বাঁকুড়া : সিভিক কর্মীদের দিয়ে স্কুলে পড়ানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত নয়, তা বাতিলের দাবি তুলল বাম শিক্ষক সংগঠন। শুক্রবার এই দাবিতে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের দফতরে বিক্ষোভ দেখাল এবিপিটিএ (All Bengal Primary Teachers Association)। এদিন দুপুরে বাঁকুড়ার বঙ্গ বিদ্যালয় চত্বর থেকে মিছিল করে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে্র সামনে জড়ো হন বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা।
এবিপিটিএর (ABPTA) জেলা সম্পাদক বিমান পাত্র বলেন, রাজ্য সরকার অঙ্কুর প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঘুরিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে বেসরকারীকরণের পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাই ওই প্রকল্প স্থগিত নয় বাতিল বলে ঘোষণা করতে হবে। এই দাবি তোলা হয় ওই শিক্ষিক সংগঠনের তরফ থেকে।
উল্লেখ্য, অঙ্কুর প্রকল্পে বাঁকুড়া (Bankura) জঙ্গলমহলের পাঁচটি থানা এবং অন্যান্য থানাগুলিতে মোট ১২৪টি শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা হবে। সেখানে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের অঙ্ক এবং ইংরেজি পড়াবেন স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়াররা (Civic Volunteer)। যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজকর্ম নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই, যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের তৃণমূল (TMC) কর্মী বলে এলাকায় পরিচিতি, তাদেরই এবার দেখা যাবে শিক্ষকের ভূমিকায়।
বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বাঁকুড়া পুলিশের এ সংক্রান্ত সার্কুলার পোস্ট করেছেন তাঁর টুইটে। সঙ্গে তিনি লিখেছেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় চার লক্ষ পরীক্ষার্থী কমে গিয়েছে। তিরিশের কম পড়ুয়া আছে, এরকম ৮ হাজার ২০৭টি সরকারি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের সাপ্লিমেন্টারি ক্লাসে পড়ানো হবে। টুইটে বিরোধী নেতার তীব্র শ্লেষ, সুরকারই শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আরও পড়ুন: Death of two school girls: স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২ শিশুর, আহত আরও ১
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য দাবি করেছেন, রাজ্য সরকার কোনও সরকারি স্কুল বন্ধ করছে না। তিনি রাজ্যবাসীকে এধরনের গুজবে কান দিতে নিষেধ করেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষা দফতরের সার্কুলার বলে একটি বিজ্ঞপ্তি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাতে বলা হয়েছে শিক্ষা দফতর ৮ হাজার ২০৭টি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যে বেশিরভাগই প্রাথমিক স্কুল। কোন জেলায় কত স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে তারও বিস্তারিত তালিকা ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশেষ করে শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাতের মোবাইলে সেই তালিকা নিয়ে জোর চর্চাও চলছে। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য গোটা বিষয়টিকেই গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অঙ্ক-ইংরেজি পড়ানো নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি শিক্ষামন্ত্রীর।