকে এখনও পর্যন্ত কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তাও জানতে চান আধিকারিকরা।
এর পাশাপাশি আরও জানা গিয়েছে, অয়ন একটি বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছিলেন শ্বেতাকে। সেই গাড়ি এখনও পর্যন্ত শ্বেতা ব্যবহার করেন। ওই গাড়ি কিনতে গিয়ে যে টাকা খরচ হয়েছিল, তা কী হিসেবে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল এবং কেনইবা এই বিলাসবহুল গাড়ি শ্বেতাকে দেওয়া হয় এমন না না প্রশ্ন করা হয় অয়নকে। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছে অয়ন। সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে খুব শিগগিরি শ্বেতা চক্রবর্তীকে তলব করতে চলেছে ইডি।