Sunday, June 8, 2025
Homeআজকেআজকে (Aajke) | গ্রামে হাফ ডাক্তার? 

আজকে (Aajke) | গ্রামে হাফ ডাক্তার? 

Follow Us :

এক তথ্য বলছে এমবিবিএস পাস করে সাধারণ ডাক্তার হবার পরে এক বিরাট সংখ্যক ডাক্তারছাত্ররা ডারমেটালজিস্ট, প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে স্পেসালাইজেশন করতে চাইছেন। কেন? কারণ সেখানে নাকি বিরাট অংকের ফিজ, বিরাট আর্থিক ভবিষ্যৎ, কারণ এসব ডাক্তারদের কাছে যাঁরা আসছেন তাঁরা আক্ষরিক অর্থেই বিত্তবান মানুষজন। আর এক তথ্য বলছে আপাতত নাকি বাজারে ইন থিং হল পারসোনাল ডায়েটিসিয়ান রাখা। তাঁদেরও ফিজ নাকি আকাশ ছোঁয়া। কী খাব আর কী খাবোনা তার হিসেব নিকেশ নাকি তাঁরা করে দিচ্ছেন, তাতেই নাকি চর্বি ঝরছে, অসুখ সারছে। এবং আবার বলাই বাহুল্য এগুলো পয়সা যথেষ্ট আছে এমন মানুষদেরই ব্যাপার। না খেতে পাওয়া মানুষ খামোখা ডায়েটিং করবে কেন?

সব মিলিয়ে যা বলতে চাইছি যে স্বাস্থ ব্যবস্থা ক্রমশই এক বড়লোকের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, সে ডাক্তার থেকে হাসপাতাল বা ওষুধ থেকে অপারেশন, যাই বলুন না কেন। এবং তেমন এক সময়ে গ্রামীন স্বাস্থ পরিসেবার সবথেকে বড় সমস্যা হল ডাক্তারের অভাব। পয়সা দিয়ে ঝকঝকে গ্রামীণ হাসপাতাল তৈরি হয়েছে, ওষুধ পত্র যন্ত্রপাতিও কিছু এসেছে, কিন্তু গিয়ে দেখুন ডাক্তার নেই। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে গ্রাম বাংলার মানুষের আওক্ষরিক অর্থেই রক্ত চুষে খাচ্ছে কিছু মানুষ। মাধ্যমিক পাস, একটা প্রেসার দেখার মেসিন, একটা স্থেটোস্কোপ কিনে ফেলেছে, তারপর কেবল রোগীর অপেক্ষা। জ্বর হলেই হল, সর্দিকাশির জ্বর, ম্যালেরিয়া না ভাইরাল ফিভার নাকি আরও কোনও অসুখ দেখার দরকার নেই, আর দেখবেই বা কী করে। কিন্তু ওষুধ লিখে দিচ্ছেন, সব ওষুধ, যা যা পাশের ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়। সব। কিছু সারছে, কিছু মরছে। সাত মারি পালোয়ান আর ১০০ মারি ডাক্তারদেরই তো নামডাক হয়, অতএব যা হবার তাই হচ্ছে। ছাত্ররা ডাক্তারি পাশ করছেন, কিন্তু গ্রামে যাবেন না, যাবেনই বা কেন? বরং গ্রামের ছেলে মেয়ে হলে এবার বাবা মা কে গ্রাম থেকে নিয়ে এসে ফ্ল্যাটবাড়ি কিনে শহরেই বসছেন চেম্বারে বা কোনও পলিক্লিনিকে বা প্রাইভেট নার্সিং হোম এ। আর ভাল ছাত্ররা? ঐ যে ডারমাটোলজি, বাজোরিয়া, সিঙ্ঘানিয়ার মেয়ে আসবে মুখের ছোপ সারাতে, ব্যস, লাইফ সর্টেড। তাহলে? আবার ভেসে উঠল, সেই খালিপদ ডাক্তারের কথা। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে, সেটাই আজকের বিষয় আজকে, খালিপদ ডাক্তার, বেয়ার ফুটেড ডক্টর। 

