Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeচতুর্থ স্তম্ভচতুর্থ স্তম্ভ (Fourth Pillar) | কর্নাটক- বিজেপি জিতছে? কংগ্রেস হারছে?    

চতুর্থ স্তম্ভ (Fourth Pillar) | কর্নাটক- বিজেপি জিতছে? কংগ্রেস হারছে?    

Follow Us :

আবার কর্ণাটক। হ্যাঁ আবার কর্ণাটক। কারণ রাত পোহালেই রেজাল্ট আউট। এবং ফলাফল যাই হোকনা কেন এই কর্ণাটকের রেজাল্ট আগামী দিনে ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ইতিহাস হয়ে থেকে যাবে। ঐ জে ডি এস দেবেগৌড়া- কুমারস্বামীর মাদারি খেল নিয়ে আলোচনা নয়, কারণ জে ডি এস ৩৫ টা আসন নিয়ে কিং মেকার হলেও সরকারের চাবিকাঠি তো থাকবে কংগ্রেস বা বিজেপিরই হাতে, বা আরও ভাল করে বলাই যায় এই নির্বাচনে মানুষ ১৩ তারিখের ফলের দিকে তাকিয়ে আছে এটাই জানতে যে কংগ্রেস কি পারবে বিজেপি কে হারাতে? আর সে খবর জানার জন্য ১৩ মে অন্তত বেলা ১০ টা ১১ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। কিন্তু তার আগে আরও একবার এই নির্বাচনের গুরুত্বটা বুঝে নেওয়া যাক।

 

ভারতবর্ষের বড় রাজ্যগুলো, মানে যেখানে ৩৯/৪০ টার বেশি লোকসভা আসন আছে সেগুলোর দিকে তাকান। প্রথমে আসবে উত্তর প্রদেশ, ৮০ টা আসন আছে, বিজেপি এবং সহযোগী দলের হাতে ৬৬ টা আসন, বি এস পি ৯, এস পি ৩, কংগ্রেস ১, একটা আসন খালি আছে। এবার চলুন মহারাষ্ট্রে, ৪৮ টা আসন আছে, বিজেপির হাতে ২৩, শিন্দে শিবসেনার হাতে ১৩, একজন নির্দল জিতেছেন, তেলেগু সিনেমা অভিনেত্রী নভনীত কাউর রানা, জিতেছেন কংগ্রেস এবং এন সি পির সমর্থন নিয়ে, উদ্ধব ঠাকরে শিবসেনার হাতে আপাতত ৫ জন সাংসদ, পাওয়ারের এন সিপির হাতে ৪ জন, কংগ্রেসের হাতে ১ জন এবং ওয়েসির মিম এর হাতে ১ জন সাংসদ। চলুন বাংলায়, কারণ পশ্চিমবঙ্গের মোট সাংসদ ৪২। তৃণমূল ২৩, কংগ্রেস ২, বিজেপি ১৭। বিহারে ৪০ জন সাংসদ, বিজেপি ১৭, জে ডি ইউ ১৬, লোকজনশক্তি দল ৫, কংগ্রেস ১, লোকজনশক্তির আরেক গোষ্ঠির কাছে ১ টা আসন। এবার তামিলনাড়ু, মো্ট আসন ৩৯। ডি এম কে ২৪, কংগ্রেস ৮, সি পি আই ২, সিপিএম ২, দলিত প্যান্থার পার্টি, এরা তীব্র বিজেপি আর এস এস বিরোধী, এদের হাতে এক এবং মুসলিম লিগের হাতে ১ টা আসন রয়েছে।  তাহলে  ২০২৪ এর শক্তির বিন্যাসে এই বড় পাঁচটা রাজ্যে একমাত্র উত্তর প্রদেশ ছাড়া বিজেপির সেই ক্ষমতা নেই, তারা ক্ষমতায় নেই বাংলা, বিহার আর তামিলনাড়ুতে, পাঁচটার মধ্যে তিনটে রাজ্যে বিরোধীরা, উত্তরপ্রদেশে এককভাবে বিজেপি আর মহারাষ্ট্রে বিজেপি অন্যের সাহায্য নিয়ে আছে। এবং গতবারের এই ফলাফলের পর রাজনীতির জল অনেক ঘোলা হয়েছে। শিবসেনা কংগ্রেস এনসিপির হাত ধরেছে, শিবসেনা ভেঙেছে, বি এস পি দূর্বল হয়েছে, বিহারে নীতিশ বিজেপি জোট ভেঙেছে। মোট ২৪৯ টা আসনের মধ্যে বিজেপি ১০৬ টা আসনে, তাদের সহযোগীদের নিয়ে ১২৫ টা আসনে আছে। বিরোধীরাও কমবেশি তাই। কিন্তু ২০২৪ এর আগে ৫ টা বড় রাজ্যের দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে, আগের বারের ফলাফল ধরে রাখাও অসম্ভব। বিহারে, মহারাষ্ট্রে বিজেপি অনেকটা কমবে, এমন কি বাংলাতেও ১৭ টা আসন জেতা বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয়। তাহলে এবার ছোট রাজ্য, মানে ২০ – ৩৯ এর মধ্যে রাজ্যগুলোতে বিজেপির কী অবস্থা? অন্ধ্র ২৫ টা আসন, ওয়াই এস আর কংগ্রেস ২২ টা আর তেলেগু দেশম এর হাতে ৩ টে আসন। গুজরাটের ২৬ টা সনে ২৬ তাই বিজেপির। কর্ণাটকে ২৮ টা আসনের ২৫ টা বিজেপির, একটা কংগ্রেসের, একটা জে ডি এস এর ১ জন নির্দল আছেন, অভিনেত্রী সুমালতা, তিনি জে ডি এস এর দেবেগৌড়ার নাতি নিখিল কুমারস্বামীকে হারিয়েছিলেন। কেরালায় ২২ টা আসন আছে, কংগ্রেস ১৪, মুসলিম লিগ ২, সি পি এম ১, আর এস পি ১, কেরালা কংগ্রেস মণি গ্রুপ ১ টা আসন হাতে রেখেছে। মধ্য প্রদেশে ২৯ টা আসন, ২৮ টা বিজেপির ১ টা কংগ্রেসের। উড়িষ্যা বিজেডি ১২, বিজেপি ৮, কংগ্রেস ১। রাজস্থানে ২৫ টা আসনে বিজেপি ২৪ আর রাষ্ট্রিয় লোকদল ১ টা আসনে জিতেছিল। মানে ৭ টা রাজ্য, বিজেপি সমস্যা হল গতবারের আসন ধরে রাখা, কারণ এর থেকে বেশি আসন বিজেপির পাওয়া অসম্ভব। রাজস্থানে কমতে পারে, মধ্য প্রদেশে কমতে পারে, কর্ণাটকেও কমতে পারে, না কমলেও এই সাত টা রাজ্যে বিজেপির সাংসদ বাড়া সম্ভব নয়। সাতটা রাজ্যে অন্ধ্র, কেরালা, উড়িষ্যা আর রাজস্থানে বিজেপির সরকার নেই। কর্ণাটকে সরকার গেলে পড়ে থাকবে গুজরাট আর মধ্য প্রদেশে, সেখানেও কংগ্রেস ভেঙে সরকার বানিয়েছিল বিজেপি। প্রবল অ্যান্টি ইনকমবান্সি হাওয়া এখনই বইছে। বিজেপির রাজ্য স্তরের নেতা কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছে।। কাজেই মিডিয়ার প্রচারে মোদি শাহ, আর এস এস – বিজেপি কে যে বিশাল মনে হচ্ছে আসলে তাঁদের চেহারা তত বড় তো নয়ই বরং ভালনারেবল, তারা হেরে যেতেও পারে। আর এইখানেই এসে কর্ণাটকের নির্বাচন এক বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জানি অনেকেই বলবেন যে রাজ্যের নির্বাচন আর লোকসভার নির্বাচন এক নয়, দুটোর ফলাফল এক হতেই পারে। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়, খানিকটা বিজেপির নির্দেশে, তাদের চাহিদাতেই মিডিয়া মোদিজীর এক না হারা চেহারা তৈরি করেছে। মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। মানে ধরুন গুজরাটের ভোট হল, লড়াই কার মোদি বনাম রাহুলের, উত্তর পূর্বাঞ্চলের নির্বাচন, মিডিয়া জানালো লড়াই মোদী বনাম রাহুল, মোদি বনাম বিরোধীদের। কে গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী? কজন জানে, সবাই জানে জয় এসেছে মোদিজীর হাত ধরে। এবার তাহলে কী হবে? যদি বিজেপি হারে, তাহলে সেটা মোদিজীর হার হবে। এবং এটা না যদি হয়, আগামীকাল যদি বিজেপি জিতে যায়, তাহলে। মিডিয়া বলবে ২০২৪ ডন ডিল, লড়াই শেষ। ২৪ এর আগেই সরকার আবার মোদিজীর ঘোষণা করবেন আরররণব। মানে ২০২৪ এর নির্বাচন এক ক্লোজড চ্যাপটার হয়ে যাবে। কিন্তু যদি বিজেপি হারে? তাহলে সেই সম্ভাবনা থেকে যাবে কেবল নয়, মোদিজিও হারতে পারে এই খবর তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, ছত্তিশগড় আর মধ্য প্রদেশে ছড়িয়ে যাবে। এবং এখন থেকেই বলে দেওয়া যায়,এরপরে তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, ছত্তিশগড় বা মধ্যপ্রদেশের মধ্যে ৩ টে রাজ্যও যদি বিজেপি হারে, তাহলে ২০২৪ এর লড়াই এ জোর টক্কর হবে, কাঁটে কা টক্কর। আর যদি আগামী ৪ টে নির্বাচনেই বিজেপি হেরে যায়? তাহলে উলটা গিনতি শুরু। কর্ণাটক সেই উলটা গিনতির পয়লা মাইলস্টোন হয়ে থেকে যাবে।

