লাভপুর: ময়ূরাক্ষী নদীর বালির ঘাট কোন গোষ্ঠীর দখলে থাকবে, তা নিয়ে সালিশি সভার নামে তিনজনকে ডেকে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ। তিন ভাইকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। ঘটনার পর থেকেই গ্রাম ছাড়া ছিল নিহতদের পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছিল বীরভূমের (Birbhum) লাভপুর বিধানসভা কেন্দ্রের দারকা অঞ্চলের নবগ্রামে (Nabagram)। নিহতরা হলেন জাকের আলি, কোটন শেখ, ওইসুদ্দিন শেখ। অবশেষে আদালতের নির্দেশে ১৩ বছর পর গ্রামে ফিরলেন পরিবারর সদস্যরা।
২০১০ সাল, রাজ্যে তখনও ক্ষমতায় বামফ্রন্ট সরকার। সদ্য ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগদান করেছেন লাভপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। অভিযোগ, মনিরুল ইসলাম সালিশি সভার নামে তার বাড়িতে ডেকে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরবর্তীকালে তৃণমুলের সভাসমিতিতে মনিরুল বুক বাজিয়ে দাবি করতেন, তিনজনকে তিনি পায়ের তল দিয়ে পিটিয়ে মেরেছিলেন। তা নিয়ে সেই সময় বীরভূমের রাজনীতিতে যথেষ্ট আলোড়নও পড়ে। মনিরুলে্র বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলেও তৃণমূলের হাত মাথায় থাকায় তাঁর গায়ে হাত দেওয়ার সাহস দেখাতে পারেননি পুলিশ।
আরও পড়ুন: TMC Inner Clash | মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে বোমাবাজি, ভাঙচুর কর্মাধ্যক্ষের বাড়ি
ওই ঘটনায় নিহতদের পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের চাপে পরিবারগুলি এতদিন ঘরে ফিরতে পারেনি। সেই সময় অনুব্রত মণ্ডলের দাপটে বীরভূমে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত। দীর্ঘ ১৩ বছর পর পরিবারের সদস্যরা ঘরে ফিরতে পারলেন। তবে কত দিন তাঁরা ঘরে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। যদিও এখন অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূল অনেকটাই কোণঠাসা।
সেই প্রাক্তন বাম বিধায়ক এই মুহূর্তে তৃণমূলের সংসর্গ ছেড়ে বিজেপিতে ভিড়েছেন। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পরই মনিরুল দল ছাড়েন। এখন অবশ্য তাঁকে আর জেলায় দেখা যায় না। বিজেপিতে গেলেও মনিরুলের তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই দলে। এখন অধিকাংশ সময় তিনি কলকাতাতে থাকেন বলে জেলা বিজেপি সূত্রের দাবি।