সেই কবে বাম আমলের এক্কেবারে শুরুর দিকে প্রমোদ দাশগুপ্ত দলের তরফে জানিয়েছিলেন এই খালি পায়ে ডাক্তারের কনসেপ্ট। সেটাও এসেছিল চীন থেকে। চীনের বিরাট জনসংখ্যার জন্য সাধারণ স্বাস্থ আর চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিয়েই গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই বেয়ার ফুটেড ডক্টর দের, এদের অনেকেই ছিলেন চীনের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি আকুপাংচার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, তাঁদের শরীরবিদ্যার ঐ সাধারণ জ্ঞানের ওপর আধুনিক চিকিৎসার কিছু প্রশিক্ষণ নিয়েই তাঁরা গিয়েছিলেন গ্রামে। কিছুদিনের মধ্যেই গোটা ছবিটা পালটে গিয়েছিল। সেটাই এখানে চালু করতে চেয়েছিল বাম সরকার। তীব্র প্রতিবাদ ওঠে সর্বত্র। শহরের জন্য ডাক্তার আর গ্রামের জন্য হাতুড়ে? প্রতিবাদ ব্যাঙ্গের মধ্যেই নতুন শব্দবন্ধ জন্ম নেয়, “খালিপদ ডাক্তার”, হরিপদ কেরানি আর খালিপদ ডাক্তার। সে সমালোচনা সহ্য করার ধক ছিল না বাম সরকারের, এবং তাঁদের নিজেদের মধ্যেও এ নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধা ছিল। আজ আবার ইতিহাসের চাকা ঘুরে সেই একই জায়গায়। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক ঘোষণা করেন নি, বলেছেন এটা ভাবা যেতে পারে, সিনিয়ার নার্সদের, বা কমিউনিটি চিকিৎসকদের তিন বছরের প্রশিক্ষণ দিয়ে কি ডাক্তার তৈরি করা যায়? তাহলে তো গ্রাম বাংলার এই সমস্যা অনেকটা মেটে। এবং বলার পরেই সেই একই হৈ হৈ রব সর্বত্র। ডাক্তার বাবু লিখছেন তাহলে তো ইউ টিউব দেখেও ডাক্তারি শিখে নেবে। কী ব্যাঙ্গ। কিন্তু সমাধান কী? না সে বিষয়ে একটা কথাও বলবেন না এই চোখে আঙুল দাদারা। মানুষের কাছে যে খবর যাচ্ছে যে মমতার সরকার তিন বছরে ডাক্তারের পরিকল্পনা করছেন। আচ্ছা মানুষ কে, বিশেষ করে জেলা, গ্রাম বাংলার মানুষকে যদি জিজ্ঞেষ করা হয় যে সিনিয়ার নার্স বা স্বাস্থ কর্মীদের যদি তিন বছরের প্রশিক্ষণ দিয়ে গ্রামে পাঠানো হয়, তাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার লাভ হবে না ক্ষতি হবে? জিজ্ঞেষ করেছিলাম, শুনুন মানুষজন কী বলছেন।

গ্রামীণ স্বাস্থ এক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের বিষয়, খুব সাধারণ অসুখে মানুষ চিকিৎসা পান না বা ফড়ে কোয়াকদের হাতে গিয়ে পড়েন, এটা স্বাধীনতার অমৃতকালের বাস্তবতা। কি বাম কি ডান, কোনও জামানাতেই গ্রামীণ স্বাস্থ সেই গুরুত্ব পায়নি, যা পাওয়া উচিত। সোনার ফসল ফলায় যারা বলে গান হবে, চাষীভাই বলে রেডিওর অনুষ্ঠান হবে, প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলবেন আর রাজ্য সরকার গ্রামীণ উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়েই যাবে, কিন্তু তার আড়ালে গ্রামীণ স্বাস্থ ব্যবস্থার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকবে। গতকাল রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, সে কথাই ভেবেছিলেন মাও সে তুং, চীনের স্বাস্থ ব্যবস্থার দিকে তাকান, ঐ একই কথাই বলেছিলেন প্রমোদ দাসগুপ্ত। এই খালিপদ ডাক্তারেরাই গ্রামীণ স্বাস্থের হাল বদলে দিতে পারে, কেবল সদিচ্ছার দরকার আর জেদের, যা যাবতীয় ব্যঙ্গ আর ঠাট্টাকে সরিয়ে রেখে গ্রাম বাংলার মানুষকে এনে দিতে পারে উজ্জ্বল স্বাস্থের সন্ধান। আপনাদের মতামত জানান।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Suvendu Adhikari | তৃণাঙ্কুরের পোস্টে রেগে আগুন শুভেন্দু, খেপে গিয়ে কী বললেন দেখুন
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | ৫০০-১০০০-এ শাঁখা-পলা বিসর্জন দেবেন না
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | বিজেপি ক্ষমতায় এলে মাসে ৩০০০ টাকা
00:00
Video thumbnail
Anubrata Mondal | অনুব্রতকে ফাঁ/সা/নোর নেপথ্যে কে? দেখুন কলকাতা টিভি EXCLUSIVE
00:00
Video thumbnail
Bowbazar News | কলকাতায় ফের ভে/ঙে পড়ল বহুতলের একাংশ, কী পরিস্থিতি বউবাজারে? দেখুন ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | শুভেন্দুকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট, ভুগতে হবে পাল্টা শুভেন্দু
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | ৫০০-১০০০-এ শাঁখা-পলা বিসর্জন দেবেন না
02:51
Video thumbnail
India-Pakistan | জলের জন্য কাঁদছে পাকিস্তান, ভারতকে চার বার চিঠি, কী সিদ্ধান্ত দিল্লির?
01:26:21
Video thumbnail
Mahua Moitra | বিয়ের পর মহুয়া মৈত্রর এই ভিডিও দেখলে আপনিও খুশি হবেন...
02:42:44
Video thumbnail
Anubrata Mondal | অনুব্রতকে ফাঁ/সা/নোর নেপথ্যে কে?
02:42