পিছনে দলের সমর্থন না থাকলে যিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্যের নির্বাচনেও জামানত বাঁচাতে পারতেন না সেই সুখেন্দুশেখর রায়, তৃণমূলের সমর্থনে রাজ্যসভার সাংসদ, তিনি ঘরে বসে বসে চিমটি কাটছেন, দলের এখনকার স্ট্যান্ড মনে ধরছে না? পদত্যাগ করুন, তারপরে শ্যামবাজারে পাঁচমাথার মোড়ে বসে প্রতিবাদ করুন, কে বারণ করেছে? কিন্তু ওই যে নিজে নীতি নৈতিকতার ধার ধারেন না, অন্যকে নৈতিকতার পাঠ পরাতে যান। এরকম আরও অনেক আছে, কর্মক্ষেত্রে মহিলা সাংবাদিকরা ছিলেন ‘টাইম পাস মামণি’, তিনি এখন গুরুঠাকুর। যাঁরা নিজেরা বসে কথা বললে প্রতিটা শব্দে, হ্যাঁ প্রতিটা শব্দে বাছা বাছা খিস্তি দেওয়ার জন্য বিখ্যাত, সে সমস্ত গালাগালির প্রত্যেকটা নারী আর নারীর অঙ্গ নিয়ে, তাঁরা পাঁচমাথার মোড়ে প্রতিবাদে প্রতিশোধে প্রতিরোধে ব্যারিকেড গড়ে তোলার কথা বলছেন। হিপোক্রেসি আমাদের সমাজের অঙ্গ, ঝুল ঝাড়ার মতো হিপোক্রেসি ঝাড়ার যদি কোনও যন্ত্র থাকত, তাহলে প্রতিটা মানুষের কেজি কেজি হিপোক্রেসি ঝাড়ার পরেও থেকে যেত বেশিরভাগটাই। আবার এটাও সত্যি আন্দোলনে নেমেছেন বহু এমন মানুষ যাঁরা সত্যি আলোড়িত, যাঁরা সত্যিই কষ্ট পাচ্ছেন, যাঁরা এক নৃশংস ধর্ষণ আর হত্যার বিচার চাইছেন। সব মিলিয়ে এই আন্দোলনের তিন ভাগ, প্রথম ভাগ বার বার মানুষের প্রত্যাখ্যানের পর হতাশ হঠাৎ দেখতে পেয়েছেন আশার আলো, তাঁদের জান কবুল চেষ্টা হয় ঘুরে দাঁড়ানোর নয় গদিতে বসার। দুই হলেন সেলফি, গ্রুপফি, চলো যাই রাত জাগি, আমিও পথে ছিলাম, বিভিন্ন চাহিদা না মেটার খিদে নিয়ে হঠাৎ এক সামাজিক আন্দোলনের ডেকোরেটিভ পিস। আর শেষ গোষ্ঠী ওই যে সত্যিই কষ্ট পাচ্ছেন, ব্যথা পাচ্ছেন, বিচার চাইছেন, পথে নেমেছেন। আপনি এই তিনভাগের কোন ভাগে তা আমি বলার কে? আপনারা নিজেরাই ঠিক করুন।
কিন্তু এসবের মধ্যে ওই অধুনা বিদ্রোহী সুখেন্দু শেখর রায় নিজেকে যথেষ্ট শিক্ষিত এবং প্রতিবাদী হিসেবে প্রমাণ করার জন্যই কখনও মিছিলে যাচ্ছেন, কখনও বাস্তিল দুর্গের কথা বলছেন। আবার সেদিন দেখলাম আর্টিকল ২১, সংবিধানের মৌলিক অধিকারের কথা বলেছেন। আজকের আলোচনার সূত্রপাত ওইখান থেকেই। হ্যাঁ, সংবিধান আমাকে ফ্রিডম অফ স্পিচ দিয়েছে, আমাকে যে কোনও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক অধিকার দিয়েছে, আছে তো এসব অধিকার। কিন্তু ওই সংবিধানেই নাগরিকের কিছু দায়িত্বের কথাও লেখা আছে। আর সংবিধানেরও বাইরে কিছু নৈতিক দায়িত্বের কথা আমরা সব্বাই জানি। তো সুবিধেবাদী ধান্দাবাজেরা কখনই সেই নৈতিক দায়িত্বের কথা বলে না, বলবেও না। কাজেই তৃণমূলের সমর্থনে রাজ্যসভাতে গেলেন আজ যদি সেই দলের কাজ পছন্দ না হয় তাহলে ওই পদটা ছেড়ে জ্ঞান দিন স্যর, একথা বলার কোনও মানেই হয় না। এসব ক্ষেত্রে কানে দিয়েছি তুলো, পিঠে বেঁধেছি কুলো গোত্রের লোকজনেরাই এসব করেন। কিন্তু ওই সংবিধান? আপনার কথা বলার অধিকার আছে, নিজের ভাবকে প্রকাশ করার মৌলিক অধিকার তো আপনাকে সংবিধান দিয়েছে, কিন্তু তা কি নিরঙ্কুশ? আপনি যা খুশি তাই বলতে পারেন নাকি? আপনি যাকে খুশি তাকে নিয়েই আপনার ইচ্ছে মতন কথা বলতে পারেন? না, সংবিধানে তেমন নিরঙ্কুশ অধিকারের কথা বলা নেই। আপনি আন্দোলন করবেন? করুন না, তা যেন অন্যের অসুবিধের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, হ্যাঁ, এটাই হল সংবিধানের সেই জাস্টিফায়েড রেস্ট্রিকশন, অধিকার দেওয়া আছে, কিন্তু তার কিছু যুক্তিসম্পন্ন বিধিনিষেধও আছে। আপনার মনে হলেই আপনি ১০ জনে মিলে মাঝরাতে গিলে লে গিলে লে বলে নেত্য করতে পারেন না।
