অর্ক্য চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: কয়েকদিন আগেই ফেডারেশন এবং পরিচালক গিল্ডের দ্বন্দ্বে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল টলিপাড়ায়। দফায় দফায় বৈঠক, নানান আলাপ আলোচনার পর অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পাওয়া যায় সমাধান সূত্র। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার নজরে একাধিক নাট্যদল। আচমকাই রাজ্যের বেশ কয়েকটি নাট্যদলের রেপার্টরি অনুদান বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। তালিকায় রয়েছে মেঘনাদ ভট্টচার্য (Meghnad Bhattacharya), দেবেশ চট্টোপাধ্য়ায় (Debesh Chatterjee), পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের মতো জনপ্রিয় নাট্যব্যক্তিত্বের নাট্যদলও।
কলকাতা ও জেলা মিলিয়ে এ রাজ্যের প্রায় ২৪টি নাট্যদল বঞ্চিত হয়েছে কেন্দ্রীয় অনুদান থেকে। অনুদান বাতিলের দলগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘সায়ক’, ‘প্রাচ্য’, ‘মুখোমুখি’-র মতো শহরের অতি পরিচিত নাট্যদল। তেমনই আবার রয়েছে, ‘কল্যানী নাট্যচর্চা’, ‘অশোকনগর নাট্যমুখ’, ‘গোবরডাঙা শিল্পায়ন’, ‘মহিষাদল শিল্পকৃতি’-র মতো জেলার দলও। অভিযোগ উঠেছে, এইসব দলের সদস্য বা কর্ণধারদের কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী অবস্থান দেখেই তাঁদের অনুদান সরিয়ে বঞ্চনার মুখে ফেলা হয়েছে।
আর এই ঘটনার প্রতিবাদেই, সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করলেন দেবেশ চট্টোপাধ্য়ায়, মেঘনাদ ভট্টচার্য, পৌলমী চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা ঘোষ, সুজন মুখোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী, সৌরভ পালোধীর মতো জনপ্রিয় নাট্যব্যক্তিত্বরা। তাঁরা জানালেন, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক অনুদান বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা পুনর্বিবেচনা করার জন্য আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সংশ্লিট মন্ত্রকে চিঠি পাঠাবেন। সেই চিঠির উত্তর কী আসে সেই অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেনই বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহায়তা নিতে পারেন তাঁরা বলেও উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: এবার তাসনিয়ার সঙ্গে জুটি বাঁধছেন দেব
সাংবাদিক বৈঠক থেকে দেবেশ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে যে সমস্ত যুক্তি দেখিয়ে অনুদান বন্ধ করা হয়েছে সেই যুক্তিগুলো সঠিক নয়। তিনি বলেছেন, অনুদান বন্ধ করে দিলে থিয়েটার বন্ধ হয়ে যাবে এমনটা কিন্তু নয়। তবে অনুদানের টাকা কেন্দ্র সরকারের ব্যক্তিগত টাকা নয়, এটা হকের টাকা। তাই কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রককে অনুদান বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ দেবেশ চট্টোপাধ্যায়।
মেঘদূত ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেছেন, অনুদান না পেয়ে থিয়েটারে সক্রিয় অংশগ্রহণের সমস্যা হতে পারে। যারা অল্প ওই অনুদানের অর্থে খুশি হয়ে ভালোবাসে থিয়েটারটা করতো তারা আশাহত হয়েছে বলেই দাবি তাঁর। বিজেপি সরকার রাজনীতি করে অনুদান বন্ধ করেছে, এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “থিয়েটার রাজনীতির থেকে অনেক বড়। আমার দর্শক আসনে শুধুমাত্র তৃণমূল বা বামপন্থীরা বসে এমনটা কিন্তু নয়।” লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন্দ্রের পাঠানো স্ক্রিপ্টে নাটক না করার কারণেই হয়তো অনুদান থেকে বঞ্জিত হতে হল বলেও অনুমান মেঘদূত বাবুর।
দেখুন বিস্তারিত খবর