কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court of India) নির্দেশ উপেক্ষা করে দিল্লির প্রশাসনকে ক্ষমতাহীন করার জন্য কেন্দ্র যে অর্ডিন্যান্স এনেছে, এবার বিরোধীরা তাকেই হাতিয়ার করে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের ধার বাড়াতে চাইছে। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) বৈঠকে সেই অর্ডিন্যান্সই প্রাধান্য পেল। কেজরিওয়াল মনে করেন, রাজ্যসভায় যদি বিরোধীরা এই অর্ডিন্যান্স আটকে দিতে পারে, তাহলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের (General Elections 2024) আগে বিরোধীদের বড় জয় হবে। সেই প্রেক্ষিতেই মমতা বলেন, ২০২৪ সালের ভোটের আগে বিজেপিকে হারানোর এটা একটা বড় সুযোগ। আর তো মাত্র ছয় মাস সময় আছে। তার মধ্যে যদি অলৌকিক (মিরাকল) কিছু হয়, তাহলে অনেক কিছু হতে পারে। তাঁর ইঙ্গিত, কেন্দ্রের সরকার পড়ে যেতেও পারে। তবে তিনি তার বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাননি।
দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতা দিল্লির সরকারের হাতে থাকবে, নাকি লেফটেন্যান্ট গভর্নরের বকলমে কেন্দ্রের হাতে থাকবে, তা নিয়ে দীর্ঘ আট বছর ধরে আইনি লড়াই চলছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, প্রশাসনিক ক্ষমতা দিল্লির নির্বাচিত সরকারের হাতেই থাকবে। ওই রায়ের আটদিন পরেই কেন্দ্রীয় সরকার অর্ডিন্যান্স এনেছে আমলাদের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখার জন্য। আম আদমি পার্টি সে ব্যাপারে শীর্ষ আদালতেও গিয়েছে। পাশাপাশি কেজরিওয়াল এই ইস্যুতে সব বিরোধী দলকে পাশে পেতে চাইছেন। তিনি চান, বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দল রাজ্যসভায় এই অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে ভোট দিক। তবেই বিজেপির শিক্ষা হবে। কারণ, রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।
মমতা বলেন, এটাই বিরোধীদের সামনে বড় সুযোগ। তাকে কাজে লাগাতে হবে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মানকে পাশে বসিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি বিরোধী রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যপালদের দিয়ে নানা অপকর্ম করাচ্ছে। সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র পর্যন্ত হচ্ছে। দিল্লির জন্য যে অর্ডিন্যান্স আনা হয়েছে, তার মাধ্যমে সেখানকার নির্বাচিত সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করা হবে। সব বিরোধী রাজ্যে রাজ্যপালদের অন্যায় কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দরকার হলে সুপ্রিম কোর্টে যেতে হবে। কারণ সুপ্রিম কোর্টই পারে দেশকে বাঁচাতে। বিজেপি সংবিধানকে গুরুত্ব দিতে চায় না। যা খুশি, তাই করছে। পারলে দেশের নামটাও ওরা বদলে দিতে পারে। এর জন্যই বিরোধীদের একজোট হওয়া দরকার। তা নিয়ে আলোচনা চলছে বিভিন্ন স্তরে। বিজেপিকে হারাতেই হবে।
এদিন কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান, দিল্লির ভারপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী আতিশী ছাড়াও রাঘব চাড্ডা-সহ আম আদমি পার্টির আরও নেতা। কেজরি এবং ভগবন্ত মুখ্যমন্ত্রীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। বাংলা এবং পঞ্জাবের পারস্পরিক সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন তিনি।