কিন্তু এরকম একটা ঘটনার প্রতিবাদ? নিশ্চয়ই হবে। কিন্তু সেই প্রতিবাদও একটা সময়ের পরে আপনাকে করতে হবে ওই জাস্টিফায়েড রেস্ট্রিকশনকে মাথায় রেখে। এক ধর্ষণ এক হত্যার পরে রাজ্যের পুলিশ তদন্ত শুরু করে, তারা কিছু তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে একজনকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করে ধরেছে। কিন্তু সরকার, সরকারের মাথায় থাকা মুখ্যমন্ত্রীর কিছু কথায়, কিছু পদক্ষেপে, প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপে মানুষের মনে হয়েছে যে ফাউল, ফাউল গেম চলছে, আমাদের তিলোত্তমার ওপর ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার হচ্ছে না, সঠিক বিচার হচ্ছে না। এরকমটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়, কাজেই তদন্তের ভার গেল সিবিআই-এর কাছে। কলকাতা পুলিশ রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে চলে, চলবে, এটাই সাধারণ ধারণা, ঠিক সেরকম সিবিআই যে দিল্লির মোদি-শাহের নির্দেশ মেনে চলে বা চলবে তাও তো সবাই জানেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এবং সিবিআই-এর কাছে মামলা যাওয়ার পরে শুভেন্দু অধিকারী, অধীর চৌধুরী, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও মানুষজন মনে করলেন বিচার মিলিবে। বেশ। এবং তাঁরা প্রত্যেকেই বিচারটা চাইছেন শ্যামবাজারের মোড়ে, ধর্মতলায়, যাদবপুরে। এখানেই জাগতে রহো, রাতজাগা দুটি চোখ বিচারের অপেক্ষায়। এখন প্রশ্ন হল সিবিআই এই ধর্ষণ আর হত্যা মামলাতে ঠিক কী তদন্ত করবে? ১) ধর্ষণ খুন কে বা কারা করেছিল? ২) যদি কেউ বা কারা ধর্ষণ আর এই খুনের প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করে থাকে তাহলে ঠিক কী কী প্রমাণ লোপাট হয়েছে আর কারা কারা সেই প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করেছে অংশ নিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা। চিফ জাস্টিস ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় নাকি অসুস্থ, তাই ৫ তারিখে আদালত বসেনি, কবে বসবে? ৯ সেপ্টেম্বর। মানে ট্রেন একদম ঠিকঠাক লাইনে তার নিজের ছন্দে চলা শুরু করেছে। ৯ তারিখ, ১ মাস পরে আমাদের আবেগ, আমাদের ন্যায়ের জন্য অঙ্গীকার, আমাদের পবিত্র ক্রোধ ইত্যাদির এক অগ্নিপরীক্ষার শুরুয়াত।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | এখনই নির্বাচন হলে জিতবে কিন্তু সেই তৃণমূল
