কলকাতা: হরিদেবপুরে মা এবং তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে মেয়ের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। মেয়েটিকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদকরে মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ জানতে পারল, গোটা ঘটনায় ওই নাবালিকার সাজানো। পাশাপাশি তার বয়ানেও বিস্তর অসঙ্গতি মিলেছে। কান্নায় ভেঙে পড়ে সে স্বীকার করেছে, মা এবং তার প্রেমিককে ফাঁসানোর জন্যই নাটকীয় প্লট তৈরি করেছিল। মায়ের একাধিক পুরুষ বন্ধু থাকার কথা সে জানতে পেরেছিল। তার জন্যই দু’জনকে ফাঁসাতে চেয়েছিল সে। সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ হিসেবে ঘরে নিজেই আগুন লাগিয়ে মা ও তার বন্ধুর নাম জড়িয়েছিল মেয়েটি।
আরও পড়ুন: Birbhum | SP Change | সরিয়ে দেওয়া হল বীরভূমের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়কে
তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পারে, মায়ের ফোন ক্লোন করেছিল ওই নাবালিকা। তাই সেই ফোনের সমস্ত তথ্য তার ফোন থেকে গিয়েছিল। এছাড়া সে নিজের মনগড়া একটা ভুয়ো মেসেজের প্লেট তৈরি করে। সেখানে মা এবং পুরুষ বন্ধু কথোপথনের বিস্তারিত বিবরণ ছিল, কীভাবে মেয়েকে পৃথিবী থেকে সরানো হবে তা নিয়ে। সেই ভুয়ো কথপোকথনে স্ক্রিনশট নিয়ে মেয়েটি পুলিশের দ্বারস্থ হয়।
পুলিশ কর্তারা অতটুকু মেয়ের টেকনোলজির জ্ঞান এবং গল্প বানানোর বুদ্ধি দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছেন। মেয়েটির সঙ্গে দিনভর কথা বলে পুলিশ অফিসাররা নিশ্চিত, এই ঘটনায় মা এবং তার পুরুষ বন্ধুর কোনও যোগাযোগ নেই। প্রশ্ন উঠেছে, কেন মেয়েটি এই প্লট সাজাতে গেল। পুলিশ অফিসার এবং মনোবিদদের একাংশের ধারণা, মেয়েটি হয়ত মাতৃস্নেহ থেকে ছোটবেলা থেকেই বঞ্চিত। সেই কারণেই মায়ের প্রতি তার একটা ক্ষোভ থাকতে পারে। পাশাপাশি মায়ের একাধিক পুরুষ বন্ধু থাকার বিষয়টিও সে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি। তাই মা ও তার ওই পুরুষ বন্ধুকে ফাঁদে ফেলার জন্য এই গল্প সাজিয়েছে। তাকে এ ব্যাপারে অন্য কেউ সাহায্য করেছিল কি না, তাও খাইয়ে দেখছে পুলিশ। আপাতত মেয়েটিকে হোমে পাঠানো হয়েছে।