নয়াদিল্লি: ফিল্মি কায়দায় হত্যার ঘটনা। তিন যুবক মিলে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করছে এক যুবককে। আর পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির সুন্দর নগরী এলাকায়। পুরনো শত্রুতার জেরে খুন হওয়া যুবকের নাম মণীশ। হত্যার ঘটনায় পুলিশ আলম, বিলাল এবং ফয়জন নামে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। খুন হওয়া যুবক এবং তিন অভিযুক্ত ভিন্ন সম্প্রদায়ের, তাই অনেকে বিষয়টিকে অন্য মোড় দিতে চাইলেও, পুলিশ তা নাকচ করে দিয়েছে৷ উত্তর-পূর্ব দিল্লির ডিসিপি সঞ্জয় কুমার সৈনের বক্তব্য, “মণীশের হত্যার বিষয়টি সাম্প্রদায়িক বিষয় নয়, ব্যক্তিগত বিবাদ থেকেই এই খুনের ঘটনা৷ দুই পক্ষ ভিন্ন সম্প্রদায়ের হলেও, কোনও সাম্প্রদায়িক কারণ নেই৷” পুলিশ দুই সম্প্রদায়ের উদ্দেশেই শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছে৷
সমস্যার সূত্রপাত এক বছর আগে। মণীশের ফোন ছিনতাইয়ের সময় তাঁর ঘাড়ে ও পেটে ছুরি দিয়ে কোপানো হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ কাশিম এবং মহসিন নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তারপর থেকে দুই অভিযুক্ত এবং তাদের পরিবার মণীশকে ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছিল মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। মণীশের পরিবারকে বাড়ি গিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়, অভিযোগ তুলে না নিলে খুন করা হবে। কিন্তু সমস্ত হুমকিকে উপেক্ষা করে মণীশ আদালতে তাঁর সাক্ষ্য দেন ২৮ সেপ্টেম্বর। তার তিনদিন পরই মণীশকে বাড়ির বাইরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মণীশের পরিবারকে হুমকি দেওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে, শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, আবছা-আলোকিত গলিতে একদল লোক আসে। মণীশ তার উল্টোদিক থেকে আসছিল। হঠাৎ করে মণীশকে কলার ধরে টেনে চড় মারে এক দুষ্কৃতী। এক সেকেন্ড পরেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক্রমাগত কোপাতে থাকে তারা।
ঘটনার সময় কয়েক মিটার দূরেই দুই ব্যক্তি বাইকে এবং চেয়ারে বসে থাকলেও, ঘটনার নৃশংসতা দেখে আর এগিয়ে আসেননি। অনেকে আবার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিভৎস হত্যাকাণ্ড দেখে থেমেও যান। খুন করার পর তিন দুষ্কৃতী ছুরি হাতে চলে যাওয়ার সময় একজন টুপি নিতে ফিরে এসে মণীশকে ফের একাধিকবার কোপায়। মাটিতে লুটিয়ে থাকা মণীশ অসহায়ভাবে তাকে থামানোর চেষ্টাও করে। কোপানোর পর চলে যাওয়ার সময় ছুরি উঁচিয়ে মণীশকে শাসিয়েও যায় তারা।
গুরুতর জখম অবস্থায় মণীশকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, ডাক্তার তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ এ ব্যাবারে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে এবং তদন্ত চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় পুলিশের আউটপোস্ট হলেও, ছিনতাই ও কোপানোর ঘটনা এখানে হামেশাই ঘটে৷ সামনের মুরগি বাজারে অস্ত্র লোকানো থাকে, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাইয়ের সময় তা ব্যবহার করে দুষ্কৃতীরা।
CCTV Footage: ফিল্মি কায়দায় ঘটনা রেকর্ড, নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন যুবককে
Follow Us :