 

আসলে সব বৃদ্ধির এক সমস্যা আছে, প্রবলেম অফ গ্রোথ। কারণ বৃদ্ধি একটা সময় ধরেই হয়, তাক লাগানোর মত বৃদ্ধির পরে সামান্য পতন কিন্তু বিরাট হয়ে দাঁড়ায়। কংগ্রেস হারছিল, হেরো কংগ্রেস সর্বত্র, খানিক নিজের দোষেও। তারপর হঠাৎ রাহুলের পদযাত্রা। বিরাট আলোড়ন, কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে পদযাত্রা নয়, নির্বাচনে জয় কোথায়? কেবল হেঁটে তো সরকার বানানো যায় না। সেই দিক থেকেও কর্ণাটকের জয় ঐ ভারত জোড়ও যাত্রার ওপরে এক শিলমোহর দেবে। কর্ণাটকে জেতার পরেই পূব থেকে পশ্চিম বা পশ্চিম থেকে পূবে হাঁটা দিতেই পারেন রাহুল গান্ধী এবং সেই যাত্রা আগের থেকেও বড় হয়ে উঠতে পারে যদি কর্ণাটকে কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। এখনও পর্যন্ত মিডিয়াতে আসেনি বটে, কিন্তু এবারের কর্ণাটকের নির্বাচনে কন্নড় সাহিত্যিক, বুদ্ধিজিবী, অভিনেতা, গায়ক, কবি সমাজকর্মীদের এক বিরাট ভূমিকা কদিন পরেই জানতে পারবেন। অন্তত ১০০ টা আসনে তাঁরা গিয়ে থেকেছেন, প্রচার করেছেন, আর এস এস – বিজেপি বিরোধী সাহিত্যপাঠ, কবিতা পাঠ থেকে শুরু করে রাস্তায় রাস্তায় মিছিল মিটিং ও তাঁরা করেছেন, খানিকটা আমাদের রাজ্যে গতবারের নির্বাচনে নো ভোট টু বিজেপি ক্যাম্পেইনের মত। ফারাক হল ওনারা ১০০ টা আসন বেছে সেখানে জিততে পারে এমন প্রার্থীদের ভোট দিতে বলেছিলেন। এই সিভিল সোশাইটির অংশগ্রহণ দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে যদি কর্ণাটকে বিজেপি ৬০/৬৫ তে গিয়ে ঠেকে। আবার উল্টোটাও সত্যি এত কিছুর পরে যদি বিজেপির সরকার তৈরি হয় তাহলে মিডিয়া থেকে সাধারণ মানুষের কাছে আর এস এস – বিজেপিই হয়ে উঠবে আপাতত ভবিষ্যৎ। শেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই কর্ণাটকের নির্বাচনে বিজেপি তীব্রতম সাম্প্রদায়িক প্রচার নিয়ে মাঠে নেমেছিল, নরেন্দ্র মোদি নিজে জনসভায় গিয়ে গলা ফাটিয়ে চিত্তকার করছিলেন বজরঙ্গবলি কি জয় বলে, বজরঙ্গ দল থেকে যোগী আদিত্যনাথ সেই বিষ ছড়িয়েছেন সর্বত্র। তারপরেও যদি এই কড়া ডোজের হিন্দুত্বের বদলে মানুষের কাছে গ্যাস সিলিন্ডার আর মূল্যবৃদ্ধিই বড় হয়, তাদের কাছে বেকারত্বই যদি ইস্যু হয়ে ওঠে, তাহলে বিজেপির আগামী প্রচার পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে হবে। বিজেপি বিরোধীরাও এই শিক্ষা পাবেন, কড়া হিন্দুত্বের বদলে হালকা হিন্দুত্ব নয়, মানুষের রোজকার জীবনের সমস্যার কথাই হয়ে উঠতে পারে নির্বাচনী ইস্যু। হ্যাঁ কর্ণাটকে বিজেপি হারলে জয় শ্রী রাম বা জয় বজরঙ্গবলীর বদলে ২০২৪ এ মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের মত আসল সমস্যাই নির্বাচনের ইস্যু হয়ে উঠবে, সেখানেই কর্ণাটকের নির্বাচনের গুরুত্ব।      

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
বাংলার ৪২ | ঘাটালে কোন দল এগিয়ে?
05:59
Video thumbnail
আজকে (Aajke) | অমিত শাহের ভোট প্রচার মানে মিথ্যের ফুলঝুরি
10:46
Video thumbnail
Fourth Pillar | মোদিজির পায়ের তলায় ধস নামছে, উন্নয়ন নয়, এবার হিন্দু-মুসলমান খেলায় নেমে পড়েছেন
15:25
Video thumbnail
বাংলা বলছে | চাকরি বাতিল, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার ও SSC
53:28
Video thumbnail
Politics | পলিটিক্স (24 April, 2024)
15:13
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | বিজেপি দলটাকে উঠিয়ে দেব: অভিষেক
10:43
Video thumbnail
নারদ নারদ | তৃণমূলপ্রার্থীর প্রচারে গিয়ে বিরোধী সুকান্তর প্রশংসা! দেবের মন্তব্যে শোরগোল রাজনীতিতে
15:36
Video thumbnail
Stadium Bulletin | Sachin Tendulkar | কালের মন্দিরা 'শচীন'
26:44
Video thumbnail
Sera 10 | ভোটের আগে ভাটপাড়ায় মিষ্টির ড্রামে ৪৭টি তাজা বোমা উদ্ধার
15:20
Video thumbnail
District Top News | দেখে নিন আজকের জেলার গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি
13:56