কলকাতা: সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja) হবে, তাও আবার টেন্ডার (Tender) ডেকে! বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পড়ুয়া আয়োজনের এই কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। এমন নজির এই প্রথম শহর কলকাতায় (Kolkata)। মহানগরীর সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে (University of Calcutta) সরস্বতী পুজো হতে চলেছে টেন্ডার ডেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ক্যাম্পাসে (Campus) পুজোর জন্য একসঙ্গেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। পুজোর দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের (Students), বিশেষ করে ছাত্র সংসদকে (Student’s Union)।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো পড়ুয়ারা মিলে করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রটা একবার আলাদা হতে চলেছে এবার। প্যান্ডেল (Pandal), সাজসজ্জা (Decoration) সহ আয়োজনের সবরকম দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের। এবারই প্রথম এরকম নজিরবিহীন ঘটনা ঘটতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে, সরস্বতী পুজোয় টেন্ডার ডেকে দায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে কোনও পেশাদার সংস্থাকে (Professional Organization)। করোনা প্যানডেমিক (Corona Pandemic) পর্ব কাটিয়ে ২০২১ সালে শেষবার ধুমধাম করে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে (College Street Campus) পুজো হয়েছিল। সেই সময় সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে পড়ুয়াদের চটুল নাচ (Obscene Dance) নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এজন্য প্রচুর ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। ছাত্র সংসদকে শো কজ পর্যন্ত করা হয়েছিল। এরপর, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন তৎকালীন উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় (Sonali Chakravarti Banerjee)।
এবছর ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের (Republic Day of India) দিন সরস্বতী পুজো পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো টেন্ডার ডেকে আয়োজন করা প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ৩ বছর ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হয়নি, ফলে এখন সংসদের অস্তিত্ব নেই। তাই এবছর আর পড়ুয়াদের হাতে অর্থাৎ সংসদকে টাকা না দিয়ে, সরাসরি টেন্ডার পাওয়া পেশাদার সংস্থাকে অর্থ দেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারাই প্যান্ডেল তৈরি করা থেকে রঙ করা, আলপনা দেওয়ার কাজ করবে।
এবিষয়ে কী বলছে বিশেষজ্ঞ মহল? তাঁদের বক্তব্য, সরস্বতী পুজোর প্যান্ডেল, সাজগোজ কিংবা আলপনা দেওয়ার কাজ পড়ুয়ারা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আগের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আর পড়ুয়াদের হাতে নয়, টেন্ডার ডেকে কোনও পেশাদার সংস্থার হাতে দায়িত্ব দিতে চাইছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে টেন্ডার জমা পড়তে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।