যাঁরা এই আগুনে নিজেদের রুটি সেঁকে নিতে চান সেই রুদ্রনীল ঘোষ বা শুভেন্দু অধিকারী বা অধীর চৌধুরী বা মহম্মদ সেলিমদের কথা বাদ দিলাম, তাঁরা সাঝা চুলহাতে রুটি সেঁকে খান আজ নয় বহুদিন। কিন্তু সব মানুষ, সব প্রতিবাদীরা তো তেমন নয়, তাঁদের এই অগ্নিপরীক্ষা পার করতে হবে দাঁতে দাঁত চেপে। লড়ে যান, এ লড়াই জিততে হবে। কিন্তু সেখানেও তো ক্যাভিয়েট আছে। কারা আছে আপনার পাশে? তারা ফিফথ কলামিস্ট নয় তো? ভিড়ে মিশে থাকা নেকড়ে বা হায়না? মন্দার বোস জানতেন না চায়না ছাড়া, আমাদের দেশেও হায়নারা আছে। নাকি নারী অবমাননার বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে? নাকি জেন্ডার ইকুয়ালিটির লড়াই হচ্ছে? তাহলে এই জানোয়ারেরা কারা যারা এক অভিনেত্রী যিনি সেই ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান জানাতে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন ওই প্রতিবাদ মঞ্চে তার গাড়ির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল? কারা এরা? আন্দোলন কি কারও বাবার সম্পত্তি নাকি? আন্দোলনের ঠিকাদারি নিয়েছে কে? ওই শ্যামবাজারের এক জায়গার ছবি দেখুন, এক দলের পতাকা সম্মিলিত করতালি দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে, এবং এরপরে প্রতিক্রিয়া হয়নি, এটাই তো অস্বাভাবিক। তার মানে এই পবিত্র ক্রোধের পাশেই রয়েছে সেই হায়নারা যাদের এজেন্ডা আলাদা, যা শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির জন্য মুখ থেকে লাল পড়ছে আর ভাবছেন আহা কেন ওই পতাকা জ্বলার সঙ্গে সঙ্গে কিছু মাথাগরম তৃণমূলিরা ঢুকে পড়ল না, আহা তারপরে তো মম চিত্তে নিতি নৃত্তে তা তা থৈ থৈ। কিন্তু হয়নি। হ্যাঁ, ১৪ তারিখে বাংলার ৩৫০-র মতো জায়গাতে হয়েছিল রাত দখলের জমায়েত, ৪ তারিখে সেটা কমে ১৩০টার মত জায়গাতে হয়েছে, কমেছে কিন্তু প্রতিবাদ চলছে। খুব সামান্য একটা জায়গাতে মাথাভাঙায় একটা ঘটনা ছাড়া কোনও ঘটনা নেই।
এই বিরাট আন্দোলনের বর্শামুখে আছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা, এই ডাক্তারেরা দেখেছেন তাঁদের এক সহকর্মীর ক্ষতবিক্ষত দেহ, দেখেছেন ধর্ষিতা মৃতা তাঁদের বন্ধুকে, কাজেই তাঁরাই যে থাকবেন এই আন্দোলনের পুরোভাগে তা তো স্বাভাবিক। এবং এক হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিক্রিয়া তো স্বরলিপি মেনে হয় না, কোনও ক্ষেত্রেই হয় না, এখানেও হয়নি, তাঁরা বন্ধ রেখেছিলেন তাঁদের কাজ। তারপর তদন্ত গেছে সিবিআই-এর কাছে, মামলা গেছে সুপ্রিম কোর্টে, আরজি করে এসেছে সিআইএসএফ, তাঁরা রাজপথে নেমেছেন, আন্দোলন করেছেন, প্রতিটা প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁদের এবার কাজে ফিরুন বলা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, তাঁরা ফিরছেন না। আচ্ছা কারা এই জুনিয়র ডাক্তার, তাঁরা এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ? এই জুনিয়র ডাক্তারেরা কিন্তু ইনটার্ন নয়, তাঁরা হলেন ট্রেনি, এনারা কন্ট্রাক্ট বেসিসে চাকরি করেন, এনাদের কেউ ডেকে আনেননি, এনারা আবেদন করার পরে এই চাকরি দেওয়া হয়েছে। যারা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করছেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল মোতাবেক তারা পুরো ৩ বছর ক্লিনিক্যাল কাজ না করলে completion certificate পাবেন না। বছরে ছুটি ১৫ দিন। দরখাস্ত করতে হয়। completion certificate না পেলে পরীক্ষা দিতে পারবেন না। তাঁরা ধর্মঘট করছেন, সইও করছেন, জানতে চাইছি? তিন বছরের চুক্তিতে এঁদের বেতন যথাক্রমে ৪২০০০, ৫২০০০ ও ৭৪০০০ টাকা। ১৯৮৬ সালে যা ছিল ৫০০, ৫৫০, ৬৫০ টাকা। সিনিয়র ডাক্তাররা ৪-৫ ঘণ্টার বেশি কোথাও থাকেন না। তাঁরা অনেকেই বেশ বয়স্ক। এই জুনিয়র ডাক্তারেরা রোগীকে পরীক্ষা করে তার যাবতীয় অসুবিধে বুঝে নিজের এক সিদ্ধান্ত সিনিয়রকে জানান, সিনিয়রা সেটাকেই বহাল রাখেন, বা কখনও কখনও পরিমার্জন করেন। তাছাড়া এই সিনিয়রদের অনেকের বাইরে চেম্বার আছে, সেখানে রোগী দেখার তাড়া থাকে। এনারা খানিকটা স্পেশ্যালিস্ট-এর ভূমিকা নেন।
