কলকাতা: ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ফের তৃণমূলে (TMC) নবীন-প্রবীণ ইস্যু তুলে ধরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। রবিবার ধর্মতলায় শহীদ দিবসের মঞ্চে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক দলে নবীন-প্রবীণ সমন্বয় এবং ভারসাম্যের উপর জোর দিলেন। তিনি বলেন, যাঁরা নতুন, তাঁদের ২১ জুলাইয়ের ইতিহাস, তৃণমূলের লড়াইয়ের ইতিহাস, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) লড়াইয়ের কথা জানতে হবে। আর পুরনোদের নতুনদের সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার জন্য মাঠে নামতে হবে। পুরনোদের অভিজ্ঞতা এবং নতুনদের উদ্যম, এই দুটি হল তৃণমূলের একই বৃন্তে দুটি ফুল।
লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব তীব্র আকার নিয়েছিল। অভিষেক এবং তাঁর অনুগামীরা নবীন প্রজন্মের উপর বেশি গুরুত্ব দেন। পক্ষান্তরে মমতা শিবিরের পাল্লা ঝুঁকেছিল প্রবীণদের দিকে। গত জানুয়ারি মাসে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক সভায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির একটি মন্তব্য ঘিরে দলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। তার কিছুদিন আগে অভিষেক দলের সংগঠন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিজের ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে মনোনিবেশ করার কথা জানিয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সেই প্রেক্ষিতেই রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন, আশা করি, অভিষেক দলের কাজে এগিয়ে আসবেন পিছিয়ে না থেকে। তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিষেক ঘনিষ্ঠ কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, অভিষেক এগিয়ে থাকবেন না পিছিয়ে থাকেবন, তা বলার রাজ্য সভাপতি কে। মমতা আমাদের নেত্রী। অভিষেক আমাদের সেনাপতি। এই দুজনের নেতৃত্বে দল চলবে। আর দলে বৃদ্ধরা আর কতদিন থাকবেন। ৭৪-৭৫ বছরের বৃদ্ধরা এখনও কেনও লোকসভা, বিধানসভার টিকিটের জন্য হাপিত্যেশ করে থাকবেন। এই সব বিতর্কের আবহেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের এক সভায় খোদ নেত্রী বলেন, রাজনীতিতে আবার বয়স কী। সৌগত রায়কে দেখিয়ে মমতা বলেন, এই যে সৌগতদা, প্রায়ই বলেন, আমার বয়স হচ্ছে। আমি সৌগতদাকে বলি, বয়স আবার কীসের বাধা। কুণালের মতো অনেক নেতাই সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ নেতাদের এবারও লোকসভা ভোটে টিকিটি দেওয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন। তবে নেত্রীর ইচ্ছেতেই শেষ পর্যন্ত তাঁরা দুজনেই টিকিট পান।
আরও পড়ুন: লোভ করবেন না, জন প্রতিনিধিদের হুঁশিয়ারি মমতার
এদিন অভিষেক মাত্র ২৪ মিনিটেই তাঁর ভাষণ শেষ করে দেন। অন্যান্যবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে সুদীপ, সৌগতদের ভাষণ দিতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এবার বক্তা তালিকায় তাঁরা ছিলেন না। মমতা ছিলেন মূল বক্তা। তিনি ছাড়াও ভাষণ দেন অভিষেক, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বসুনিয়া, বাগদার নতুন বিধায়ক মধুপর্ণা ঠাকুর, ঝাড়গামের জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু। মধুপর্ণা রাজ্য বিধানসভায় শাসকদলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যা। দুলালেরও বয়স বেশি নয়। সেই অর্থে কোচবিহারের সাংসদকেও প্রবীণ বলা চলে না। খাতায় কলমে ২১ জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশের আয়োজক যুব তৃণমূল। কিন্তু যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী এবং সাংসদ সায়নী ঘোষকে এদিন মঞ্চে সক্রিয় দেখা যায়নি। সভা পরিচালনার কাজ করেন আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
দেখুন বিস্তারিত: