কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ভোট সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টা বনধের (WB BJP Bandh) সমর্থনে ঘাটালে কাঁচা বাঁশ নিয়ে পথে নামল বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা (West Bengal BJP worker)। জোর করে দোকানপাট, ব্যাঙ্ক বন্ধ করল বিজেপি। তাদের বেশিরভাগের হাতে ছিল কাঁচা বাঁশ। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার গৌরা এলাকায় ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে শামিল হয়। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চলার ফলে রাজ্য সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে আসে দাসপুর থানার পুলিস।

ঘাটাল মহকুমা আদালতে দলের পতাকা হাতে ঢোকার চেষ্টা করে বিজেপি কর্মীরা। প্রবেশপথে পতাকা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখায়, যাতে কর্মীরা ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।
কয়েকদিন আগেই দলের কর্মীদের কাঁচা বাঁশ নিয়ে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সোমবার বনধ করাতে গিয়ে সেই সমস্ত বিজেপি কর্মীদের হাতে কাঁচা বাঁশ দেখা গিয়েছে।

অপরদিকে, মেদিনীপুর শহর থেকে সরকারি বাস স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করলেও বেসরকারি বাস কিছুটা কম ছিল। নিত্যযাত্রীরা অনেকেই যানবাহনের জন্য কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন।
দুর্গাপুর এসবি মোড়ে অবরোধের চেষ্টায় ছিল বিজেপি। দুর্গাপুর বাজার দিয়ে মিছিল করে আসার সময় সেখানে আটকে দেয় পুলিস। পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় ২৫ জন বিজেপি কর্মীকে।

এদিন বেলা বাড়তেই পানাগড় বাজারে বনধের সমর্থনে একটি মিছিল এসে চৌমাথা মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে। মিছিল ও অবরোধে ছিলেন বর্ধমান সদরের বিজেপির জেলা সভাপতি রমন শর্মা। পানাগড়ের চৌমাথা মোড়ে আগে থেকেই মোতায়েন ছিল কাঁকসা থানার বিশাল পুলিস। যদিও পথ অবরোধের জেরে যানজটের সৃষ্টি হয়। কাঁকসা থানার পুলিস বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। জোর করে রাস্তা অবরোধের জন্য ১০ জন বিজেপি কর্মীকে আটক করে পুলিস।
আরও পড়ুন WB BJP Bandh: বিজেপির বনধ ব্যর্থ দক্ষিণবঙ্গে, জনজীবন স্বাভাবিক
বনধ হলেও সেইরকম প্রভাব পড়েনি শিল্পাঞ্চলে। বনধের সমর্থনে আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্নপুরের ত্রিবেণী মোড়ে বিজেপি সমর্থকরা রাস্তায় বসে পড়ে। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। সেই মুহূর্তে পুলিস এসে বিজেপি সমর্থকদের আটক করে হিরাপুর থানায় নিয়ে যায়। হিরাপুর থানায় বনধ সমর্থনকারীদের নিয়ে আসার পর থানার ভেতরে তারা স্লোগান দিতে থাকে।

অন্যদিকে, একই ঘটনা ঘটে আসানসোলের গির্জা মোড়ে। তবে বনধের কোনও প্রভাব পড়ল না শিল্পাঞ্চল আসানসোলে। সকালের দিকে প্রতিদিনের মতোই রাস্তাঘাট কিছুটা ফাঁকা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সচল হয়ে ওঠে শিল্পাঞ্চল। সকাল থেকেই রাস্তায় সাধারণ মানুষ কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ার সঙ্গে যান চলাচলও সচল হয়। পুলিসি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

এছাড়াও রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, কুলটি অঞ্চলে জনজীবনে কোনও প্রভাব পড়েনি। এককথায় মানুষ প্রত্যাখ্যান করে বনধকে। সকাল থেকেই সাড়া পড়ল না পুরুলিয়াতেও। সকাল থেকেই স্কুল, হাটবাজার, দোকানপাট খোলা ছিল। জনজীবন স্বাভাবিক। বেসরকারি বাস রাস্তায় কম দেখা গিয়েছে। তবে সরকারি বাস সামাল দেয়। বহু যাত্রীকে ছোট গাড়ি ভাড়া করে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে।

কোনও প্রভাব পড়েনি বীরভূমেও। সিউড়িতে সরকারি ডিপো থেকে যেমন বাস ছেড়েছে, তেমনই বেসরকারি বাস চলাচল করেছে। খুলেছে দোকানপাট। নিত্যদিনের কাজ করতে রাস্তায় বেরিয়েছেন সাধারণ মানুষও।

এদিন সকাল থেকে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার রামসাগরের কাছে বিজেপির কর্মীরা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ করায় সাময়িক যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। জেলার বাকি অংশে তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি।

জেলার সদর শহর বাঁকুড়ায় এদিন জনজীবন একেবারে স্বাভাবিক। গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ড থেকে এদিন বিভিন্ন রুটে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল করেছে। ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক। সকালের দিকে বাজারগুলিও খোলা ছিল।
আরও পড়ুন Anis Khan Death: অবশেষে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য…