কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় চমক আসতে পারে, কারণ অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন (8th Pay Commission) গঠনের আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে, সপ্তম বেতন কমিশনের (7th Pay Commission) ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে, প্রকৃত বেতন বৃদ্ধির হার প্রত্যাশার তুলনায় কম ছিল। মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনা করে প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি যে ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধির থেকে আলাদা, তা আগের কমিশনগুলোর সুপারিশেই স্পষ্ট। ফলে, নতুন কমিশন থেকে কর্মচারীরা কী আশা করতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন বেতন কমিশনের সুপারিশ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের (6th Pay Commission) সময় সর্বোচ্চ প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল। দ্বিতীয় বেতন কমিশন (2nd Pay Commission) ছাড়া, সপ্তম বেতন কমিশনের আগে সব কমিশনই ২০ শতাংশের বেশি নগদ বেতন বৃদ্ধি করেছিল। ষষ্ঠ বেতন কমিশন ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি করেছিল, যেখানে সপ্তম কমিশনের ক্ষেত্রে তা মাত্র ১৪.৩ শতাংশ। ফলে, কর্মীদের মধ্যে অষ্টম কমিশন নিয়ে আশার পারদ চড়া, কারণ তারা মনে করছেন এবার প্রকৃত বেতন বৃদ্ধির হার আরও বেশি হতে পারে।
আরও পড়ুন: আরজি করের নির্যাতিতার বাড়িতে স্বাস্থ্য সচিব
সপ্তম বেতন কমিশন তার সুপারিশে জানিয়েছিল, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি মূল বেতন নির্ধারণের জন্য পুরনো পে ব্যান্ড ও গ্রেড পের যোগফল ২.৫৭ গুণ করতে হবে। এর মধ্যে ২.২৫ অংশ ছিল ডিএ সংযোজন, যেখানে প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি ছিল মাত্র ১৪.২ শতাংশ। অথচ, তৃতীয় (3rd Pay Commission), চতুর্থ (4th Pay Commission) ও পঞ্চম বেতন কমিশন (5th Pay Commission) যথাক্রমে ২০.৬ শতাংশ, ২৭.৬ শতাংশ ও ৩১ শতাংশ প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি করেছিল। ফলে, সপ্তম কমিশনের তুলনায় নতুন কমিশন কতটা উদার হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
অষ্টম বেতন কমিশন গঠিত হলে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা ন্যায্য বেতন বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছেন, যা জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সাহায্য করবে। কর্মচারীরা মনে করছেন, নতুন কমিশন শুধুমাত্র মুদ্রাস্ফীতি বা ডিএ সংশোধন নয়, বরং যথাযথ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় বেতন কাঠামো নির্ধারণ করবে। তবে, বাস্তবে কতটা বৃদ্ধির প্রস্তাব আসবে, তা নির্ভর করবে সরকারের আর্থিক নীতির ওপর।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অষ্টম বেতন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫ সালের এপ্রিলে গঠিত হতে পারে। এটি কার্যকর হলে সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে ম্যাট্রিক্স নির্ধারিত হবে, যা ভবিষ্যৎ বেতন কাঠামো নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে, প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি কত হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা থাকলেও, কর্মচারীদের প্রত্যাশা যে অনেক বেশি, তা বলাই বাহুল্য।
দেখুন আরও খবর: