নয়াদিল্লি: জোশিমঠের পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জরুরি এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বসতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র ক্যাবিনেট সচিব এবং অন্যান্য পদস্থ অফিসারসহ বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করবেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরাখণ্ডের ও জোশিমঠের জেলা আধিকারিকরাও বৈঠকে হাজির থাকবেন।
ইতিমধ্যেই জোশিমঠের (Joshimath) ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ভেঙে ফেলার সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞদল (Expert Panel)। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব রঞ্জিত সিনহার নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল গত দুদিন ধরে এলাকা ঘুরে দেখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাটলের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি মেরামতের আর কোনও সম্ভাবনা নেই। সেগুলি ভেঙে ফেলাই ভালো। এখন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Joshimath Crisis National Disaster: জোশিমঠের সংকটকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার আর্জি সুপ্রিম কোর্টে
বিশেষজ্ঞ কমিটির তরফে কেন্দ্র ও রাজ্যকে এ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, যোশিমঠের ২৫ শতাংশ এলাকা, যেখানে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসবাস, তা ভূমিক্ষয়ের শিকার। গোটা এলাকায় যে সমীক্ষা চলছে তাতে ক্ষয়ক্ষতির বিচারে তিনটি মান ধরা হয়েছে, খুব কম ক্ষতিগ্রস্ত, মাঝারি এবং ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত।
ভূমিক্ষয়ে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) জোশিমঠে (Joshimath) বাড়িঘর, রাস্তাঘাটে বড় বড় ফাটল দেখা দেওয়ায় বিপদের মুখে দাঁড়িয়েছে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। চামোলি জেলার (Chamoli) গুরুত্বপূর্ণ জোশিমঠ-মালারি সীমান্ত সড়কে বিরাট ফাটল দেখা দিয়েছে। এই সীমান্ত সড়কটি চীন সীমান্ত পর্যন্ত গিয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় ভূমিধসে রাস্তা ফাটল এতটা চওড়া হয়েছে যে, সেখানে গাড়ি চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
শনিবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি (Chief Minister Pushkar Singh Dhami) জোশিমঠ পরিদর্শন করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সকলের নিরাপত্তা এবং মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের প্রধান কাজ। ভূমিধসের কারণ নিয়ে দেশের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষজ্ঞরা খতিয়ে দেখছেন।
জোশিমঠের এই সংকটকে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণার আর্জি জমা পড়ল সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনে বলা হয়েছে, আজকের এই বিপর্যয়ের কারণ হচ্ছে, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ন ও নির্মাণকাজ। স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী এই আবেদন করে বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে অবিলম্বে আর্থিক সাহায্য ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, আবেদনে তিনি বলেছেন, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষকে জোশিমঠের মানুষের জন্য উদ্ধারকাজে নামাতে হবে। আর্জিতে বলা হয়েছে, মানুষের জীবন ও সম্পত্তিকে বলি দিয়ে কোনও উন্নয়নের প্রয়োজনের নেই। পরিবেশ ভারসাম্যকে ধ্বংস করে এমন কোনও কাজ ঘটে থাকলে তা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রাজ্য ও কেন্দ্রকে একযোগে ঠেকানো উচিত ছিল।