কলকাতা: ব্রাত্যতে( Bratya basu) আস্থা মমতার। শিক্ষাক্ষেত্রে( Education) একের পর এক দুর্নীতি অস্বস্তি বাড়িয়েছে শাসকদলের। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বর্তমানে এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান, শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি বর্তমানে জেল বন্দি রয়েছেন। দুর্নীতির জেরবার পরিস্থিতি আবহে ব্রাত্যর কাঁধে দায়িত্ব দিলেন মমতা। তৃণমূলের শিক্ষা সেল এবার পুরোটাই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে দেখার দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার কালীঘাটে শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে মেগা বৈঠক(Meeting) বসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আগামিদিনে রণকৌশল ঠিক করার পাশাপাশি দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। তৃণমূলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। ঠিক এই সময়েই দলীয় নেতা মন্ত্রীদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে অধ্যাপকদের সংগঠন ওবেপকুপা, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সব সংগঠনের বিষয়টি ব্রাত্য বসুকে দেখার জন্য বললেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সবাইকে নিয়েই সংগঠনে চলতে হবে। ব্রাত্য বসুকে উল্লেখ করে বৈঠকে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বাম আমলে কারা কারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র পেয়েছেন, সেই তালিকা ব্রাত্য বসুকে( Bratya basu) বানাতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে কয়েকদিন আগেই আলিপুরে জার্জেস কোর্টের(Court) এক অনুষ্টানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিচারপতিদের উদ্দেশে বলেছিলেন, যাতে কারও চাকরি না যায়। বাম জমানার কারও চাকরি খাইনি। মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বামেরা পালটা মন্তব্য করে বলে, বাম জমানার কারও চাকরি দুর্নীতির ছায়ায় পড়েনি। এপরপই ব্রাত্য বসু পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে জানান, আমাদের শিক্ষা সেল এবং কাউন্সিলরদের বলেছি ১৯৯৭ সাল যখন থেকে এসএসসি শুরু হয়েছে, সেই সময় একটি নির্দিষ্ট দলের হোলটাইমারদের মধ্যে কারা কারা চাকরি পেয়েছেন, সেই সব শিক্ষকদের পরিবারের কোন কোন সদস্যরা চাকরি পেয়েছেন, তার একটা তালিকা তৈরি করুন। তার শ্বেতপত্র আমরা প্রকাশ করব। শুক্রবার শিক্ষার সেলের গোটা দায়িত্বটাই ব্রাত্য কাঁধে দিল মমতা।
আরও পড়ুন:Calcutta High Court | কুন্তল-টলিউড যোগাযোগ আরও স্পষ্ট হচ্ছে
এদিন এই বৈঠকে দলের বেশ কয়েকজন নেতাকে বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বৈঠকে। দায়িত্ব পেয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস সহ একাধিক নেতা। সূত্রের খবর, হাওড়া ও হুগলির দায়িত্ব দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিমে। অরূপ বিশ্বাসকে দেওয়া হয়েছে নদিয়া, দার্জিলিং ও পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্ব। মানস ভুঁইয়া দেখবেন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম। বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান ও পুরুলিয়ার সংগঠন সামলাবেন মলয় ঘটক। সাবিনা ইয়াসমিন ও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে দেওয়া হয়েছে মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর দিনাজপুরের দায়িত্ব। আর দক্ষিণ দিনাজপুরের দায়িত্বে তাপস রায়। গৌতম দেবের নজরে থাকবে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি। অনুব্রত গড় বীরভূমের দায়িত্ব নিজের কাঁধে রেখেছে মমতা।
এদিন বৈঠকে সাগরদিঘির পরাজয়ের পাশাপাশি আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচকে পাখির চোখ করেই সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের দিকে বিশেষ নজর দিতে বলেন মমতায। যুব সংগঠনগুলিকে রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। দলে নেতাদের সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও বেশি করে জনসংযোগ বাড়ানোর কথাও বলেন।
শেয়ার করুন