রাঁচি: প্রাচীন প্রবাদ যে, ঠোঁট ও পেয়ালার মধ্যে অনেক দূরত্ব থাকে। যতক্ষণ না কাপটি ঠোঁট স্পর্শ করছে, ততক্ষণ বলা যায় না চা খেলাম। সেই অবস্থাই এখন ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে। কারণ, আগামিকাল, সোমবার ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নতুন মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেনকে ৮১ সদস্যবিশিষ্ট বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে।
তার আগে এদিন রবিবার বাঁকা কথায় সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএমের সর্বময় কর্তা হেমন্ত সোরেনকে বিঁধলেন দলেরই এক আদিবাসী বিধায়ক। অন্যদিকে, আর এক আদিবাসী বিধায়কও লাপাতা। গত তিনদিন ধরে তাঁর খোঁজ মিলছে না, যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে জেএমএম।
আরও পড়ুন: রামমন্দিরের পর কামাখ্যা করিডর মোদির ভোটের তাস
রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণনের সামনে ৪৭ জন বিধায়কের সমর্থন আছে বলে দাবি করেছিলেন চম্পাই। শুক্রবার শপথ গ্রহণের পরপরই তার মধ্যে ৩৯ জনকে নিয়ে কংগ্রেস শাসিত তেলঙ্গানার হায়দরাবাদের উপকণ্ঠ শামিরপেটের একটি রিসর্টে ‘নজরবন্দি’ করে রাখা হয়। ইডলি-ধোসা, কফি আর হায়দরাবাদি বিরিয়ানিতে দুদিন মশগুল থাকার পর আজ, রবিবার রাতের মধ্যে তাঁরা রাঁচি ফিরে আসছেন। দুটি বিশেষ বিমানে হায়দরাবাদের বেগমপেট বিমানবন্দর থেকে তাঁরা রওনা দেবেন।
আগে ঠিক ছিল তেলঙ্গানার কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী এ রেবন্ত রেড্ডি তাঁদের নিয়ে সোমবার সকালের বিমানের আসবেন। কিন্তু, পরে পরিকল্পনা বাতিল হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী সোমবারের বিমানে রাঁচি এসে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায়যাত্রায় যোগ দেবেন।
এর মধ্যেই বাগড়া দেখা দিয়েছে জেএমএমের বর্ষীয়ান নেতা লোবিন হেমব্রমের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে। সাহিবগঞ্জ জেলার বোরিও বিধানসভা কেন্দ্রের সদস্য লোবিন বলেন, আমার পরামর্শ না শোনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আজ জেলের মুখ দেখতে হয়েছে। ২০১৯ সালের ভোট ইস্তাহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়নি। যার ফলে রাজ্যের আদিবাসী সমাজের মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। এর পিছনে বিহারিদের হাত রয়েছে বলেও বেসুরো কথা বলেছেন তিনি।
তাঁর অভিযোগ ঝাড়খণ্ডে সরকারে থাকে আদিবাসীরা, কিন্তু সরকার পরিচালনা করে অনাদিবাসীরা। আমাদের দলের লক্ষ্য ছিল আদিবাসী স্বার্থ রক্ষা। কিন্তু বাঁধ, সড়ক, শিল্প এবং বিমানবন্দর তৈরির নামে এক এক করে আদিবাসীদের জমিই হাতানো হয়েছে। এখন লোকে আমাদের বিশ্বাসঘাতক বলছে।
ছামরা লিন্ডা নামে আরেক বিধায়ক দুদিন ধরেই বেপাত্তা। আগের দিন দলের বৈঠকেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। যদিও দলের সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, হেমব্রম এবং লিন্ডা দুজনেই কাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের বিশেষ সভায় হাজির থাকবেন। চিন্তার কিছু নেই।
অন্য় খবর দেখুন