1
2
3
4
5
6
7
8
9
10
11
12
K T V Clock
A lady with a lamp I see...
Florence Nightingale | আজও হাতে আলো নিয়ে হেঁটে চলেছেন ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published by:  শুভাশিস মৈত্র
  • Update Time : 12-05-2023, 2:19 pm

ব্রিটিশ লেখক ‘লরা ই রিচার্ডস’ ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের জীবনী শুরু করেছেন একটি গল্প দিয়ে। সেটা এরকম। সময়টা ১৮৫৪-৫৫ সাল হবে। তখনও ক্রিমিয়ার যুদ্ধ (১৯৫৪-৫৬) চলছে। যে যুদ্ধে একদিকে ছিল ব্রিটেন-ফ্রান্স- তুরস্ক এবং সার্দিনিয়া অন্য দিকে রাশিয়া। এক সন্ধ্যায় লন্ডনের একটি বাড়িতে বেশ কয়েক জন যুদ্ধ ফেরত সেনা অফিসার নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন। তাঁরা যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে করতে একজন বললেন, এই যুদ্ধ তো আজ হোক বা কাল শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু এই যুদ্ধের কোন স্মৃতিটা দীর্ঘকাল মনে থেকে যাবে? ঠিক হল, প্রত্যেকে একটা কাগজে লিখবেন তাঁর মনের কথা। লিখলেন সবাই। তার পর সবার কাগজ এক জায়গায় করার পর যা ঘটল, তাতে সবাই হতবাক। কারণ প্রত্যেকেই লিখেছেন একটিই নাম। ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল।

ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের কাজের কথা বলার আগে একটু অতীত বলে নেওয়া ভাল। নাইটেঙ্গেলের বাবা উইলিয়াম নাইটেঙ্গেল উনিশ শতকের গোড়ায় সস্ত্রীক ইতালিতে থাকতেন। যখন তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্ম হল তখন তাঁরা নেপলস শহরে। নেপলসের প্রাচীন নাম পার্থেনোপে, তাই তিনি সেই শহরের নাম অনুসারে ছেলের নাম রাখলেন পার্থেনোপে। এর দু’বছর পর যখন তাঁরা ইতালির  ফ্লোরেন্স শহরে,  তখন এক কন্যা সন্তানের জন্ম হল। ফ্লোরেন্স শহরের নামেই সেই ছোট্ট মেয়েটির নাম রাখা হয়েছিল ফ্লোরেন্স। নাইটেঙ্গেল ছিল উপাধি। জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই অবশ্য নাইটেঙ্গেল পরিবার পাকাপাকি ভাবে চলে এসেছিল ইংল্যান্ডে।

আরও পড়ুন: IIT Kharagpur | আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্র মৃত্যুর মামলায় একক বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য 

ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলই আধুনিক নার্সিং-এর জন্মদাত্রী। আধুনিক নার্সিং এবং ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল, এই দুটো কথা এখন সারা পৃথিবীর কাছে সমার্থক। পৃথিবীর চোখে তিনি এক আইকন, যাকে বলা হয় ‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’। ক্রিমিয়ার যুদ্ধে আহত সেনাদের শুধু ধাধুনিক সেবা দিয়ে তিনি মৃত্যুর হার ব্যপক ভাবে কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। মনে রাখতে হবে তখনও অ্যাণ্টি বায়োটিক আবিষ্কার হয়নি। প্রথম অ্যান্টি বায়োটিক অর্থাৎ পেনিসিলিন আবিষ্কার হয় ১৯২৮ সালে। ১৮৫৪ সালে ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ৩৮ জন নারী-সহকর্মীকে নিয়ে  স্কুটারি (বর্তমান নাম উসকুদর, ইস্তাম্বুল) ব্যারাক হাসপাতালে ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল শুধু সেবা-যত্ন আর পরিচ্ছনতা দিয়ে সংক্রমণ ঠেকিয়ে যুদ্ধে আহত বহু ব্রিটিশ সেনার প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন। তখন অপরিছন্নতার জন্য অনেক আহত সেনা মারা যাচ্ছিলেন কলেরায়। কলেরার ভ্যাকসিন আবিষ্কার হতে তখন প্রায় ৩০ বছর বাকি। ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল এবং তাঁর সহকর্মীদের পরিচর্যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়,  আহত সেনাদের সুস্থ হয়ে ফিরে আসার হার এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে তা নিয়ে সে দেশের খবরের কাগজে লেখালেখিও শুরু হয়। লেখা শুরু হয় ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলকে নিয়ে। ব্যারাক হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে গভীর রাতে আহত সেনারা নিয়মিত দেখতেন, একটা বাতি হাতে ধীর পায়ে ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল প্রত্যেকের পাশে এসে কিছুক্ষণ করে দাঁড়াচ্ছেন। ওষুধ ছাড়াও মানবিক স্পর্শও যে রোগীকে কিছুটা আরাম দেয়, সেটাও যে নার্সিং-এর অঙ্গ,  তা-ও শেখালেন ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল।  মানুষের চোখে তিনি হয়ে উঠেছিলেন প্রায় ইশ্বরের মতো।    

রাতে বাতি হাতে ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের রোগীদের ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ানোর কথা যখন টাইমস সংবাদ পত্র লিখল, তা পড়ে আমেরিকান কবি ‘হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ লঙফেলো’ লিখলেন ‘সান্টা ফিলোমেনা’ নামের কবিতা, যে কবিতায়  অমর হয়ে আছেন ‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’। অমর করে রাখলেন ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলকে। যে  দীর্ঘ কবিতা চারটি  পংক্তি—

‘’Lo in the house of misery

A lady with a lamp I see

Press through the glimmering of gloom

And flit from room to room. ‘’

Tags : A lady with a lamp I see Florence Nightingale ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল

0     0
Please login to post your views on this article.LoginRegister as a New User

শেয়ার করুন


© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.