Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeলাইফস্টাইলInternational Tea Day | বঙ্গ জীবনের অঙ্গ, বাঙালি আজও তুফান তোলে চায়ের...

International Tea Day | বঙ্গ জীবনের অঙ্গ, বাঙালি আজও তুফান তোলে চায়ের ঠেকে

Follow Us :

‘বারান্দায় রোদ্দুর, আমি আরাম কেদারায় বসে দু’পা নাচাই রে, গরম চায় চুমুক দিই, আমি খবরের কাগজ নিয়ে বসে পাতা ওল্টাইরে’, আজ বাঙালির তুফান তোলার দিন। বাজারের পথের ঠেকে, সকালে খবরের কাগজ পড়তে পড়তে, অফিসের ব্রেকে, কাজের শেষে সান্ধ্য আড্ডায় কিংবা তাসের ঠেকে যে পানীয় ছাড়া বাঙালির একদম চলে না আজ সেই চায়ের দিন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঙালিও এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু চায়ের মাহাত্ম্য একফোঁটাও কমেনি। ইংরেজি ‘টি’ শব্দটির উৎস আসলে চীনা ভাষা। চীনা ভাষায় তেতো গুল্মকে বলা হতো ‘টেয়’। প্রাচীন ভারতে চা এসেছিল চৈনিক পর্যটকদের ও বণিকদের হাত ধরে। ইংরেজরা এই দেশে আসার পর ভারতের চা শিল্পের বিকাশ ঘটে। যে গাছ একসময় বুনো হিসেবে সবার চোখের আড়াল হয়ে গিয়েছিল সেই গাছই পরে আন্তর্জাতিক বাজারে কদর পায়। সেই সূত্রেই চায়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল ‘বুদ্ধিজীবী’ বাঙালির। লোকে বলে এক কাপ চা গলায় না ঢাললে বাঙালির নাকি বুদ্ধি গজায় না। আজ আন্তর্জাতিক চা দিবস। পরোক্ষে বলা যায়, চা-পেয়ে বিপ্লবী বাঙালির কাছে তুফান তোলার দিন।

পরীক্ষার সিলেবাসে প্রবন্ধ লিখতে হত ‘দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা’। ঠিক সেই ভাবেই আমাদের রোজকার জীবনে চায়ের ভূমিকা এতটুকু কম নয়। চা আসলে বাঙালির নেশা। সকালে চোখ খুলতেই বাঙালির প্রথম চাহিদা থাকে এক কাপ চা। অনেকের তো আবার চা না খেলে পেট পরিষ্কারই হয় না। এরপরই ধরুন, বাজারের থলে হাতে নিয়ে যখনই বের হন বাড়ির দাদু-বাবা-কাকু-জেঠুরা, ঠিক তখনই পাড়ার চায়ের ঠেকে খবরের কাগজের শিরোনাম নিয়ে শুরু হয়ে যায় চর্চা। আগের দিনের খেলার বিশ্লেষণ কিংবা রাজনীতির কচকচানি নিয়ে চলে তুমুল বিতর্ক। সঙ্গে থাকে সেই চা। অফিসে সহকর্মী কিংবা নিজের সাঙ্গোপাঙ্গের সঙ্গে অফিস পলিটিক্স কিংবা একটু ফুরসত খুঁজতে যে অজুহাত কাজে লাগে সেটাও এই চা। আবার অফিস ফেরত তাসের ঠেক কিংবা আড্ডার ঠেকেও চায়ের কাপে তুফান তোলে বাঙালি।

আরও পড়ুন: Madan Mitra | মদন মিত্রের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করল এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ

একথা অনস্বীকার্য যে, বাঙালি যতদিন থাকবে, ততদিন চা থাকবে। ততদিন চায়ের কাপে তুফান উঠবে। যুগ পাল্টাচ্ছে, সাদামাঠা চায়ের ঠেকের চল বন্ধ হয়ে এখন এসেছে ক্যাফে। কিন্তু, ক্যাফের সেই চাকচিক্য থেকে বেরিয়ে এসেও যুবসমাজ ওই চায়ের ঠেককেই যেন আপন করে নিয়েছে। তাই তো সন্ধের দিকে শহরের বিভিন্ন চায়ের দোকানে দেখা যায় থিকথিকে ভিড়। নতুন প্রজন্মের বাঙালি ছেলে-মেয়েরাও যে খেলা, রাজনীতি নিয়ে চর্চা করে, তা বোঝা যায় সেই সমস্ত চায়ের ঠেকে। এই নতুন প্রজন্মের ছেলেদের চা প্রীতি যে কতটা তা বোঝা যাবে, কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের পাশে এক জনপ্রিয় চায়ের দোকানে গেলে। রাত দুটো, তিনটে, চারটে! ভিড় লেগেই রয়েছে। এই প্রজন্মের যুগলরাও যেন কফি ডেট থেকে ধীরে ধীরে এই আড়ম্বরহীন চায়ের দিকেই ঝুঁকছে। প্রেম বিনিময় করে ‘এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই’ গানে।

মাথা ব্যথা, একরাশ ক্লান্তি, কিংবা অতিথি সেবাতেও এই চা-কেই পাথেয় করে চলেছে বাঙালি। আবার বাঙালি ‘দীপু দা’-র দার্জিলিং-এ ঘুরতে গেলে পাহাড় থেকে চা-ও নিয়ে আসে ভালোবেসে। শেষে এটুকু বলা ভাল, শীতকালে কফির প্রচলন বাড়লেও বাঙালির চা ভালোবাসা। ওই যে একটা সংলাপ আছে না, ডাল-ভাত আর বিরিয়ানির মধ্যে তফাতটা বুঝতে হবে। একটা নেসেসিটি, অপরটা লাক্সারি।  

RELATED ARTICLES

Most Popular