একটা কথা শুনছি যে জুনিয়র ডাক্তারেরা থাকছেন না, সিনিয়াররাই সব সামলে নিচ্ছেন, তাহলে এই বিশাল সংখ্যক জুনিয়র ডাক্তারদের রাখা হয় কেন? কোন কারণে? আসলে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় জুনিয়র ডাক্তারেরা একটা বিরাট ভূমিকায় থাকেন, আছেন। তাঁদের ধর্মঘটের ফলে কী হচ্ছে? শুধু জরুরি বিভাগে কিছু রোগী দেখা হচ্ছে। তাও অনেক কম। ভর্তি হচ্ছে না। অপারেশন বা ক্রিটিক্যাল ডেলিভারি হচ্ছে না। কলকাতার সব মেডিক্যাল কলেজে প্রায় ১০০০০ শয্যা আছে। তার মধ্যে ৮৫০০ খালি। এখনও পর্যন্ত ৭০০০ অস্ত্রোপচার বাতিল হয়েছে। তাঁরা গেছেন বেসরকারি নার্সিং হোমে। জুনিয়র ডাক্তারেরা নাকি টেলিমেডিসিন চালু করেছেন। বলে রাখি টেলিমেডিসিন হাসপাতালে চিকিৎসার বিকল্প নয়। করোনার সময় বিশেষ পরিস্থিতিতে বা দুর্গম এলাকায় চলতে পারে। এখানে রোগী দেখা, রক্তপরীক্ষা, এক্স রে, ক্রিটিক্যাল রোগী (trauma, stroke, heart attack) কিছুরই চিকিৎসা সম্ভব নয়। এবং সে ক্ষেত্রে ওষুধ কিনে খেতে হবে, গরিব মানুষেরা হাসপাতালে আসে ফ্রি ওষুধের জন্যও। এমনকী পিজি র পাশে trauma care center এও রোগী ভর্তি হচ্ছে না। ১ থেকে ৮ আগস্ট এসএসকেএম-এ মোট অপারেশন হয়েছিল প্রায় ১০০০। কিন্তু ৯ থেকে ১৬ আগস্ট সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮০। আরজি করে এই হিসাব ৫৫৬ বনাম ২১২, মানে ৫৫৬টা হয়, হয়েছে ২১২টা। তাহলে সেগুলো কি হচ্ছে না? হলে কোথায় হচ্ছে? বলছি তার আগে শুনুন আরজি করে আউটডোরে রোগী কমেছে ৭০ শতাংশ। এই রোগীরা যাচ্ছেন, মানে যাঁদের সামান্য ক্ষমতা আছে, বাঁচার জন্য ঘটি বাটি বেচে তাঁরা যাচ্ছেন প্রাইভেট নার্সিং হোমে, যেখানকার ডাক্তারবাবুরা, আদর্শবান, দেড় দু’ হাজার টাকা ফিজ নিয়ে রোগী দেখার পরেও সমাজ ও দেশের স্বার্থে ইউটিউবে রাজনীতি চর্চা করে থাকেন। কাজেই এই সুযোগে ব্যবসা বেড়েছে নার্সিং হোম ও কর্পোরেট হাসপাতালে। বাংলাদেশের রোগী আসা বন্ধ, বুন ইন ডিসগাইজ এক ধর্ষণ আর হত্যা তাঁদের অভাব মিটিয়ে দিচ্ছে। সবমিলিয়ে এই আন্দোলনের মূল ইস্যুতে সব্বাই একমত হলেও আন্দোলনের আজকের চেহারা ক্রমশই এক নৈরাজ্যের দিকে চলেছে, ডাক্তারবাবুরা কাজে যোগ দেবেন না, রাস্তা অবরোধ করে রোজ আন্দোলন চলবে, বিচার হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে, তদন্ত করছে সি বি আই আর আন্দোলন হবে এই কলকাতায়, সাধারণ মানুষের কোনও অধিকারই কি তাদের অধিকার নয়? সেই মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্ত মানুষজনদের কত নানান আমোদের ব্যবস্থা আছে, আন্দোলন সেরেই চলে যাবেন মালদ্বীপ, কিন্তু পুজোর ওই চারটে দিন যে রোলের দোকান দেয়, তার মুখ কালো, হাতিবাগান, গড়িয়াহাটের হকারদের মুখ কালো, তাদের অধিকার অধিকার নয়?